আসন্ন ঈদুল ফিতরে মানুষকে গ্রামে নিয়ে প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করার সুযোগ করে দিতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। এমনটাই জানিয়েছেন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী।
তিনি জানান, আগামী ৯ জুলাই থেকে ঢাকা এবং চট্রগ্রাম রেল স্টেশন থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে। এটা চলবে ১৩ জুলাই পর্যন্ত। আর অগ্রিম টিকিটের ট্রেন চলবে ১৩ থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত।
তিনি বলেন, ঈদের সময়ে ট্রেন যাতে সময় মতো ছেড়ে যায়, সেই চেষ্টা করবেন। এখনই বলা যাচ্ছে না ট্রেন যথাসময়ে ছাড়বে কি না। তবে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে। যাত্রীর চাপ বেশি দেখা দিলে স্পেশাল ট্রেনের সঙ্গে চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন ট্রেনে অতিরিক্ত কোচ সংযোজন করা হবে।
নিরাপত্তা এবং টিকিটের কালোবাজারি সম্পর্কে স্টেশন ম্যানেজার বলেন, টিকিট কালো বাজারি রোধে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে। সাদা পোশাকে পুলিশ ছাড়াও থাকবে আনসারের সদস্যরা।
ঢাকা, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, বিমানবন্দর, জয়দেবপুর, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, সিলেট, রাজশাহী, খুলনাসহ সকল বড় বড় স্টেশনে জিআরপি, আরএনবি, স্থানীয় পুলিশ, বিজিবি এবং র্যাবের সহযোগিতায় টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধে সার্বক্ষণিক প্রহরার ব্যবস্থা থাকবে। জেলা প্রশাসকের সহায়তায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।
রেলওয়ে এলাকায় সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিতে কয়েকদফা বৈঠক করেছে কমলাপুর রেলওয়ে পুলিশ। রেলওয়ে পুলিশের কার্যক্রম সম্পর্কে আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে পুলিশের সহকারী পরিদর্শক (এসআই) মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, স্টেশনে টিকিট কালোবাজারিসহ সব ধরনের নাশকতা ঠেকাতে তাদের প্রস্তুতি রয়েছে।
রেল সূত্রে জানা যায়, ঈদ পরবর্তী রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, দিনাজপুর ও লালমনিরহাট স্টেশন হতে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় অগ্রিম টিকেট বিক্রি করা হবে। বিক্রি হবে ১৬ থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত।
স্পেশাল ট্রেন চলবে ঈদের আগের ৩ দিন (১৫-১৭ জুলাই) এবং ঈদের পরের ৫ দিন (২০-২৬ জুলাই)। সারা দেশে ৫ জোড়া এবং ঈদের দিন শোলাকিয়া স্পেশাল ২ জোড়া মোট ৭ জোড়া ট্রেন চলাচল করবে।
দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল: ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা, ১৫-১৭ জুলাই ও ২০-২৬ জুলাই। চাঁদপুর স্পেশাল-১: চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম, ১৫-১৭ জুলাই ও ২০-২৬ জুলাই। চাঁদপুর স্পেশাল-২: চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম, ১৫-১৭ জুলাই ও ২০-২৬ জুলাই। পার্বতীপুর স্পেশাল: পার্বতীপুর-ঢাকা-পার্বতীপুর, ১৫-১৭ জুলাই ও ২০-২৬ জুলাই। খুলনা স্পেশাল: খুলনা-ঢাকা-খুলনা, ১৫-১৭ জুলাই ও ২০-২৬ জুলাই।
শোলাকিয়া স্পেশাল-১: ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ভৈরব, কেবল ঈদের দিন। শোলাকিয়া স্পেশাল-২: ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ, কেবল ঈদের দিন।
আন্ত:নগর ট্রেনের অফ-ডে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ১৩ জুলাই থেকে ঈদের পূর্বদিন পর্যন্ত আন্ত:নগর ট্রেনের অফ-ডে থাকবে না। একজন যাত্রীকে সর্বাধিক চারটি টিকিট দেওয়া হবে এবং বিক্রিত টিকিট ফেরৎ নেওয়া হবে না। অতিরিক্ত কোচ সংযোজন করা হবে ১৬৯টি। অতিরিক্ত ২৫টি ইঞ্জিন যুক্ত হবে।
স্বাভাবিকভাবে প্রতিদিন বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার যাত্রী পরিবহণ করে থাকে। ঈদ উপলক্ষে প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার যাত্রী পরিবহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।