রাষ্ট্র ও সমাজ ঘুষের জালে দূষিত হয়ে পড়ছে মন্তব্য করে ঘুষ ছাড়া চাকরি নিয়েছেন এমন কাউকে পাওয়া গেলে তাকে সংবর্ধনা দেয়ার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের যে সমাজনীতি তা আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। শোষক শ্রেণী সবকিছুকে বাণিজ্যিকরণ ফেলেছে। এখন বাংলাদেশে চাকরির জন্য প্রত্যেককেই ঘুষ দিতে হয়।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের উদ্যোগে ঘুষ ছাড়া চাকরিসহ ৭ দফা দাবিতে জাতীয় যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিপিবি সভাপতি বলেন, এমএ পাস, বিএ পাস, মেট্রিক পাস কিংবা শিক্ষাবঞ্চিত সাধারণ নাগরিক হোক, বড় অফিসার থেকে শুরু করে পিয়নের চাকরি হোক, ঘুষ ছাড়া চাকরি পেয়েছে- এই রকম লোকের খোঁজ পেলে আমার কাছে নিয়ে আসবেন, আমি এই প্রেসক্লাবের সামনে তার ছবি সাঁটিয়ে রেখে দেব, যাতে দেশের ১৬ কোটি মানুষ দেখতে পারে।
সেলিম বলেন, খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার। ঘুষ ছাড়া চাকরি পাওয়াটাও একটি মৌলিক অধিকার। যুবকরা কাজ করতে চায়, ন্যায্য মজুরি চায়। তারা দেশকে এগিয়ে নিতে চায়। কিন্তু শোষক শ্রেণীর দল, যারা লুটপাট কাজের সঙ্গে আছে, তারা এদেশকে এগিয়ে নিতে চায় না। ঘুষ-দুর্নীতি একটা রোগ আমাদের মাথার মধ্যে। এ রোগ ছড়িয়ে পড়ছে লুটপাটের রোগে। তাহলে বুঝে নিন আমাদের কী অবস্থা।
সু-শাসনের সজন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ষাটের দশকের দিকে আমরা একটা স্লোগান দিতাম, ‘বাঁচার মতো বাঁচতে চাই’ এ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ অর্জিত হয়েছে। কিন্তু এ স্লোগানের আরেকটি স্লোগান আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ‘ঘুষ ছাড়া চাকরি চাই’।
যুব ইউনিয়নের সভাপতি যুবনেতা হাসান হাফিজুর রহমান সোহেলের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন অভিনেত্রী সুমনা সোমা, জাতীয় যুব মৈত্রীর সভাপতি সাব্বাহ আলী, জাতীয় যুব জোটের সভাপতি রোকনুজ্জামান, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিনের সভাপতি জিএম জিলানী শুভ প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে ‘ঘুষ ছাড়া চাকরি চাই’ দাবির সমর্থনে সারাদেশ থেকে পাঁচ লক্ষাধিক গণস্বাক্ষরসহ প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি প্রদান করতে গেলে পুলিশ শিশু পার্কের সামনে মিছিলে বাঁধা দেয়। পরে যুব ইউনিয়নের সভাপতি হাসান হাফিজুর রহমান সোহেলের নেতৃত্বে হাফিজ আদনান রিয়াদ, শেখ আবদুল মান্নান, মসরুর আমান মুখর, শিশির চক্রবর্তী, ত্রিদিব সাহা, খান আসাদুজ্জামান মাসুম ও আশিকুল ইসলাম জুয়েল প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন।