ভেঙে গেছে পাঁচ বছরের সাধের সংসার। স্বামীর বিরুদ্ধে রাজ্যের অভিযোগ তুলে সন্তান নিয়ে আলাদা হয়ে গেছেন কণ্ঠশিল্পী সালমা। তবে বুকের ভেতর দানা দানা কষ্ট। প্রায়ই বের হচ্ছে কান্না হয়ে। তেমন কথা বলছেন না, চেষ্টা করছেন নিজেকে সামলে উঠার।
এর মধ্যেই সামান্য কিছু সময় দেন সালমা। সেটাও মুখোমুখি নয়, মোবাইল ফোনে। ভেঙে যাওয়া সংসারের কথা বলতে গিয়ে ডুকরে ডুকতে কেঁদে উঠছিলেন তিনি। ভাঙা গলায় কিছু কথা বোঝা গেছে, কিছু আবার একেবারেই বোঝার উপায় নেই।
এই কথোপকথনে সালমার যে কথাটি স্পষ্ট সেটি হলো, চার বছরের সন্তান স্নেহাকে নিয়েই এখন বেশি চিন্তিত এক সময়ের ক্লোজআপ ওয়ান তারকা।
ছোট্ট বয়সে বড় তারকা হয়েছিলেন সামলা। টেলিভিশনে গানের প্রতিযোগিতা তাকে এনে দিয়েছিল রাজ্যের খ্যাতি। কিশোরী সালমাকে নিয়ে গণমাধ্যম রচনা করেছে শত শত লেখা।
২০০৬ সালে ক্লোজআপ ওয়ান তারকা হওয়ার তিন বছরের মধ্যেই বিয়ে হয়ে যায় সালমার। ২০০৯ সালে দিনাজপুরে একটি অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়েই পরিচয় হয় শিবলী সাদিকের সঙ্গে। দুই বছর পর পারিবারিকভাবে হয় বিয়ে। এরও এক বছর পর কোল জুড়ে আসে সন্তান।
স্বামী-সন্তান নিয়ে সালমার সুখের সংসারের কামনা ছিল লাখো ভক্তদের মধ্যে। কিন্তু হঠাৎ বজ্রপাতের মতোই আসে তাদের বিচ্ছেদের খবর। তারকাদের নিয়ে এমন গুঞ্জন উঠে প্রায়ই। তবে সঙ্গে আলাপচারিতায় সালমা বলেন, গুঞ্জন নয় সত্য। বিচ্ছেদ হয়ে গেছে আনুষ্ঠানিকভাবেই।
আগের দিন সালমার এই বিচ্ছেদের খবর সর্বাধিক পঠিত সংবাদের মধ্যেই ছিল শীর্ষস্থানীয় সব সংবাদ মাধ্যমে। পরদিনও তাকে নিয়ে কথা থামছে না। তাই আবারও সালমার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা।
বেশ কয়েকবার ফোন দেয়ার পরও ধরেননি সালমা। পরে সময় করে নিজেই ফোন দিলেন। বললেন তার দুঃখের কাহিনি। বিষন্ন কণ্ঠে বললেন, তিনি ক্লান্ত, বিশ্রাম চান।
একটি বাক্যেই সালমা বোঝাতে চাইলেন তার যন্ত্রণা। বলেন, ‘আমার জীবনে যে বড় ঝড় বয়ে গেলো।’
কান্নার মাঝে খানিকটা সময় চুপ করে থেকে সালমা বলেন, ‘দেশবাসীর কাছে বলতে চাই আমি কোন অন্যায় করিনি। আমার পাশে থাকবেন আপনারা।’
সালমা বললেন, সংসার বাঁচাতে অনেক চেষ্টাই করেছেন তিনি। ছেড়ে দিয়েছেন গানের জগতও। কিন্তু এখন তার বেঁচে থাকার অবলম্বন আর স্বপ্নের সারথী চার বছরের কন্যা স্নেহা আর সুরের ভূবন। দুটি নিয়েই বাঁচতে চান তিনি।
নতুন করে কাউকে নিয়ে জীবন শুরু করার কি দূরতম কোনো পরিকল্পনা আছে? জানতে চাইলে একবাক্যে উড়িয়ে দেন সে কথা। বললেন, ‘আর বিয়ে করতে চাই না। বাকি জীবন একাই থাকতে চাই। আমার এখন ধ্যান জ্ঞ্যান বেচেঁ থাকা মেয়ে স্নেহাকে নিয়ে।’
ছোট্ট স্নেহা যেন স্নেহ থেকে বঞ্চিত না হয়, সেটাই অগ্রাধিকার-জানিয়ে দিলেন সালমা।