ছর ধরেই ঢাকাই ছবির ইন্ডাস্ট্রির আকাশে ভেসে বেড়িয়েছে শাকিব-অপুর প্রেমের গুঞ্জন। বিয়ে করেছেন জনপ্রিয় এই চলচ্চিত্র জুটি- সেই খবরও প্রকাশ হয়েছে বহুবার। তবে মুখ বাঁকা হাসিতে সেইসবকে গুজব বলেই পাশ কাটিয়ে গেছেন শাকিব-অপু। তবে গেল কয়েক মাস ধরে অনেক জল ঘোলা হচ্ছে শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসকে নিয়ে। শোনা যাচ্ছে অনেক গল্প-খবর। বিয়ে করেছেন তারা লুকিয়ে। অপুর গর্ভে শাকিবের সন্তান। নতুন নায়িকার প্রেমে মজে অপুকে পাশ কাটাতে চাইছেন শাকিব। এমনি আরো অনেক কিছু। তবে সব খবরে নতুন মোড় আসে চলতি বছরের শুরুতেই অপুর নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়ায়। অনেকদিন কোনো খোঁজ ছিলো না। তারপর অনুসন্ধানে জানা যায়, অপু আছেন ভারতের শিলিগুড়িতে। সেখানে শাকিবের তত্ত্বাবধানেই একটি হাসপাতালে ভর্তি আছেন অপু। তার কিছুদিন পর জানা যায়, সেখানে এক নবজাতক সন্তানের জন্ম দিয়েছেন অপু। এই সন্তানের পিতা শাকিব! তবে এইসব খবরের কোনো প্রমাণ মিলেনি। শাকিবও বেশ কিছু গণমাধ্যমের প্রশ্নের কৌশলে এড়িয়ে গেছেন বিষয়টি।
এদিকে জানা গেছে নতুন খবর। আসছে জানুয়ারির শেষদিকে দেশে ফিরছেন অপু বিশ্বাস। এটি নিশ্চিত করেছে অপুর গ্রামের বাড়ি বগুড়ার একাধিক ঘনিষ্টজন। তারা জানান, জানুয়ারির শেষে দেশে পা রাখবেন অপু বিশ্বাস। নিয়ে ফিরবেন কিনা সেটা জানা যায়নি। এই প্রশ্নের সরাসরি কোনো উত্তর মিলেনি। তার ফেরার গুঞ্জন নিয়েও ছড়াচ্ছে ডালপালা। যার পুরোটাই রয়েছে শাকিব খানকে ঘিরে! কেউ কেউ আবার বলছেন, মা হয়েছেন অপু! সেই সন্তানের বাবা শাকিব। নবজাতক সন্তানকে নিয়ে কলকাতায় নাকি অবস্থান করছেন অপু। তবে আগামী বছরের জানুয়ারিতেই অপু বিশ্বাস দেশে ফিরবেন বলে খবর ছড়িয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বেশ কিছু অনলাইনে এমন খবর চাউর হয়।
গুঞ্জন চলছে ভারতের শিলিগুড়িতে একটি হাসপাতালে সন্তান জন্ম দেন অপু। যদিও অজ্ঞাত পরিচয়ে কলকাতা থেকে এ দেশের কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়েছেন অপুর আত্মীয় পরিচয় দেয়া কেউ একজন।
তবে আসলে সে কে, কিইবা তার পরিচয়- সে সম্পর্কেও রয়েছে যথেষ্ট প্রশ্ন। কারণ ফোনে বার্তা প্রেরণকারী তার সুনির্দিষ্ট পরিচয় প্রদান করেননি।
