ঢাকা ১১:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নারীরা যৌনতা নিয়ে বেশি ভাবেন কেন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:৩৯:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ মে ২০১৫
  • ৫০০ বার
পুরুষরা সাধারণত যৌনতা নিয়ে অনেক কথা বলেন এবং চিন্তা করেন। অন্যদিকে, নারীরা মূলত বেশি বেশি যৌনতায় লিপ্ত হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় মগ্ন থাকেন। তার মানে পুরুষরা যৌনতা নিয়ে বেশি চিন্তা করেন আর নারীরা তা বেশি আকাঙ্ক্ষা করেন।
আগের দিনে ধারণা ছিল পুরুষরাই মুলত বেশি বেশি যৌনতায় লিপ্ত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা করবেন। কিন্তু সময় বদলে গেছে। এখন নারীরাই পুরুষদের চেয়ে বেশি হারে যৌনতার আকাঙ্ক্ষা করেন। এ ব্যাপারে নারীরা এখন আর কোনো রাখঢাকও করেন না।
ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়া সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি অনুসন্ধান চালায়। অনুসন্ধানে ভিন্ন ভিন্ন পারিবারিক ও সামাজিক পরিবেশ থেকে আসা অসংখ্য নারীর সঙ্গে কথা বলে নারীরা কেন আজকাল যৌনতার প্রতি বেশি আসক্ত হচ্ছে সে বিষয়টি উদঘাটনের চেষ্টা করা হয়। অনুসন্ধানে এর পেছনে যে কারণগুলো উদঘাটিত হয়…..
শারীরিকভাবে আনন্দদায়ক
বেশিরভাগ নারীই বলেছেন, যৌনতা শারীরিকভাবে আনন্দদায়ক বলেই এর প্রতি তাদের আকাঙ্খা বেশি। যৌনতায় লিপ্ত হওয়ার মাধ্যমে শারীরিক পরিতুষ্টি লাভ করা যায়। আর যে কারও জন্যই এই অভিজ্ঞতা লাভ করাটা খুবই স্বাভাবিক।
মনোবিজ্ঞানী শিমা নায়নার মতে, ‘যৌনতা যে কোনো ব্যক্তির জন্যই একটি মৌলিক চাহিদা। ইদানিং আমি নারীদের কাছ থেকে বেশি বেশি অভিযোগ পাচ্ছি যে তাদের স্বামীরা তাদের শারীরিক চাহিদা মেটাতে অক্ষম!’
নিজের সম্পর্কে ইতিবাচক অনুভুতি সৃষ্টি করে
ধারণাগতভাবে আনন্দদায়ক যৌনতার মানে হল যৌন তৎপরতা উপভোগ করা এবং যৌন তৎপরতায় লিপ্ত হওয়ার সময় নারী-পুরুষ সমান সক্রিয়ভাবে এতে অংশগ্রহণ করা। এতে নিজের সম্পর্কেও ভালো অনুভুতি তৈরি হয় এবং আত্মসম্মানবোধ বাড়ে।
মনোবিজ্ঞানী সুনায়না বাজাজ বলেন, ‘যৌনতার অনেক রোগ আরোগ্য করার ক্ষমতা আছে। যৌনতায় লিপ্ত হলে প্রচুর পরিমাণ ইতিবাচক আবেগ উৎপন্ন হয়। কোনো নারী যখন তার পুরুষকে তার সঙ্গে গভীর আবেগ নিয়ে যৌনতায় লিপ্ত হতে দেখেন, তার শরীর ও প্রতিটি নড়াচড়াকে উপভোগ করতে দেখেন এতে ওই নারীর ভেতরে অপরিমেয় ভালো লাগার অনুভুতি সৃষ্টি হয়।’
সম্পর্ক গাঢ়ো করে
দৈহিক মিলনের ফলে শরীরে অক্সিটোকিন নামের একটি হরমোন নিঃসরিত হয়। এটি ‘লাভ হরমোন’ নামেও পরিচিত। নারী-পুরুষ সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ বন্দনা মিত্র বলেন, ‘আমি সবসময়ই বলে এসেছি যৌনতাকে কখনোই যুগলদের হালকাভাবে নেওয়া উচিৎ নয়। সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রেই এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। এতে যে কোনো যুগলেরই পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কের বন্ধন আরো শক্তিশালি ও গাঢ়ো হয়। সূতরাং বলা যায় প্রচলিত এ ধারণাটি আসলেই সত্য যে, ‘সঙ্গী বা সঙ্গীনির সাথে যত বেশি যৌনতায় লিপ্ত হবেন যৌন বিশ্বাসঘাতকতা ও অবিশ্বস্ততার সম্ভাবনাও তত কমে আসবে।’
অযাচিত আবেগ থেকে রক্ষা করে ও অবসাদ থেকে মুক্তি ঘটে
