২২ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে : জাতিসংঘ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতনে সেখান থেকে হাজার হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে প্রতিবেশি বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে। রোহিঙ্গা মুসলিমদের মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য বার বার আহ্বান জানাচ্ছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, দু’মাসের বেশি সময় ধরে রাখাইন রাজ্যের প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম মানবেতর জীবনযাপন করছে। সেখানে কোনো মানবিক সহায়তাও পৌঁছাচ্ছে না।

এদিকে, মিয়ানমার সরকার মাংদাও অঞ্চলে কোনো সংবাদমাধ্যম, সাংবাদিক বা ত্রাণকর্মীকে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। তাই ওই অঞ্চলের প্রকৃত অবস্থা জানাও সম্ভব হচ্ছে না।

গত নভেম্বরে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের তিনটি পোস্টে হামলার ঘটনায় নয়জন পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার

ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাখাইন রাজ্যে অভিযান শুরু করে বার্মা সেনাবাহিনী।

অভিযানের নাম করে সেনাবাহিনী ওই অঞ্চলের রোহিঙ্গা মুসলিমদের বাড়ি-ঘরে আগুন দিচ্ছে, নারীদের পাশবিক নির্যাতন করছে, বহু মানুষকে হত্যা করেছে। অথচ মিয়ানমার সরকার এবং সেনাবাহিনী বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ডিসেম্বরের ৯ তারিখে মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সমন্বয়কের মুখপাত্র পিয়েরে পেরোন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, রাখাইন রাজ্য থেকে ইতিমধ্যে ২২ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম পালিয়ে প্রতিবেশি বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

দু’মাসের বেশি সময় ধরে বহু মানুষ মৌলিক স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সেখানকার ৭ হাজার ৬শ’ গর্ভবতী নারী কোনো ধরনের চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না।

এক বিবৃতিতে, যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স, বেলজিয়ামসহ ১৪ দেশের কূটনীতিক রাখাইন রাজ্যের মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

এদিকে এই প্রথমবারের মতো নির্যাতিত মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক ফোরামে বসতে যাচ্ছেন মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের উপদেষ্টা ও শান্তিতে নোবেল বিজয়ী নেত্রী অং সাং সুচি।

তিনি দেশটির রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে আসিয়ানের এক অনির্ধারিত বৈঠক ডেকেছেন।

আগামী ১৯ ডিসেম্বর ইয়াঙ্গুনে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নিয়ে এই বৈঠক হবে। বৈঠকে মুসলিম রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক উদ্বেগের বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের অবস্থান তুলে ধরবেন সুচি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর