ঢাকা ০৬:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পানি নিরাপত্তা ঝুঁকিতে বিশ্বে প্রথম সারিতে বাংলাদেশ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:২৫:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ এপ্রিল ২০১৭
  • ৩২৪ বার

পানি নিরাপত্তা ঝুঁকিতে বিশ্বে প্রথম সারিতে বাংলাদেশ। ইন্সটিটিউট অব ওয়াটার মডিলিয়ের হিসেব বলছে, ভারতের সাথে থাকা অভিন্ন নদীর পানির প্রত্যাহারের ফলে এরই মধ্যে হারিয়ে গেছে, শতাধিক নদী। এমন অবস্থা চলতে থাকলে, আগামী ২৫ বছরের মধ্যে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের পুরোটাই লবণাক্ততা এবং উত্তরাঞ্চল পড়বে, মরু করণের মধ্যে। আবার ভূগর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত ব্যবহার এবং পানির স্তর শূণ্য হতে থাকায়; ভবিষ্যতে ব্যবহার উপযোগী পানির প্রাপ্যতার সংশয়ে পড়বে বাংলাদেশ।

নদীই জীবন, নদীই প্রাণ বাংলাদেশের প্রতি বাঁকে মিলবে তার প্রমাণ। কবির ভাষার নদী প্রাণের আধার হলেও, ক্রমেই প্রাণহীন হয়ে পড়ছে, বাংলাদেশের বুক চিড়ে বয়ে চলা নদীগুলো। দখল-দূষণ আর অযত্নে হারাচ্ছে জৌলুস।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জরিপে, দেশে নদী আছে মোট ৩১০টি। তবে নাম বিচারে ছোট বড় মিলিয়ে এর সংখ্যা ৬শর মতো। যার ৫৭টিই আন্তর্জাতিক নদী। এর মধ্যে ৫৪টিই আবার ভারতের সাথে। যেগুলোর পানির ন্যায্য হিৎসা নিয়ে রয়েছে টানাপোড়েন।

ভারত কয়েকটি নদীর উজানে বাঁধ দিয়ে পানি প্রত্যাহার করায়, শুষ্ক মৌসুম তো দূরের কথা ভরা বর্ষায়ও, পানির কাঙ্ক্ষিত প্রবাহ থাকে না অনেক নদীতে। ফলে প্রতিয়নতই মারা যাচ্ছে নদী। সবশেষ তথ্য অনুয়ায়ী দেশের ১১৭টির মতো নদী এখন হয় মৃত, না হয় মৃতপ্রায়। অথচ মাত্র ২০ বছর আগেও, এই সংখ্যা ছিল অর্ধেকেরও কম।

জাতিসংঘের পানি বিষয়ক সংস্থার হিসাব বলছে, বিশ্বের সর্বোচ্চ পানি নিরাপত্তার ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর তালিকায়, উপরের দিকেই রয়েছে বাংলাদেশের নাম। ভূগর্ভস্থ পানির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারই এর মূল কারণ। দেশের মোট পানির ৯০ শতাংশই মেটানো হয়, মাটির নিচের পানি দিয়ে। আর সরকারি সংস্থার আশঙ্কা, ৫০ বছর পর বাংলাদেশের তিন ভাগের দুই ভাগ এলাকাতেই দেখা দেবে মিঠা পানির ভয়াবহ সংকট। একই সঙ্গে দূষ্প্রাপ্য হয়ে পড়বে, উপরিভাগের পানিও।

বর্তমানে দেশের উপরিভাগের ২ দশমিক ৫ ভাগ পানি ব্যবহার উপযোগী। আর সহজলভ্য মাত্র ১ ভাগ। অথচ হিসাব বলছে, ২০৩০ সালে শুধু ঢাকা শহরেই পানির দৈনিক চাহিদা হবে ৫০০ কোটি লিটার। আর সারা দেশে এর পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি লিটারে। কিন্তু প্রশ্ন হলো এই পানি আসবে কোথা থেকে?

বিশুদ্ধ পানির অভাবে, নানা রোগবালাইয়ে দেশে প্রতি বছর মারা যাচ্ছে ৫০ হাজার শিশু। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এখনই ব্যবস্থা না নিলে, এটি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পানি নিরাপত্তা ঝুঁকিতে বিশ্বে প্রথম সারিতে বাংলাদেশ

আপডেট টাইম : ০৪:২৫:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ এপ্রিল ২০১৭

পানি নিরাপত্তা ঝুঁকিতে বিশ্বে প্রথম সারিতে বাংলাদেশ। ইন্সটিটিউট অব ওয়াটার মডিলিয়ের হিসেব বলছে, ভারতের সাথে থাকা অভিন্ন নদীর পানির প্রত্যাহারের ফলে এরই মধ্যে হারিয়ে গেছে, শতাধিক নদী। এমন অবস্থা চলতে থাকলে, আগামী ২৫ বছরের মধ্যে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের পুরোটাই লবণাক্ততা এবং উত্তরাঞ্চল পড়বে, মরু করণের মধ্যে। আবার ভূগর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত ব্যবহার এবং পানির স্তর শূণ্য হতে থাকায়; ভবিষ্যতে ব্যবহার উপযোগী পানির প্রাপ্যতার সংশয়ে পড়বে বাংলাদেশ।

নদীই জীবন, নদীই প্রাণ বাংলাদেশের প্রতি বাঁকে মিলবে তার প্রমাণ। কবির ভাষার নদী প্রাণের আধার হলেও, ক্রমেই প্রাণহীন হয়ে পড়ছে, বাংলাদেশের বুক চিড়ে বয়ে চলা নদীগুলো। দখল-দূষণ আর অযত্নে হারাচ্ছে জৌলুস।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জরিপে, দেশে নদী আছে মোট ৩১০টি। তবে নাম বিচারে ছোট বড় মিলিয়ে এর সংখ্যা ৬শর মতো। যার ৫৭টিই আন্তর্জাতিক নদী। এর মধ্যে ৫৪টিই আবার ভারতের সাথে। যেগুলোর পানির ন্যায্য হিৎসা নিয়ে রয়েছে টানাপোড়েন।

ভারত কয়েকটি নদীর উজানে বাঁধ দিয়ে পানি প্রত্যাহার করায়, শুষ্ক মৌসুম তো দূরের কথা ভরা বর্ষায়ও, পানির কাঙ্ক্ষিত প্রবাহ থাকে না অনেক নদীতে। ফলে প্রতিয়নতই মারা যাচ্ছে নদী। সবশেষ তথ্য অনুয়ায়ী দেশের ১১৭টির মতো নদী এখন হয় মৃত, না হয় মৃতপ্রায়। অথচ মাত্র ২০ বছর আগেও, এই সংখ্যা ছিল অর্ধেকেরও কম।

জাতিসংঘের পানি বিষয়ক সংস্থার হিসাব বলছে, বিশ্বের সর্বোচ্চ পানি নিরাপত্তার ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর তালিকায়, উপরের দিকেই রয়েছে বাংলাদেশের নাম। ভূগর্ভস্থ পানির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারই এর মূল কারণ। দেশের মোট পানির ৯০ শতাংশই মেটানো হয়, মাটির নিচের পানি দিয়ে। আর সরকারি সংস্থার আশঙ্কা, ৫০ বছর পর বাংলাদেশের তিন ভাগের দুই ভাগ এলাকাতেই দেখা দেবে মিঠা পানির ভয়াবহ সংকট। একই সঙ্গে দূষ্প্রাপ্য হয়ে পড়বে, উপরিভাগের পানিও।

বর্তমানে দেশের উপরিভাগের ২ দশমিক ৫ ভাগ পানি ব্যবহার উপযোগী। আর সহজলভ্য মাত্র ১ ভাগ। অথচ হিসাব বলছে, ২০৩০ সালে শুধু ঢাকা শহরেই পানির দৈনিক চাহিদা হবে ৫০০ কোটি লিটার। আর সারা দেশে এর পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি লিটারে। কিন্তু প্রশ্ন হলো এই পানি আসবে কোথা থেকে?

বিশুদ্ধ পানির অভাবে, নানা রোগবালাইয়ে দেশে প্রতি বছর মারা যাচ্ছে ৫০ হাজার শিশু। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এখনই ব্যবস্থা না নিলে, এটি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।