ঢাকা ১০:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আগাম ধনে পাতায় লাভবান মানিকগঞ্জের কৃষক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৩৬:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর ২০১৬
  • ৩১৯ বার

আব্দুল করিম আগাম ধনে পাতা চাষ করে মাত্র আড়াই মাসে খরচ বাদে দুই লাখ টাকা আয় করেছেন।শুধু করিম মিয়া নন এমন প্রায় ২০-৩০ জন চাষি আগাম ধনে পাতা চাষ করে সাবলম্বী হচ্ছেন বলে জানিয়েছে মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি বিভাগ।

ধনে পাতা ২জেলার সাটুরিয়া উপজেলায় সবচেয়ে বেশি সবজি চাষ হয়ে থাকে।উন্নত বীজ ও আধুনিক পদ্ধতিতে এ স্বাদে গুণে ও পুষ্টিকর শীত মৌসুমী ধনে পাতা চাষকে কেন্দ্র করে বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে।এ ধনে পাতা মাঠ থেকে উঠিয়ে বাড়তি আয় করেছে সাটুরিয়ার অন্তত ৫ শতাধিক নারী শ্রমিক। সরেজমিনে গিয়ে সাটুরিয়া উপজেলার ফুকুরহাটি ইউনিয়নের রাইল্লা গ্রামে দিয়ে দেখা যায়, প্রায় ২৫ পুরুষ ও নারী ক্ষেত থেকে ধনে পাতা উঠানোর কার্যক্রমে ব্যাস্ত।

ধনে পাাতা ৩এ সময় ক্ষেতের মালিক আব্দুল করিমও ব্যস্ত তাদের তদারকি করতে। যেন কথা বলার সময় নেই। তার পরও কাজ করতে করতে প্রতিবেদককে জানান, এ ধনে পাতা যা উঠাচ্ছেন এটি পরের কিস্তিতে।

চলতি মৌসুমেই আগাম ১০০ শতাংশ জমিতে ধনে পাতা চাষ করে দেড় লাখ টাকা বিক্রি করেছেন।এতে তার শতাংশ প্রতি খরচ হয়েছিল ৩০০ টাকা করে।হিসাব মতে প্রথম বার ৩০ হাজার টাকা খরচ করে এক লাখ ২০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে।

করিম মিয়া জানান, সঠিক পরিচর্যা করতে পারলে ধনে পাতার বীজ রোপন করার ৪০-৪৫ দিন পর তা বিক্রি করার উপযোগী হয়। করিম মিয়া এখন ২য় কিস্তির ধনে পাতা ক্ষেত থেকে উঠিয়ে বিক্রি করছেন।এ কিস্তি থেকে প্রায় আরও এক লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন।সব মিলিয়ে আড়াই মাস ধনে পাতা চাষ করে খরচ বাদ দিয়ে দুই লাখ টাকা আয় হবে।

ধনে পাতা ৪এ ব্যাপারে সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার এমদাদুল হক জানান, সাটুরিয়ায় শুধু করিম মিয়া নন তার মত অনেক চাষিই আগাম ধনে পাতা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন।

সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসের সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. এমরাত হোসেন জানান, শুধু মাত্র সাটুরিয়া উপজেলার ফুকুরহাটি ইউনিয়নেই আগাম ধনে পাতা চাষ করছেন প্রায় ২০-৩০ জান চাষি।

আর চাষিদের কাছ থেকে পাতা কিনে আরতে বিক্রি করছেন এমন পাইকার আছে আরও ১৫-২০ জন। আর এসব চাষি ও পাইকারদের ক্ষেত থেকে ধনে পাতা দৈনিক মুজুরির ভিত্তিতে উঠিয়ে বাড়তি আয় করছেন প্রায় পাঁচ শতাধিক নারী।

ধনে পাতা ৫এ ব্যাপারে ধনে পাতা উঠায় এমন নারী শ্রমিক আয়শা, জুলেখা বেগম জানান,আমরা সংসারের কাজের পাশাপাশি ধনে পাতা ক্ষেত থেকে উঠিয়ে দেই।সকাল সাতটা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত কাজ করে মুজুরি পাই ২০০ টাকা।প্রাপ্য পারিশ্রমিক না পেলেও এটি আমাদের বাড়তি আয় হচ্ছে।

মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ- সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গ্যানেশ চন্দ্র রায়। জেলার ৭ টি উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৮৬৩ হেক্টর জমিতে ধনে পাতা চাষ হয়েছে।জেলার ৭টি উপজেলার মধ্যে মানিকগঞ্জ সদর, সিংগাইর এবং সাটুরিয়া উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ধনে পাতা চাষ হয়ে থাকে।

ধনে পাতা ৬এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ- পরিচালক মো. আলিমুজ্জামান মিঞা জানান, আমাদের কর্মকর্তাদের পরামর্শের ক্রমেই জেলাতে ধনে পাতা চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে।

জেলার বাণিজ্যিকভাবে ধনে পাতা চাষিরা নিজ ক্ষেত থেকে উঠিয়ে সরাসরি জেলার হাট- বাজার ছাড়াও ঢাকার কাওরান বাজারের আড়তে নিয়ে বিক্রি করছেন।এ ধনে পাতা কৃষকরা ছাড়াও পাইকাররা ক্ষেত থেকেও কিনে বিক্রি করে জিবীকা নির্বাহ করছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

