ছোট থেকেই আকাশে ওড়ার স্বপ্ন ছিল বলেই সঙ্গীতা চট্টোপাধ্যায় বিমানসেবিকার পেশাকেই বেছে নিয়েছিলেন। কিন্তু আরও উঁচুতে ওঠার নেশা চেপে ধরে পশ্চিমবঙ্গের গড়িয়ার সঙ্গীতা চট্টোপাধ্যায়কে। প্রেমে পড়েন এক চন্দনদস্যুর। প্রেমই হলো কাল। বাঙালি এই কন্যা ক্রমেই তলাতে শুরু করল অন্ধকার জগতে।
বছর সাতাশের এই যুবতীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, চন্দনকাঠ পাচারচক্র দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ও বিদেশে ছড়িয়ে দেওয়া। ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের চিত্তুরের একটি মামলায় অভিযুক্ত হিসাবে ১০ মাস আগে নেতাজিনগর থেকে অন্ধ্র পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় সঙ্গীতা। দেশটির আলিপুর আদালতে তোলা হয় তাকে। কিন্তু আদালত শর্ত দিয়েছিল জামিন নিয়ে তাকে হাজিরা দিতে হবে চিত্তুরের আদালতে।
এদিকে জামিন পেতেই গাঢাকা দেয় সে।
আদালত তার নামে জারি করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। গত ১১ মার্চ থেকে কলকাতায় রয়েছে অন্ধ্রর চিত্তুর জেলা পুলিশের একটি দল। সিআইডির সহযোগিতা নিয়ে তারাই সম্প্রতি গড়িয়া জোড়া পাম্প এলাকার একটি আবাসন থেকে গ্রেপ্তার করে সঙ্গীতা চট্টোপাধ্যায়কে। সঙ্গীতাকে রিমান্ডে চিত্তুরে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
ভারতের সিআইডি সূত্রে খবর, সঙ্গীতার সম্পত্তির হিসাব তাক লাগিয়ে দিতে পারে বলিউডের কোনো নায়িকাকেও। সৌজন্যে তার প্রেমিক অন্ধ্রর চন্দনদস্যু মারকোন্ডান লক্ষ্মণ। কলকাতাতেই সঙ্গীতার চারটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের লকারে রয়েছে ২ কেজি সোনা, ৫০০ গ্রাম প্ল্যাটিনাম। এ ছাড়াও ১০০টি সম্পত্তিসংক্রান্ত নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এর আগে ২০১৬ মে মাসে অন্ধ্র পুলিশ সঙ্গীতার আড়াই কোটি টাকার সম্পত্তির হিসাব পায়।
২০১৪ সালেই গ্রেপ্তার হয়েছিল প্রেমিক লক্ষ্মণ। তাকে জেরা করে উঠে আসে সঙ্গীতার নাম। লক্ষ্ণণের গ্রেপ্তার হওয়ার পর হাওলা মারফত ১০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগও রয়েছে এই বাঙালি বিমানসেবিকার নামে। চিত্তুর পুলিশ জানতে পেরেছে, বেঙ্গালুরু, মুম্বই, চেন্নাই ও কলকাতায় এই পাচারচক্রের অন্যতম বড় মাথা হয়ে ওঠে সঙ্গীতা।
সিআইডির গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, মধ্যমেধার এই যুবতী এসএসসি পরীক্ষাতেও বসেছে একবার। মডেলিং করত। তারই সৌজন্যে কয়েকটি টিভি কমার্শিয়ালেও কাজ করেছে সঙ্গীতা। বিমানসেবিকা হওয়ার জন্য কোর্সও করে। ধীরে ধীরে পরিচয় হয় লক্ষ্মণের সঙ্গে। প্রেমিককে এজেন্ট খুঁজে দেওয়াই ছিল প্রেমিকার কাজ। পরে পার্টনার হয়ে যায় সে। -সংবাদ প্রতিদিন