আমি কইলাম, তোমারে যখন আমি বিয়ে করছি তখন কথা ছিল ভাত-কাপড় দিব ইনসুলিন দেওয়ার কথা তো ছিল না

লালমাটিয়া মহিলা কলেজের সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে এসে স্বভাবসুলভ হাস্যরসে সবাইকে মাতিয়ে রাখলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

সোমবার কলেজ প্রাঙ্গণে এই অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্যের ফাঁকে স্ত্রী রাশিদা খানমের সঙ্গে খুনসুটির গল্প শুনিয়ে দর্শকদের মধ্যে হাসির ঝড় তুলে দেন তিনি।

স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক ছিলেন এ অনুষ্ঠানের সভাপতি। তার সঙ্গে পরিচয়ের কথা বলতে গিয়েই আবদুল হামিদের গল্পের সূত্রপাত।

“তার সাথে আমার দীর্ঘ দিনের পরিচয়। আজ সেসব কথা বলার সুযোগ নেই।… বেশি কথা বলতে চাই না। অনেক সময় হয়ে গেছে, মনটাও একটু খারাপ।”

রাষ্ট্রপতির মন খারাপ কেন?

“সকালে তাড়াহুড়ো করে ঘুম থেকে ওঠার পর নাস্তা করার সময় একটু গোলমাল হয়ে গেছে। গোলমালের বিষয়টা বলাও মুশকিল।”

রাষ্ট্রপতির বলার ভঙ্গিতে দর্শক সারিতে হাসির সঙ্গে সঙ্গে তখন আওয়াজ উঠেছে- ‘বলতে হবে, বলতে হবে’।

অতঃপর বলতে শুরু করলেন রাষ্ট্রপতি হামিদ।

“আমি যখন নাস্তা করছি, আমার স্ত্রী তখন ইনসুলিন নেবে। সিস্টার আসে ইনসুলিন দেওয়ার জন্য। বাই দি বাই আমি সিস্টাররে জিজ্ঞাসা করলাম- ইনসুলিনের দাম কত। পরে বলল, একটা ইনসুলিন দিয়ে দুই দিন চলে, দাম নয়শ টাকা।

“এখনতো রাষ্ট্রপতি আর তার স্ত্রীর চিকিৎসার খরচ সরকারিভাবে দেওয়া হয়। যখন আমার পদ থাকবে না, চলে যাব, তখন রোজ সাড়ে চারশ টাকার ইনসুলিন… আরও অসুখ বিসুখ আছে। হিসাব করলাম, প্রায় এক হাজার টাকা ওষুধের পেছনে লাগবে। এই টাকা কোইত্তে আইব?”

আবদুল হামিদ বলেন, “উনি (স্ত্রী রাশিদা খানম) বললেন, ‘এই টাকা তুমি দিবা’। আমি কইলাম, তোমারে যখন আমি বিয়ে করছি তখন কথা ছিল ভাত-কাপড় দিব। ইনসুলিন দেওয়ার কথা তো ছিল না। এ নিয়ে অনেক কথা কাটাকাটি… পরে বললাম আচ্ছা এটা যার যার তার তার।

“সে তখন রাজি হল। আমার বিয়ের সময় কাবিন ছিল ২৫ হাজার টাকা। আমি ২৫ হাজার দিয়ে দিব বললাম। সে বলে, ‘২৫ হাজার টাকাতো এখন না। ৬৪ সালে বিয়ে করছি। তখনকার ২৫ হাজার এখন ২৫ কোটি।’

“নয় মণ ঘিও হইব না রাধাও নাচব না। মন মেজাজ ভালো না। আর কিছু কথা বলতাম।”

এরপর গল্প ফেলে আবার লিখিত বক্তব্যে চলে যান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

২০১৩ সালের এপ্রিলে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেওয়ার পর বঙ্গভবনে ওঠেন আবদুল হামিদ। তার আগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন অষ্টম জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা এবং পরে নবম জাতীয় সংসদে স্পিকারের দায়িত্ব পালনের সময় কিছুদিন লালমাটিয়ায় একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকতেন তিনি।

সেই সময়ের স্মৃতিচারণ করে তিনি অনুষ্ঠানে বলেন, আমিও লালমাটিয়ার বাসিন্দা ছিলাম। আর আমাদের প্রতিনিধি ছিলেন জাহাঙ্গীর কবীর নানক।”

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর