ঢাকা ১০:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নদীর নাব্যতা হারাচ্ছে অন্যদিকে চিরিরবন্দরের প্রাকৃতিক পরিবেশ হারিয়ে যাচ্ছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১১:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০১৬
  • ২৭১ বার

দিনাজপুর চিরিরবন্দরের এককালের খরস্রোতা ইছামতি নদী এখন মৃত প্রায়। এ নদী দখল করে ভূমি দস্যুরা ভরাট করে চাষ করছে
রসুন, আলু, ভুট্টা, ইরি ও বোরো ধান। বর্ষা মৌসুমে পানি আসলেও শুকনো মৌসুমে ইছামতি নদীর বুক জুড়ে রয়েছে সবুজে সবুজে ভরা ফসলের মাঠ।

কয়েক’শ বছরের পুরাতন ইছামতি নদীর দুই তীরে যে যার মত দখলের ফলে একদিকে যেমন নদীর নাব্যতা হারাচ্ছে অন্যদিকে হারিয়ে যাচ্ছে চিরিরবন্দরের প্রাকৃতিক পরিবেশ। বর্ষা মৌসুমে দুই কূল প্লাবিত হয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়। এই নদীই একসময় চিরিরবন্দর উপজেলার ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যম ছিল। এক সময় চলছিল বিভিন্ন ধরনের পাল তোলা নৌকা। সরকারের পরিকল্পনা ও নদী শাসনের অভাবে ধীরে ধীরে এই নদী তার জৌলুস হারিয়ে সংকুচিত হচ্ছে।

বিভিন্ন সূত্র ও এলাকার প্রবীণদের থেকে জানা যায়, দিনাজপুর জেলার ভিতর দিয়ে প্রবাহিত নদীর মধ্যে উল্লেখ যোগ্য ইছামতি নদী। এ নদী ভারত থেকে উৎপত্তি হয়ে এ দেশে এসেছে। চিরিরবন্দরের মধ্যে দিয়ে খরস্রোতা এ নদীতে চলত পাল তোলা নৌকা। ব্যবসা-বাণিজ্যের বাহন হিসেবে ব্যবসায়ীরা নৌকা ব্যবহার করে চিরিরবন্দরে ব্যবসা-বাণিজ্য করতো। ফলে সেকালে চিরিরবন্দরে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছিল। যা ইছামতি নদীর অবদান। এ নদী এখন ভরাট হয়ে শস্য ক্ষেতের সমান্তরালে এসে দাঁড়িয়েছে। ফলে নদীর বুক ভরাট করে রীতিমতো আবাদ হচ্ছে নানা জাতের ফসল। এখন ইছামতির বুকে চাষ হচ্ছে ইরি বোরো ধান সহ শীতকালীন সবজি।

উপজেলার সাতনালা, ইসবপুর, আব্দুলপুর, পুন্ট্রি, ইউনিয়নের উল্লেখযোগ্য পুকুর দীঘি ও বিল নেই। যেখানে সারাবছর পানি থাকে। এছাড়া এবারে বন্যা না হওয়ায় সব ধরণের মাছও আসতে পারেনি। ফলে দেশি মাছের চরম আকাল দেখা দিয়েছে। এ কারণে ‘মাছে ভাতে বাঙালি’ এ শব্দটিও ভুলতে বসেছে এখানকার মানুষ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক’জন কৃষক জানান,এবার নদীর তলায় তাদের সুন্দর ধান হয়েছে। তারা বিগত ক’বছর ধরে সাফল্যের সঙ্গে ধান চাষাবাদ করছেন। তবে এলাকাবাসী মনে করেন নদী খনন করে নব্যতা বাড়ালে কিছুটা হলেও শুষ্ক মৌসুমে পানি ধরে রাখা সম্ভব হবে এবং এলাকার চাষাবাদ ও কৃষকরা উপকৃত হবেন।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোছা. কামনুর নাহার জানান, শুষ্ক মৌসুমে পানি স্বল্পতার কারণে নদীতে মাছ চাষ সম্ভব হয় না। পুকুরে মাছ চাষ করে কৃষকরা শ্যালো মেশিনের সাহায্যে। প্রতিদিনই পুকুরে পানি দিতে হয় । এছাড়া আবহাওয়া এর প্রধান কারণ বলে তিনি জানান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

