জেলার ভালুকায় পেপে চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন মল্লিকবাড়ী ইউনিয়নের নয়নপুর গ্রামের ফয়জুল মিয়া।তার বাগানে বিভিন্ন আকৃতির পেপে গাছে ঝুলে রয়েছে।খাদ্য হিসেবে কাঁচা অবস্থায় তরকারী আর পাঁকা পেপে রোগীর পথ্য হিসেবে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে সারা দেশে।
পেপে চাষি ফয়জুল মিয়া জানান, কোম্পানির ফেলে রাখা পতিত প্রায় ৬ একর জমি ভাড়া নিয়ে গত ফাল্গুন মাসে ৬ হাজার তাইওয়ানের উন্নত রেডলেডি জাতের পেপের চারা রোপণ করেন তিনি।পরে হালচাষ, চারা ক্রয়, চারা রোপণ, সার, সেচ, ও সার্বক্ষণিক পরিচর্যায় শ্রমিক বাবদ এ পর্যন্ত তার প্রায় ৬ লাখ টাকার মত খরচ হয়েছে।এ বছর ফলন ভাল হয়েছে। ১২০ টাকা কেজি দরে পাইকাররা বাগান থেকেই পেপে কিনে নিচ্ছেন।প্রথম বছরেই বিক্রিতে তিনি ভাল মুনাফার আশা করছেন।
এরপর সারা বছর ওই বাগান থেকে পর্যায়ক্রমে পেপে বিক্রি করবেন তিনি।গত বছর পেপের আবাদ করে খরচ বাদ দিয়ে তিনি ১৪ লাখ টাকা মুনাফা পেয়েছিলেন।কোনো ফরমালিন কিংবা মেডিসিন প্রয়োগ ছাড়াই তার বাগানে উৎপাদিত তাইওয়ান জাতের পেপে পাকা অবস্থায় এক মাস থাকলেও ভিতরের অংশ পঁচে নষ্ট হয় না। এই পেপে আকারে বেশি বড় হয় না কিন্তু খাওয়ায় খুবই সুস্বাদু।পেপেগুলো মিষ্টি হওয়ায় বিদেশেও এর চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। দেশি পেপের চেয়ে বেশি গুনাগুন সম্পন্ন হওয়ায় স্থানীয়জাত পেপের চেয়ে এর দাম প্রায় তিনগুন বেশি।
এ জাতের পেপে তাইওয়ান, দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি হয়ে থাকে। এ রকম অংশিদারত্ব চাষে আরও তিনটি বাগানের সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত রয়েছেন।ভালুকার গাদুমিয়া, গোবুদিয়া ও সখীপুর উপজেলার দেবরাজ গ্রামে আরও তিনটি পেপে বাগান রয়েছে তার।পেপে ছাড়াও লেবু, কুল চাষ করে তিনি ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন।তিনি আরও জানান, এলাকার বেকার যুবকরা চাকরির পিছনে ঘুরে সময় নষ্ট না করে অন্যের জমি ভাড়া নিয়ে পেপে বাগান করলে লাখ লাখ টাকা উপার্জন করতে পারেন অনায়াসে।
পেপের আবাদ করে তিনি ইতোমধ্যে সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছেন এবং স্ত্রী সন্তান নিয়ে সুখে আছেন।বড় মেয়ে সুইটি আক্তার অষ্টম শ্রেণিতে আর ছোট ছেলে সেলিম পঞ্চম শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল আজম খান জানান, ভালুকা উপজেলায় সাড়ে তিনশত হেক্টর জমিতে পেপের আবাদ হয়েছে। তদারকির জন্য মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা রয়েছেন তাছাড়া তিনি নিজেও মাঝে মধ্যে মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শন করেন।