আগাম ধনে পাতায় লাভবান মানিকগঞ্জের কৃষক

আপডেট টাইম : ১২:৩৬:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর ২০১৬

আব্দুল করিম আগাম ধনে পাতা চাষ করে মাত্র আড়াই মাসে খরচ বাদে দুই লাখ টাকা আয় করেছেন।শুধু করিম মিয়া নন এমন প্রায় ২০-৩০ জন চাষি আগাম ধনে পাতা চাষ করে সাবলম্বী হচ্ছেন বলে জানিয়েছে মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি বিভাগ।

ধনে পাতা ২জেলার সাটুরিয়া উপজেলায় সবচেয়ে বেশি সবজি চাষ হয়ে থাকে।উন্নত বীজ ও আধুনিক পদ্ধতিতে এ স্বাদে গুণে ও পুষ্টিকর শীত মৌসুমী ধনে পাতা চাষকে কেন্দ্র করে বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে।এ ধনে পাতা মাঠ থেকে উঠিয়ে বাড়তি আয় করেছে সাটুরিয়ার অন্তত ৫ শতাধিক নারী শ্রমিক। সরেজমিনে গিয়ে সাটুরিয়া উপজেলার ফুকুরহাটি ইউনিয়নের রাইল্লা গ্রামে দিয়ে দেখা যায়, প্রায় ২৫ পুরুষ ও নারী ক্ষেত থেকে ধনে পাতা উঠানোর কার্যক্রমে ব্যাস্ত।

ধনে পাাতা ৩এ সময় ক্ষেতের মালিক আব্দুল করিমও ব্যস্ত তাদের তদারকি করতে। যেন কথা বলার সময় নেই। তার পরও কাজ করতে করতে প্রতিবেদককে জানান, এ ধনে পাতা যা উঠাচ্ছেন এটি পরের কিস্তিতে।

চলতি মৌসুমেই আগাম ১০০ শতাংশ জমিতে ধনে পাতা চাষ করে দেড় লাখ টাকা বিক্রি করেছেন।এতে তার শতাংশ প্রতি খরচ হয়েছিল ৩০০ টাকা করে।হিসাব মতে প্রথম বার ৩০ হাজার টাকা খরচ করে এক লাখ ২০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে।

করিম মিয়া জানান, সঠিক পরিচর্যা করতে পারলে ধনে পাতার বীজ রোপন করার ৪০-৪৫ দিন পর তা বিক্রি করার উপযোগী হয়। করিম মিয়া এখন ২য় কিস্তির ধনে পাতা ক্ষেত থেকে উঠিয়ে বিক্রি করছেন।এ কিস্তি থেকে প্রায় আরও এক লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন।সব মিলিয়ে আড়াই মাস ধনে পাতা চাষ করে খরচ বাদ দিয়ে দুই লাখ টাকা আয় হবে।

ধনে পাতা ৪এ ব্যাপারে সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার এমদাদুল হক জানান, সাটুরিয়ায় শুধু করিম মিয়া নন তার মত অনেক চাষিই আগাম ধনে পাতা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন।

সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসের সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. এমরাত হোসেন জানান, শুধু মাত্র সাটুরিয়া উপজেলার ফুকুরহাটি ইউনিয়নেই আগাম ধনে পাতা চাষ করছেন প্রায় ২০-৩০ জান চাষি।

আর চাষিদের কাছ থেকে পাতা কিনে আরতে বিক্রি করছেন এমন পাইকার আছে আরও ১৫-২০ জন। আর এসব চাষি ও পাইকারদের ক্ষেত থেকে ধনে পাতা দৈনিক মুজুরির ভিত্তিতে উঠিয়ে বাড়তি আয় করছেন প্রায় পাঁচ শতাধিক নারী।

ধনে পাতা ৫এ ব্যাপারে ধনে পাতা উঠায় এমন নারী শ্রমিক আয়শা, জুলেখা বেগম জানান,আমরা সংসারের কাজের পাশাপাশি ধনে পাতা ক্ষেত থেকে উঠিয়ে দেই।সকাল সাতটা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত কাজ করে মুজুরি পাই ২০০ টাকা।প্রাপ্য পারিশ্রমিক না পেলেও এটি আমাদের বাড়তি আয় হচ্ছে।

মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ- সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গ্যানেশ চন্দ্র রায়। জেলার ৭ টি উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৮৬৩ হেক্টর জমিতে ধনে পাতা চাষ হয়েছে।জেলার ৭টি উপজেলার মধ্যে মানিকগঞ্জ সদর, সিংগাইর এবং সাটুরিয়া উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ধনে পাতা চাষ হয়ে থাকে।

ধনে পাতা ৬এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ- পরিচালক মো. আলিমুজ্জামান মিঞা জানান, আমাদের কর্মকর্তাদের পরামর্শের ক্রমেই জেলাতে ধনে পাতা চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে।

জেলার বাণিজ্যিকভাবে ধনে পাতা চাষিরা নিজ ক্ষেত থেকে উঠিয়ে সরাসরি জেলার হাট- বাজার ছাড়াও ঢাকার কাওরান বাজারের আড়তে নিয়ে বিক্রি করছেন।এ ধনে পাতা কৃষকরা ছাড়াও পাইকাররা ক্ষেত থেকেও কিনে বিক্রি করে জিবীকা নির্বাহ করছে।