অপুর ‘কাজিন’ বলে দায়সারা পরিচয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল সবকিছু। শাকিব-অপুর ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে অনেক তথ্যই তিনি বলার চেষ্টা করেছেন। যার কোনো সত্যতা উপস্থাপন করার সাহস তিনি দেখাতে পারেননি। কিংবা এ সংক্রান্ত কোনো প্রমাণাদি এখনও পর্যন্ত হস্তান্তর করেননি।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের পর প্রায় দুই বছর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থেকে একেবারেই আড়ালে ছিলেন অপু। এসময়টা তাকে কেউ খুঁজে পায়নি। কিংবা খোঁজার চেষ্টাও করেনি। অভিমানী অপু নিজেও কারও কাছে যেচে পড়ে কাজ পাওয়ার চেষ্টা করেননি। বরং এ সময় নিজেকে বোঝার চেষ্টা করেছেন। নতুনভাবে তৈরি করার চেষ্টা করেছেন। শাকিব খানের সঙ্গে একসঙ্গে অনেক ছবিতে অভিনয় করার কারণে নিজের প্রতি খেয়ালও রাখতে পারেননি। কিছুটা মুটিয়েও গিয়েছিলেন। শেষের দিকে এসে ছবি প্রত্যাশার অনুযায়ী ব্যবসাও করতে পারছিল না। অনেকে এটাকে ‘একঘেয়েমি’ হিসেবে বলেছেন। সবকিছু থেকে নিজেকে মুক্ত করতে শাকিবের ‘ছেড়ে’ দেয়ার ঘোষণাটা তাকে কষ্ট দিলেও নিজেকে নিয়ে ভাবার সময় পাওয়ার জন্য কিছুটা স্বস্তিতেও ছিলেন অপু। মুক্ত সময়ে নিজেকে নতুনভাবে তৈরি করেছেন। নিয়মিত জিম করেছেন।
নিজেকে আমূল বদলে নিয়ে ২০১৩ সালের শুরুর দিকে আবারও ফিরলেন ইন্ডাস্ট্রিতে। ততদিনে শাকিব খানের মনের বরফও গলতে শুরু করেছিল। অন্য নায়িকাদের সঙ্গে সফলতার পাল্লাটা নিম্নমুখী দেখে নিজের প্রযোজিত প্রথম ছবি ‘হিরো : দ্য সুপারস্টার’-এ নায়িকা হিসেবে অপুকেই কাস্ট করেন। এ ছবি দিয়ে আবারও অপুর প্রত্যাবর্তন ঘটে ইন্ডাস্ট্রিতে।
ফিরতি যাত্রায় অপুকে দেখে অনেকে চিনতেও ভুল করেছেন। এ কোন অপু! একেবারে স্লিম ফিগারের গ্ল্যামারাস অন্য এক মেয়ে যেন! আবারও ফিরলেন অপু। সেই শাকিবের হাত ধরেই। ফিরতি যাত্রায় আবারও শাকিব-অপু জুটি হিট। এরপর আবারও পূর্বের নিয়মে পথচলা। জুটি বেঁধেই বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনয়। তবে আগের মতো গড্ডালিকায় গা ভাসাতে চাচ্ছিলেন না অপু। আবারও কারও নিয়ন্ত্রণে থাকার বিষয়টিও তাকে ভাবিয়েছে দুটি বছর। তাই নিজের মতো করেই কাজ করতে চাচ্ছিলেন।
কিন্তু চলচ্চিত্রের ‘নোংরা রাজনীতি’র কাছে যেন টিকে থাকাটা তার পক্ষে মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফিরতি যাত্রায় দুই বছর শান্তিতে কাজ করার পর তৃতীয় বছর এসে আবারও পুরনো হতাশা তাকে ঘিরে ধরেছে। শাকিবও যেন পূর্বের মতো আচরণ শুরু করলেন। যদিও শাকিবের এ ধরনের আচরণের সঙ্গে আগে থেকেই পরিচিত, তাই কষ্টের পরিমাণটা আগের মতো পাহাড় না হয়ে উঁচু ঢিবিতেই সীমাবদ্ধ থাকল। কিন্তু নিজের আত্মসম্মান বিলিয়ে দিতে রাজি নন। তাই ইন্ডাস্ট্রি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়ার ভাবনা ভর করে তার মনে
এরপর গত মার্চ মাস থেকে আবারও আড়ালে চলে যান অপু বিশ্বাস।