নদীর নাব্যতা হারাচ্ছে অন্যদিকে চিরিরবন্দরের প্রাকৃতিক পরিবেশ হারিয়ে যাচ্ছে

আপডেট টাইম : ১২:১১:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০১৬

দিনাজপুর চিরিরবন্দরের এককালের খরস্রোতা ইছামতি নদী এখন মৃত প্রায়। এ নদী দখল করে ভূমি দস্যুরা ভরাট করে চাষ করছে
রসুন, আলু, ভুট্টা, ইরি ও বোরো ধান। বর্ষা মৌসুমে পানি আসলেও শুকনো মৌসুমে ইছামতি নদীর বুক জুড়ে রয়েছে সবুজে সবুজে ভরা ফসলের মাঠ।

কয়েক’শ বছরের পুরাতন ইছামতি নদীর দুই তীরে যে যার মত দখলের ফলে একদিকে যেমন নদীর নাব্যতা হারাচ্ছে অন্যদিকে হারিয়ে যাচ্ছে চিরিরবন্দরের প্রাকৃতিক পরিবেশ। বর্ষা মৌসুমে দুই কূল প্লাবিত হয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়। এই নদীই একসময় চিরিরবন্দর উপজেলার ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যম ছিল। এক সময় চলছিল বিভিন্ন ধরনের পাল তোলা নৌকা। সরকারের পরিকল্পনা ও নদী শাসনের অভাবে ধীরে ধীরে এই নদী তার জৌলুস হারিয়ে সংকুচিত হচ্ছে।

বিভিন্ন সূত্র ও এলাকার প্রবীণদের থেকে জানা যায়, দিনাজপুর জেলার ভিতর দিয়ে প্রবাহিত নদীর মধ্যে উল্লেখ যোগ্য ইছামতি নদী। এ নদী ভারত থেকে উৎপত্তি হয়ে এ দেশে এসেছে। চিরিরবন্দরের মধ্যে দিয়ে খরস্রোতা এ নদীতে চলত পাল তোলা নৌকা। ব্যবসা-বাণিজ্যের বাহন হিসেবে ব্যবসায়ীরা নৌকা ব্যবহার করে চিরিরবন্দরে ব্যবসা-বাণিজ্য করতো। ফলে সেকালে চিরিরবন্দরে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছিল। যা ইছামতি নদীর অবদান। এ নদী এখন ভরাট হয়ে শস্য ক্ষেতের সমান্তরালে এসে দাঁড়িয়েছে। ফলে নদীর বুক ভরাট করে রীতিমতো আবাদ হচ্ছে নানা জাতের ফসল। এখন ইছামতির বুকে চাষ হচ্ছে ইরি বোরো ধান সহ শীতকালীন সবজি।

উপজেলার সাতনালা, ইসবপুর, আব্দুলপুর, পুন্ট্রি, ইউনিয়নের উল্লেখযোগ্য পুকুর দীঘি ও বিল নেই। যেখানে সারাবছর পানি থাকে। এছাড়া এবারে বন্যা না হওয়ায় সব ধরণের মাছও আসতে পারেনি। ফলে দেশি মাছের চরম আকাল দেখা দিয়েছে। এ কারণে ‘মাছে ভাতে বাঙালি’ এ শব্দটিও ভুলতে বসেছে এখানকার মানুষ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক’জন কৃষক জানান,এবার নদীর তলায় তাদের সুন্দর ধান হয়েছে। তারা বিগত ক’বছর ধরে সাফল্যের সঙ্গে ধান চাষাবাদ করছেন। তবে এলাকাবাসী মনে করেন নদী খনন করে নব্যতা বাড়ালে কিছুটা হলেও শুষ্ক মৌসুমে পানি ধরে রাখা সম্ভব হবে এবং এলাকার চাষাবাদ ও কৃষকরা উপকৃত হবেন।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোছা. কামনুর নাহার জানান, শুষ্ক মৌসুমে পানি স্বল্পতার কারণে নদীতে মাছ চাষ সম্ভব হয় না। পুকুরে মাছ চাষ করে কৃষকরা শ্যালো মেশিনের সাহায্যে। প্রতিদিনই পুকুরে পানি দিতে হয় । এছাড়া আবহাওয়া এর প্রধান কারণ বলে তিনি জানান।