বিএনপির প্রভাবশালী নেতা ও সিলেট ২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম.ইলিয়াস আলী দীর্ঘ ৩৯ মাস ধরে ‘নিখোঁজ’। তাঁর সন্ধানে আন্দোলন করতে গিয়ে ২০১২ সালের ২৩ এপ্রিল বিশ্বনাথ রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজন মারা যান ও বেশ কয়েকজন আহত হন।
এঘটনায় বিএনপির অনেক নেতাকর্মী কারা বরণ করেন। আবার অনেকেই ১০-১২টি মামলা মাথায় নিয়ে আদালত পাড়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তারপরও তারা ইলিয়াস ‘নিখোঁজ’ আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।
ইলিয়াস আলী ‘নিখোঁজের’ পর বিএনপির নেতাকর্মীদের কিছুটা মনোবল ভেঙ্গে পড়ে। তবে ইলিয়াসপত্নী তাহসিনা রুশদি লুনাকে নেতারা কাছে পেয়ে দল ফের চাঙ্গা করতে সক্ষম হন। তবে বর্তমানে উপজেলা বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের নেতারা দু-ভাগে বিভক্ত রয়েছেন।
ইলিয়াস আলী ‘নিখোঁজের’ পর বিশ্বনাথ বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের দিক নির্দেশনা দিয়ে আসছেন ইলিয়াসপত্নী তাহসিনা রুশদি লুনা। গত উপজেলা নির্বাচনে বিশ্বনাথ-বালাগঞ্জে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা জয়লাভ করেন। ইলিয়াস আলী ‘নিখোঁজের’ পর তার স্ত্রী তাহসিনা রুশদি লুনা যত বার বাড়িতে এসেছে তত বার নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে দেখা করতে বাড়িতে ছুটে গেছেন। কিন্তু এই প্রথম বারের মতো তাহসিনা রুশদি লুনা উপজেলার তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে ছুটে যান।
ঈদুল ফিতরের পরদিন থেকে তিনি উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন। এতে তৃণমূল নেতাকর্মীরা ইলিয়াসপত্নীকে কাছে পেয়ে অনেক খুশি হন। তারা বিশ্বনাথ বিএনপিকে আরোও শক্তিশালী করতে অগ্রনী ভূমিকা রাখবেন বলে লুনাকে জানান। নেতারা ইলিয়াস আলী ফিরে আসা না পর্যন্ত তার সন্ধান আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে তাহসিনা রুশদি লুনাকে অবহিত করেন।
ঈদের পরদিন থেকে তাহসিনা রুশদি লুনা টানা তিনদিন উপজেলার আট ইউনিয়নের মধ্যে ছয় ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। পরবর্তিতে বাকি ওই দুই ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীর সঙ্গে মতবিনিময় করবেন বলে দলীয় সূত্র জানাযায়।
এব্যাপারে উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্বাস আলী চেয়ারম্যান বলেন, ভাবি (তাহসিনা রুশদি লুনা) কে ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা কাছে পেয়ে অনেক খুশি হয়েছে। আগামী দিনে সরকার পতন ও ইলিয়াস আলীর সন্ধান আন্দোলনের ডাক আসলে ভাবির নির্দেশে নেতাকর্মীরা রাজপথে থাকবেন বলে তিনি জানান।
দেওকলস ইউপি বিএনপির সভাপতি তাহিদ মিয়া চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের ইউনিয়নে ভাবির (ইলিয়াসপত্নী) মতবিনিময় সভায় নেতাকর্মীর ঢল নামে। দীর্ঘদিন পর হলেও ভাবিকে কাছে পেয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীরা খুশি।
দশঘর ইউপি বিএনপির সভাপতি সিরাজ খান বলেন, তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করায় বিএনপি উপজেলায় এখনও আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী হবে বলে তিনি মনে করেন।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি জালালউদ্দিন চেয়ারম্যান বলেন, ইলিয়াস আলীর অবর্তমানে ভাবির (ইলিয়াস আলীর স্ত্রী) নির্দেশে আমরা দলীয় কাজ চালিয়ে আসছি। এবার ভাবি তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করায় নেতারা অনেক খুশি। এতে দলের নেতাকর্মীদের মনোবল আরও চাঙ্গা হয়েছে লাভ বলে তিনি মনে করেন।