যৌনতা শুধু শারীরিক আনন্দই দেয় না বরং এতে মানসিক প্রশান্তি আসে ও অবসাদমুক্তি ঘটে। মনোবিজ্ঞানী রিনা কাপুর এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, ‘যৌনতায় লিপ্ত হওয়ার সময় মানুষ অনেক বেশি পরিমাণে গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস নেয় এবং পরস্পরের শরীরকে অসংখ্যবার স্পর্শ করা হয়। আর এর ফলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের হরমোন নিঃসরিত হয় যেগুলো মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়।’
ব্যায়ামের সবচেয়ে ভালো ধরন
গবেষণায় দেখা গেছে, ৩০ মিনিটের যৌন ক্রীড়ায় ৮৫ ক্যালোরিরও বেশি শক্তি খরচ হয়। শারীরিক ফিটনেস বিষয়ক পরামর্শক স্তুতি বাত্রা বলেন, ‘একদিনে অন্তত দুটি সেশনে যৌন ক্রীড়ায় লিপ্ত হলে আপনার শরীর থেকে বেশি বেশি হারে ক্যালোরি খরচ হবে। এতে আপনার অতিরিক্ত ওজনও কমে আসবে।’
প্রণয়াসক্তি উস্কে দেয়
কল সেন্টার এক্সিকিউটিভ রিচা শার্মা বলেন, ‘মাঝে মাঝে নিজেকে আমার বিকৃত রুচির মনে হয়। কারণ সারাক্ষণই আমি আমার পুরুষটির কথা ভাবতে থাকি। আর গত রাতে কী করেছি সেটা কল্পনা করতে থাকি। এতে আমি তার সঙ্গে পুনরায় মিলিত হওয়ার জন্য অধীর হয়ে থাকি।’
এ বিষয়ে মনোবিজ্ঞানী প্রতীক বলেন, ‘যৌনতা নিয়ে দ্বিবাস্বপ্নে ভোগাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু এটা শুনে কোনো পুরুষের হয়তো মাথা বিগড়ে যেতে পারে। কারণ নারীরা বেশি বেশি যৌনতার আকাঙ্খা করতে পারেন আমরা পুরুষরা এখনো এই ধারণার সঙ্গে পুরোপুরি অভ্যস্ত হইনি। তবে নারীদের এই প্রণয়াসক্তি আমাদের কাছে ভালোই লাগে।’
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নারীরা যৌনতা নিয়ে বেশি ভাবেন কেন

আপডেট টাইম : ০৫:৩৯:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ মে ২০১৫
পুরুষরা সাধারণত যৌনতা নিয়ে অনেক কথা বলেন এবং চিন্তা করেন। অন্যদিকে, নারীরা মূলত বেশি বেশি যৌনতায় লিপ্ত হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় মগ্ন থাকেন। তার মানে পুরুষরা যৌনতা নিয়ে বেশি চিন্তা করেন আর নারীরা তা বেশি আকাঙ্ক্ষা করেন।
আগের দিনে ধারণা ছিল পুরুষরাই মুলত বেশি বেশি যৌনতায় লিপ্ত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা করবেন। কিন্তু সময় বদলে গেছে। এখন নারীরাই পুরুষদের চেয়ে বেশি হারে যৌনতার আকাঙ্ক্ষা করেন। এ ব্যাপারে নারীরা এখন আর কোনো রাখঢাকও করেন না।
ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়া সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি অনুসন্ধান চালায়। অনুসন্ধানে ভিন্ন ভিন্ন পারিবারিক ও সামাজিক পরিবেশ থেকে আসা অসংখ্য নারীর সঙ্গে কথা বলে নারীরা কেন আজকাল যৌনতার প্রতি বেশি আসক্ত হচ্ছে সে বিষয়টি উদঘাটনের চেষ্টা করা হয়। অনুসন্ধানে এর পেছনে যে কারণগুলো উদঘাটিত হয়…..
শারীরিকভাবে আনন্দদায়ক
বেশিরভাগ নারীই বলেছেন, যৌনতা শারীরিকভাবে আনন্দদায়ক বলেই এর প্রতি তাদের আকাঙ্খা বেশি। যৌনতায় লিপ্ত হওয়ার মাধ্যমে শারীরিক পরিতুষ্টি লাভ করা যায়। আর যে কারও জন্যই এই অভিজ্ঞতা লাভ করাটা খুবই স্বাভাবিক।
মনোবিজ্ঞানী শিমা নায়নার মতে, ‘যৌনতা যে কোনো ব্যক্তির জন্যই একটি মৌলিক চাহিদা। ইদানিং আমি নারীদের কাছ থেকে বেশি বেশি অভিযোগ পাচ্ছি যে তাদের স্বামীরা তাদের শারীরিক চাহিদা মেটাতে অক্ষম!’
