ইংরেজদের দুষ্টু বুদ্ধি চর্চাকারী বামপন্থী মৌলবাদীরা কওমি সনদের সরকারি ঘোষণার বিরোধীতা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান ও ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদ গাহের গ্রান্ড ইমাম আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ। তিনি বলেন, ইংরেজরা আলেমদের জনবিচ্ছিন্ন করে উপমহাদেশ শাসনের পথপ্রস্তুত করেছিল। তাই এ দেশের উদার, অসাম্প্রদায়িক আলেমদেরকে একশ্রেণীর বামনপন্থীরা জনবিচ্ছিন্ন করে রাখতে চায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
কওমি মাদরাসার শিক্ষা কর্তৃপক্ষ আইন পর্যালোচনা কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা মাসঊদ বলেন, তারা ১১ এপ্রিলে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষশক্তির সঙ্গে আলেমদের সংযুক্ত হওয়াকে সহ্য করতে পারছে না। কারণ স্বাধীনতার স্বপক্ষশক্তির সঙ্গে ব্যবধান ঘুচে যাওয়ায় তারা নিজেদের লাভক্ষতির হিসাব নিকাশ কষছেন। এসময়েও ইংরেজদের দুষ্টু বুদ্ধির চর্চা করে এক ধরনের বামপন্থী ও নামধারী সুন্নী-জামাত কওমি সনদের বিরোধিতা করছে।
শোলাকিয়ার ইমাম ফরীদ উদ্দীন মাসঊদই জাতীয় ঈদগাহের পাশে স্থাপিত ভাস্কর্যটিকে ‘মূর্তি’ আখ্যায়িত করে তা সরানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, ভাস্কর্য সরানোসহ হেফাজতে ইসলামের এসব দাবি দেশের অসামপ্রদায়িক পরিবেশ নষ্টের পাশাপাশি জঙ্গিবাদে উৎসাহ যোগাবে বলে আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আতসহ জাসদ, ছাত্র ইউনিয়ন ও সিপিবিসহ বিভিন্ন মহলের আশঙ্কার মধ্যে হাই কোর্টের সামনে ‘মূর্তিস্থাপনকে’ সামপ্রদায়িকতা আখ্যায়িত করে মাওলানা মাসঊদ।
একটা সমপ্রদায়ের বিশ্বাসকে চাপিয়ে দেওয়াটাই সামপ্রদায়িকতা। যারা সামপ্রদায়িকতার বিষবাষ্প উসকে দিতে চায়, তারা দেশের মঙ্গল চায় না মন্তব্য করে আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, শিল্পের দিক থেকেও ‘গ্রিক মূর্তিটি’ বিভ্রম সৃস্টি করেছে। গ্রিক মূর্তি তৈরিতে শিল্পের দিক বিবেচনায়ও শিল্পমান উন্নীত নয়। গ্রিকের এক নারীর গায়ে শাড়ি পরিয়ে দেয়া হয়েছে। শিল্পবোদ্ধাদের প্রতিবাদ করা দরকার ছিল।
আজকে মোনালিসার সেই ছবি কিংবা পিকাসোর কোনো ছবির চরিত্র বদল করলে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠবে জানিয়ে তিনি বলেন, অথচ গ্রিক মূর্তির ক্ষেত্রে কোনো সমালোচনাই হয়নি। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিষয়ে জাপান সরকার, ইইউ এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ করে তাদের ওপর নির্যাতন বন্ধ ও রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জমিয়তুল উলামা জোর প্রচেষ্টা চালিয়েছে বলে জানান ফরিদ উদ্দিন।
মাওলানা মাসউদুল কাদির ও শফিকুল ইসলামের পরিচালনায় এবং মুফতী আবুল কাসেমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন, মাওলানা শামসুল হুদা খান, মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ, মাওলানা দেলোয়ার হোসইন সাইফী, মাওলানা হোসাইন আহমদ, কারী শামসুল হক, মাওলানা ইমদাদুল্লাহ কাসেমী, মাওলানা আইয়ুব আনসারী, মাওলানা সাঈদ নিজামী, মাওলানা তাজুল ইসলাম কাসেমী, মাওলানা সদরুদ্দীনমাকনুন, মাওলানা মুঈনুল ইসলাম, মাওলানা উবায়দুর রহমান, মাওলানা আবদুল আলিম ফরিদী প্রমুখ।