ঢাকা ১০:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আত্রাইয়ে আলু গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষকরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৪০:৩২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৬
  • ৬৫৮ বার

জেলার আত্রাইয়ের প্রতিটি মাঠ জুড়ে এখন আলু গাছের সবুজ রং এ মুখরিত ফসলের মাঠ। উপজেলার প্রতিটি মাঠে এখন শুধু সবুজ রঙের বর্ণীল সমরাহ। এ অপরুপ প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই যেন মনো মুগ্ধকর এক মূহুর্ত। ভালো ফলনের আশায় উপজেলার কৃষকেরা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে তাদের আলুর ক্ষেতে। কৃষকের পাশাপাশি বসে নেই কৃষি কর্মকর্তারাও।

এবারে চলতি রবিশস্য মৌসুমে কোন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা না দেওয়ায় এবং আলু চাষের পরিবেশ অনুকূলে থাকায় আলুর পাশাপাশি সরিষা, গম ও ভোট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে। গ্রামীণ জনপদের কৃষকরা এই আলু যথা সময়ে ঘরে তুলতে পাড়লে এবং বিক্রয় মূল্য ভালো পেলে বন্যার কারণে রোপা-আমন ধানের ক্ষতি পুষিয়ে ইরি-বোরো ধান চাষে কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে বলে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মনে করছেন।

নওগাঁ জেলার খাদ্যশস্য ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত আত্রাই উপজেলার মাঠগুলো এখন কৃষকদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রবিশস্য মৌসুমে এবারে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ ২ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এবছর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে আলু চাষিদেরকে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে যথাযথ পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ কারিগরী সহযোগিতার কারণে আলু ক্ষেত অনেকটা রোগ-বালাই মুক্ত হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। উপজেলার শাহাগোলা, ভোঁপাড়া, মনিয়ারী ও আহসানগঞ্জ ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি সরিষা আলু হয়েছে।

উপজেলার শাহাগোলা গ্রামের আজাদ সরদার জানান, আমি এবছর ৫বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছি। হিমাগারে কিছু বীজ রেখেছিলাম আর বাকিটা কিনে জমিতে বপণ করেছি। আলুর গাছে ভালো হওয়ায় মনে হচ্ছে এবার আলুর আশানুরুপ ফলন পাবো। দাম ভালো হলে বিগত দিনের বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে পুরোদমে ইরি-বোরো চাষ করতে পারবো।

বড় ডাঙ্গা গ্রামের আয়েত আলী জানান, আমি চলতি মৌসুমে প্রায় সাড়ে ৮ বিঘা জমিতে লালপাকরী জাতের আলুর আবাদ করেছি। কোন প্রকার দুর্যোগ ও রোগবালাই না থাকায় এ বছর আলুর বাম্পার ফলন পাবো বলে আমি আশা করছি।

সরেজমিনে উপজেলার ভবানীপুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শফি উদ্দিন আহম্মেদের সাথে কথা বললে তিনি জানান, শুরুতেই আলুর ক্ষেতে বন্যার প্রভাবের কারণে নানা ধরনের পোকা-মাকড়ের আনাগোনা দেখা দিলেও মাঠ পর্যায়ে আমরা কৃষকদের কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে যথাযথ পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ কারিগরী সহযোগিতা দিয়ে আসছি। বর্তমানে আলু ক্ষেতে প্রায় শত ভাগ রোগ-বালাই মুক্ত হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছি।

এ বিষয়ে আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কেএম কাউছার বলেন, এবারে আত্রাই উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে বিগত বছরের তুলনায় সবচেয়ে বেশি পরিমাণ আলু চাষ হয়েছে। যথা সময়ে জমি চাষ যোগ্য হওয়ায় এলাকার কৃষকরা সুযোগ বুঝে আলুর আবাদ করেছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদেরকে যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোন প্রকার ক্ষতি না হলে আত্রাই উপজেলায় আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে। শুধু তাই নয় আলু চাষের জমিগুলো উর্ব্বরতা বেশি থাকায় কৃষকরা ইরি-বোরো চাষেও এর সুফল পাবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

