পার্বত্য অঞ্চল ও সিলেটের পর দেশের তৃতীয় চা অঞ্চল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে পঞ্চগড়। সমতল ভূমিতে চা চাষ নিরবে বিপ্লব ঘটিয়েছে। চায়ের মান আন্তর্জাতিক মানের হওয়ায় ইতিমধ্যে পঞ্চগড়ের চা আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করেছে।
খুব বেশি দিনের কথা নয়। পঞ্চগড় জেলার সদর, তেতুঁলিয়া ও আটোয়ারী উপজেলার কয়েক হাজার জমি পতিত পড়ে থাকত। ব্যবহৃত হত গোচারণ ভুমি হিসেবে। সেই পতিত জমিতে চাষ হচ্ছে এখন উন্নত মানের চা।
একবার চায়ের চারা রোপণ করে ৩০বছর ধরে এর সুফল পাওয়া যাবে। তাই চাষীরা অন্যান্য আবাদ না করে চা চাষে ঝুঁকে পড়ছেন। দিনদিন বাড়ছে চা চাষের পরিধি। এই চা প্রক্রিয়াজাত করতে বেসরকারিভাবে ছয়টি ফ্যাক্টরি স্থাপন করা হয়েছে। ফ্যাক্টরি মালিকরা সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে চা পাতা ক্রয় করায় নগদ অর্থ পাচ্ছেন চাষিরা।
স্থানীয় চা বোর্ড ক্ষুদ্র চা চাষি ও বাগান মালিকদের ব্যাংক ঋণ, কারিগরী প্রশিক্ষণ ও সার্বিক সহযোগিতা করায় চাষিরা চা চাষে আস্থা পেয়েছেন। এ ছাড়া চা বোর্ডের ‘স্ট্র্যাটেজিক ডেভেলপমেন্ট প্লান ফর টি ইন্ডাস্ট্রি অব বাংলাদেশ ভিশন-২০২১’ প্রকপ্প গ্রহণ করায় চাষিদের চা উৎপাদনের আগ্রহ বেড়েছে।
সোনাপাতিলা গ্রামের স্মল হোল্ডার মতিয়ার রহমান বলেন, ‘দুই একর থেকে বর্তমানে ৫০ একর জমিতে চা আবাদ করছি। ভবিষৎতে এর পরিধি আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। চা চাষ অনেক লাভজনক ফসল।’ একই কথা বললেন, ক্ষুদ্র চা চাষি নোমান ও বাবুল মাস্টার। তারা জানান, চা চাষ লাভজনক হওয়ায় তারা চা চাষ আরো সম্প্রসারণ করেছেন।
তেঁতুলিয়া চা বাগানের মালিক আব্দুর রহমান বলেন, ‘চা-চাষ করে লাভবান হওয়া আরো জমিতে চা চাষ সম্প্রসারণ করছি।’
পঞ্চগড় চা বোর্ডের সহকারী উন্নয়ন কর্মকর্তা জায়েদ ইমাম সিদ্দিকী জানান, জেলায় ২০টি টি এস্টেট, ১৫টি মাঝারি ও পাঁচশ ক্ষুদ্র চা বাগান মিলিয়ে প্রায় ৬ হাজার চারশ একর জমিতে চা চাষ হচ্ছে।
এসব বাগান থেকে ২০১৪ সালে ১৪ লাখ ২০ হাজার ৭৬৭ কেজি টি উৎপাদন হয়েছে। চা চাষ লাভজনক হওয়ায় চা চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। চলতি বছর প্রায় ১৬ লাখ কেজি চা উৎপাদনের আশা প্রকাশ করেছেন এই কর্মকর্তা।