ঢাকা ০৯:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কিশোরগঞ্জে আমনের বাম্পার ফলনে খুশি কৃষকরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫৮:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০১৬
  • ৩৫৮ বার

কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জে এখন চলছে রোপা আমন কাটার ধুম। প্রতিটি ফসলের মাঠেই চলছে আমন কাটার উৎসব। বোরো মৌসুমে প্রখর রোদে কৃষকের গা পুড়লেও হেমন্তের এই মৃদু উষ্ণ সৌরতাপে দল বেঁধে কৃষকরা ক্লান্তিহীনভাবে কেটে যাচ্ছেন মাঠের সোনার ধান। কৃষকরা জমির পুরো ধান কেটে জমিতে কয়েকদিন বিছিয়ে রাখেন। ধান শোকানোর পর সেগুলি বাড়িতে নিয়ে মাড়াইকল দিয়ে মাড়াই করে গোলায় তোলেন। এখন নতুন ধানের মৌ মৌ গন্ধে কৃষকের বাড়ি বাড়ি যেন সুবাস ছড়াচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার সারা জেলায় মোট ৭৪ হাজার ৮৬৬ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে উফশী ৬৫ হাজার ১৬৫ হেক্টর, হাইব্রিড ১৫ হেক্টর, আর স্থানীয় জাতের ধান ৯ হাজার ৬৮৬ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। আর চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৯৩ হাজার ১৩৫ মেট্রিকটন। এর মধ্যে উফশী ধানের চাল ১ লাখ ৭৭ হাজার ১০১ মেট্রিকটন, হাইব্রিড ধানের চাল ৪৮ মেট্রিকটন আর স্থানীয় জাতের ধানের চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৫ হাজার ৯৮৬ মেট্রিকটন। তবে সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী ৭৪ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮৪ হেক্টর বেশি। ইতিমধ্যে ৩০ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে।

এক সময় জনসংখ্যা কম থাকলেও কার্তিক মাসে কিশোরগঞ্জে খাদ্যাভাব বা ‘আকাল’ দেখা দিত। কৃষকের ঘরেও তখন খাবার মজুদ থাকতো না। চালের দাম হয়ে যেত দ্বিগুণ। কিন্তু এখন জনসংখ্যা দ্বিগুণের বেশি হলেও খাদ্যাভাব নেই। উৎপাদন বেড়েছে অনেক। চালের বাজারও মোটামুটি স্থিতিশীল।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, এবছর তাদের জমিতে আশাতীত ফলন হয়েছে। কারো কারো জমিতে ক্বদাচিৎ পোকার আক্রমণ হলেও সামগ্রিকভাবে এবার সারা জেলাতেই বাম্পার ফলন হয়েছে। কারণ এবছর দফায় দফায় বৃষ্টি হবার কারণে কারো জমিতেই সম্পূরক সেচ দেয়ার প্রয়োজন হয়নি। যে কারণে জমি সবসময়ই রসালো ছিল। আমন ফসল এবার অনুকূল পরিবেশ পেয়েছে। আর সেই কারণেই ভাল ফলন হয়েছে। কিশোরগঞ্জের প্রধান ফসল বোরো হলেও দ্বিতীয় সর্বাধিক ধান উৎপাদন হয় রোপা আমন মৌসুমে। ১৩ উপজেলা নিয়ে গঠিত কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম এবং নিকলী, এই ৪টি উপজেলা পুরোপুরি হাওর অধ্যুষিত। তার পরও কেবল মিঠামইন ছাড়া এবার বাকি ১২ উপজেলাতেই আমনের আবাদ হয়েছে বলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন। এই কৃষি কর্মকর্তা আরো জানান, কিশোরগঞ্জ একটি ‘খাদ্য উদ্বৃত্ত’ জেলা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

কিশোরগঞ্জে আমনের বাম্পার ফলনে খুশি কৃষকরা

আপডেট টাইম : ১০:৫৮:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০১৬

কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জে এখন চলছে রোপা আমন কাটার ধুম। প্রতিটি ফসলের মাঠেই চলছে আমন কাটার উৎসব। বোরো মৌসুমে প্রখর রোদে কৃষকের গা পুড়লেও হেমন্তের এই মৃদু উষ্ণ সৌরতাপে দল বেঁধে কৃষকরা ক্লান্তিহীনভাবে কেটে যাচ্ছেন মাঠের সোনার ধান। কৃষকরা জমির পুরো ধান কেটে জমিতে কয়েকদিন বিছিয়ে রাখেন। ধান শোকানোর পর সেগুলি বাড়িতে নিয়ে মাড়াইকল দিয়ে মাড়াই করে গোলায় তোলেন। এখন নতুন ধানের মৌ মৌ গন্ধে কৃষকের বাড়ি বাড়ি যেন সুবাস ছড়াচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার সারা জেলায় মোট ৭৪ হাজার ৮৬৬ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে উফশী ৬৫ হাজার ১৬৫ হেক্টর, হাইব্রিড ১৫ হেক্টর, আর স্থানীয় জাতের ধান ৯ হাজার ৬৮৬ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। আর চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৯৩ হাজার ১৩৫ মেট্রিকটন। এর মধ্যে উফশী ধানের চাল ১ লাখ ৭৭ হাজার ১০১ মেট্রিকটন, হাইব্রিড ধানের চাল ৪৮ মেট্রিকটন আর স্থানীয় জাতের ধানের চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৫ হাজার ৯৮৬ মেট্রিকটন। তবে সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী ৭৪ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮৪ হেক্টর বেশি। ইতিমধ্যে ৩০ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে।

এক সময় জনসংখ্যা কম থাকলেও কার্তিক মাসে কিশোরগঞ্জে খাদ্যাভাব বা ‘আকাল’ দেখা দিত। কৃষকের ঘরেও তখন খাবার মজুদ থাকতো না। চালের দাম হয়ে যেত দ্বিগুণ। কিন্তু এখন জনসংখ্যা দ্বিগুণের বেশি হলেও খাদ্যাভাব নেই। উৎপাদন বেড়েছে অনেক। চালের বাজারও মোটামুটি স্থিতিশীল।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, এবছর তাদের জমিতে আশাতীত ফলন হয়েছে। কারো কারো জমিতে ক্বদাচিৎ পোকার আক্রমণ হলেও সামগ্রিকভাবে এবার সারা জেলাতেই বাম্পার ফলন হয়েছে। কারণ এবছর দফায় দফায় বৃষ্টি হবার কারণে কারো জমিতেই সম্পূরক সেচ দেয়ার প্রয়োজন হয়নি। যে কারণে জমি সবসময়ই রসালো ছিল। আমন ফসল এবার অনুকূল পরিবেশ পেয়েছে। আর সেই কারণেই ভাল ফলন হয়েছে। কিশোরগঞ্জের প্রধান ফসল বোরো হলেও দ্বিতীয় সর্বাধিক ধান উৎপাদন হয় রোপা আমন মৌসুমে। ১৩ উপজেলা নিয়ে গঠিত কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম এবং নিকলী, এই ৪টি উপজেলা পুরোপুরি হাওর অধ্যুষিত। তার পরও কেবল মিঠামইন ছাড়া এবার বাকি ১২ উপজেলাতেই আমনের আবাদ হয়েছে বলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন। এই কৃষি কর্মকর্তা আরো জানান, কিশোরগঞ্জ একটি ‘খাদ্য উদ্বৃত্ত’ জেলা।