আত্রাইয়ে আলু গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষকরা

আপডেট টাইম : ১২:৪০:৩২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৬

জেলার আত্রাইয়ের প্রতিটি মাঠ জুড়ে এখন আলু গাছের সবুজ রং এ মুখরিত ফসলের মাঠ। উপজেলার প্রতিটি মাঠে এখন শুধু সবুজ রঙের বর্ণীল সমরাহ। এ অপরুপ প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই যেন মনো মুগ্ধকর এক মূহুর্ত। ভালো ফলনের আশায় উপজেলার কৃষকেরা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে তাদের আলুর ক্ষেতে। কৃষকের পাশাপাশি বসে নেই কৃষি কর্মকর্তারাও।

এবারে চলতি রবিশস্য মৌসুমে কোন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা না দেওয়ায় এবং আলু চাষের পরিবেশ অনুকূলে থাকায় আলুর পাশাপাশি সরিষা, গম ও ভোট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে। গ্রামীণ জনপদের কৃষকরা এই আলু যথা সময়ে ঘরে তুলতে পাড়লে এবং বিক্রয় মূল্য ভালো পেলে বন্যার কারণে রোপা-আমন ধানের ক্ষতি পুষিয়ে ইরি-বোরো ধান চাষে কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে বলে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মনে করছেন।

নওগাঁ জেলার খাদ্যশস্য ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত আত্রাই উপজেলার মাঠগুলো এখন কৃষকদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রবিশস্য মৌসুমে এবারে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ ২ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এবছর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে আলু চাষিদেরকে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে যথাযথ পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ কারিগরী সহযোগিতার কারণে আলু ক্ষেত অনেকটা রোগ-বালাই মুক্ত হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। উপজেলার শাহাগোলা, ভোঁপাড়া, মনিয়ারী ও আহসানগঞ্জ ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি সরিষা আলু হয়েছে।

উপজেলার শাহাগোলা গ্রামের আজাদ সরদার জানান, আমি এবছর ৫বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছি। হিমাগারে কিছু বীজ রেখেছিলাম আর বাকিটা কিনে জমিতে বপণ করেছি। আলুর গাছে ভালো হওয়ায় মনে হচ্ছে এবার আলুর আশানুরুপ ফলন পাবো। দাম ভালো হলে বিগত দিনের বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে পুরোদমে ইরি-বোরো চাষ করতে পারবো।

বড় ডাঙ্গা গ্রামের আয়েত আলী জানান, আমি চলতি মৌসুমে প্রায় সাড়ে ৮ বিঘা জমিতে লালপাকরী জাতের আলুর আবাদ করেছি। কোন প্রকার দুর্যোগ ও রোগবালাই না থাকায় এ বছর আলুর বাম্পার ফলন পাবো বলে আমি আশা করছি।

সরেজমিনে উপজেলার ভবানীপুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শফি উদ্দিন আহম্মেদের সাথে কথা বললে তিনি জানান, শুরুতেই আলুর ক্ষেতে বন্যার প্রভাবের কারণে নানা ধরনের পোকা-মাকড়ের আনাগোনা দেখা দিলেও মাঠ পর্যায়ে আমরা কৃষকদের কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে যথাযথ পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ কারিগরী সহযোগিতা দিয়ে আসছি। বর্তমানে আলু ক্ষেতে প্রায় শত ভাগ রোগ-বালাই মুক্ত হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছি।

এ বিষয়ে আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কেএম কাউছার বলেন, এবারে আত্রাই উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে বিগত বছরের তুলনায় সবচেয়ে বেশি পরিমাণ আলু চাষ হয়েছে। যথা সময়ে জমি চাষ যোগ্য হওয়ায় এলাকার কৃষকরা সুযোগ বুঝে আলুর আবাদ করেছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদেরকে যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোন প্রকার ক্ষতি না হলে আত্রাই উপজেলায় আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে। শুধু তাই নয় আলু চাষের জমিগুলো উর্ব্বরতা বেশি থাকায় কৃষকরা ইরি-বোরো চাষেও এর সুফল পাবে।