নিজের সম্পর্কে ইতিবাচক অনুভুতি সৃষ্টি করে
ধারণাগতভাবে আনন্দদায়ক যৌনতার মানে হল যৌন তৎপরতা উপভোগ করা এবং যৌন তৎপরতায় লিপ্ত হওয়ার সময় নারী-পুরুষ সমান সক্রিয়ভাবে এতে অংশগ্রহণ করা। এতে নিজের সম্পর্কেও ভালো অনুভুতি তৈরি হয় এবং আত্মসম্মানবোধ বাড়ে।
মনোবিজ্ঞানী সুনায়না বাজাজ বলেন, ‘যৌনতার অনেক রোগ আরোগ্য করার ক্ষমতা আছে। যৌনতায় লিপ্ত হলে প্রচুর পরিমাণ ইতিবাচক আবেগ উৎপন্ন হয়। কোনো নারী যখন তার পুরুষকে তার সঙ্গে গভীর আবেগ নিয়ে যৌনতায় লিপ্ত হতে দেখেন, তার শরীর ও প্রতিটি নড়াচড়াকে উপভোগ করতে দেখেন এতে ওই নারীর ভেতরে অপরিমেয় ভালো লাগার অনুভুতি সৃষ্টি হয়।’
সম্পর্ক গাঢ়ো করে
দৈহিক মিলনের ফলে শরীরে অক্সিটোকিন নামের একটি হরমোন নিঃসরিত হয়। এটি ‘লাভ হরমোন’ নামেও পরিচিত। নারী-পুরুষ সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ বন্দনা মিত্র বলেন, ‘আমি সবসময়ই বলে এসেছি যৌনতাকে কখনোই যুগলদের হালকাভাবে নেওয়া উচিৎ নয়। সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রেই এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। এতে যে কোনো যুগলেরই পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কের বন্ধন আরো শক্তিশালি ও গাঢ়ো হয়। সূতরাং বলা যায় প্রচলিত এ ধারণাটি আসলেই সত্য যে, ‘সঙ্গী বা সঙ্গীনির সাথে যত বেশি যৌনতায় লিপ্ত হবেন যৌন বিশ্বাসঘাতকতা ও অবিশ্বস্ততার সম্ভাবনাও তত কমে আসবে।’
অযাচিত আবেগ থেকে রক্ষা করে ও অবসাদ থেকে মুক্তি ঘটে
যৌনতা শুধু শারীরিক আনন্দই দেয় না বরং এতে মানসিক প্রশান্তি আসে ও অবসাদমুক্তি ঘটে। মনোবিজ্ঞানী রিনা কাপুর এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, ‘যৌনতায় লিপ্ত হওয়ার সময় মানুষ অনেক বেশি পরিমাণে গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস নেয় এবং পরস্পরের শরীরকে অসংখ্যবার স্পর্শ করা হয়। আর এর ফলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের হরমোন নিঃসরিত হয় যেগুলো মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়।’
ব্যায়ামের সবচেয়ে ভালো ধরন
গবেষণায় দেখা গেছে, ৩০ মিনিটের যৌন ক্রীড়ায় ৮৫ ক্যালোরিরও বেশি শক্তি খরচ হয়। শারীরিক ফিটনেস বিষয়ক পরামর্শক স্তুতি বাত্রা বলেন, ‘একদিনে অন্তত দুটি সেশনে যৌন ক্রীড়ায় লিপ্ত হলে আপনার শরীর থেকে বেশি বেশি হারে ক্যালোরি খরচ হবে। এতে আপনার অতিরিক্ত ওজনও কমে আসবে।’
প্রণয়াসক্তি উস্কে দেয়
কল সেন্টার এক্সিকিউটিভ রিচা শার্মা বলেন, ‘মাঝে মাঝে নিজেকে আমার বিকৃত রুচির মনে হয়। কারণ সারাক্ষণই আমি আমার পুরুষটির কথা ভাবতে থাকি। আর গত রাতে কী করেছি সেটা কল্পনা করতে থাকি। এতে আমি তার সঙ্গে পুনরায় মিলিত হওয়ার জন্য অধীর হয়ে থাকি।’
এ বিষয়ে মনোবিজ্ঞানী প্রতীক বলেন, ‘যৌনতা নিয়ে দ্বিবাস্বপ্নে ভোগাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু এটা শুনে কোনো পুরুষের হয়তো মাথা বিগড়ে যেতে পারে। কারণ নারীরা বেশি বেশি যৌনতার আকাঙ্খা করতে পারেন আমরা পুরুষরা এখনো এই ধারণার সঙ্গে পুরোপুরি অভ্যস্ত হইনি। তবে নারীদের এই প্রণয়াসক্তি আমাদের কাছে ভালোই লাগে।’