চাকরিজীবী মুক্তিযোদ্ধাদের সনদ কেন যাচাই হবে না: হাইকোর্ট

সরকারি চাকরিজীবী (বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত) মুক্তিযোদ্ধাদের সনদ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক কেন যাচাই-বাছাই করার নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি শেখ হাসান আরিফের হাইকোর্ট বেঞ্চ এবং বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ পৃথকভাবে রুল জারি করেন। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও জামুকার মহাপরিচালককে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

চাকরিজীবী মুক্তিযোদ্ধাদের সনদ যাচাইয়ের প্রয়োজন হলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় যাচাই-বাছাই করবে মর্মে ২০১৪ সালের পহেলা অক্টোবর একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জারি করা এ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘একজন গণকর্মচারি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কীনা তা যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিস্ট গণকর্মচারীর মুক্তিযোদ্ধা সনদ ও এদতসংক্রান্ত প্রমানপত্র তার চাকুরী নিয়ন্ত্রনকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ পূর্বক এর সঠিকতা যাচাই করে নিতে হবে। এ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রত্যয়নক্রমেই এ সুযোগ প্রদান করা যাবে।’ ওই প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়, ‘মুক্তিযোদ্ধা গণকর্মচারীর অনুকূলে ইতোপূর্বে এ মন্ত্রণালয় কর্তৃক ইস্যুকৃত প্রত্যয়নের সঠিকতা সম্পর্কে পুণঃযাচাইয়ের আবশ্যকতা দেখা দিলে সংশ্লিস্ট গণকর্মচারীর নিয়ন্ত্রনকারী কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় তথ্যসহ যাচাইয়ের প্রস্তাব এ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণপূর্বক যাচাই করিয়ে নেবেন।’

কিন্তু এ আদেশ উপেক্ষা করে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) -এ মহাপরিচালক পৃথক একটি আদেশ জারি করেন। যা গত ৮ নভেম্বর দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, ‘জামুকা কর্তৃক নির্ধারিত তারিখ, স্থান ও সময়ে উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই কার্যক্রম সম্পাদন করা হবে।’

এ অবস্থায় সকল গণকর্মচারি (চাকরিজীবী ও অবসরপ্রাপ্ত) মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে জামুকার এ আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে পৃথক দুটি রিট আবেদন করেন খাদ্য অধিদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত ম্যানেজার এস এম সোহরাব হোসেন এবং নাটোরের অবসরপ্রাপ্ত অডিট অ্যান্ড একাউন্টস কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম। এ দুটি আবদেনের ওপর শুনানি শেষে হাইকোর্ট পৃথক রুল জারি করেন। রুলে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী গণকর্মচারিদের মুক্তিযোদ্ধা সনদ যাচাই-বাছাইয়ের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

এস এম সোহরাব হোসেনের আবেদনে বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি শেখ হাসান আরিফের হাইকোর্ট বেঞ্চ এবং রফিকুল ইসলামের আবেদনে বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ পৃথকভাবে রুল জারি করেন। আদালতে রিট আবেদনকারী এস এম সোহরাব হোসেনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ড. রফিকুর রহমান, হাসনাত কাইয়ুম ও দেওয়ান মেজবাহ আহমেদ। আরেক রিট আবেদনকারী রফিকুল ইসলামের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর