ঢাকা ০১:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরকারের সমঝোতা প্রস্তাব অনড় বিএনপি, জামায়াত

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৩৮:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ নভেম্বর ২০২৫
  • ৩০ বার

জুলাই সনদ ঘিরে চলমান রাজনৈতিক মতানৈক্য কাটাতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগসহ নেওয়া হয়েছে অনানুষ্ঠানিক নানা উদ্যোগ। বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে সনদকেন্দ্রিক দূরত্ব কমাতে দেওয়া হয়েছে একাধিক প্রস্তাবও। তবে গতকাল পর্যন্ত দলগুলোর অনড় অবস্থানের কারণে এখনও আলোর মুখ দেখেনি সরকারের কোনো পদক্ষেপ। সরকার ও দলগুলোর একাধিক ঘনিষ্ঠ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিএনপি ও জামায়াতের একাধিক নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, গণভোট ইস্যুতে ছাড় দিলে তাদের রাজনীতি মাঠে মারা যাবে। ফলে এসব বিষয়ে সরকারের কোনো প্রস্তাবে সম্মত হওয়ার আগে দলীয় ফোরামে চূড়ান্ত বিশ্লেষণ করেই মতামত জানানো হবে। তবে সরকারের উদ্যোগে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। এদিকে এনসিপি নেতারা বলছেন, যেকোনো মূল্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হোক তা তারা নিশ্চিত করতে চান। এ ক্ষেত্রে সরকার কোনো পদক্ষেপের কারণে দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা হলে তাদের কোনো আপত্তি থাকবে না। আপাতত তারা বলকে সরকারের কোর্টেই দেখছেন। এখন সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয় তা দেখার অপেক্ষায়।

প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে মধ্য ফেব্রুয়ারিতে কাজ শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আর মেয়াদ শেষ হয় ৩১ অক্টোবর। কমিশনের সদস্যরা মঙ্গলবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তাদের সুপারিশমালা কমিশনের সভাপতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে তুলে দেন। সেখানে বলা হয়েছে, সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে। তবে গণভোট কবে হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। সরকার সিদ্ধান্ত নেবে গণভোট কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে, নাকি আগে হবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদ বাস্তবায়নের যে সুপারিশমালা সরকারের কাছে জমা দিয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য বলেছে বিএনপি। দলটি বলছে, ঐকমত্য কমিশন এবং সরকারের কার্যক্রমে তারা হতাশ।

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি এবং গণভোটের সময় নিয়ে যে রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তা নিরসনে পরিষদের সিদ্ধান্তে দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টারা।

সরকারের একটি সূত্র জানায়, বিএনপি ১৫টি সংস্কারে নোট অব ডিসেন্ট দিলেও দলটিকে পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন পদ্ধতিতে আপত্তি তুলে নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। জামায়াতকে নির্বাচনের আগে গণভোট এবং নিম্নকক্ষে পিআরের দাবি ছাড়তে অনুরোধ করা হয়েছে। বিএনপির দিক থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে—উচ্চকক্ষে পিআরের বিষয়টি তারা পর্যালোচনা করবেন। তবে জামায়াতকে নির্বাচনের আগে গণভোট এবং নিম্নকক্ষে পিআরের দাবি প্রকাশ্যে ত্যাগ করতে হবে।  জামায়াতের দিক থেকে জানানো হয়েছে, বিএনপি সনদ অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন এবং আসন্ন সংসদ নির্বাচনে পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন মেনে নিলে তারা সমঝোতায় রাজি আছে।

এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সরকারের তৎতপরতা সম্পর্কে খোলাসা কিছু বলেননি। তিনি বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে উপদেষ্টা পরিষদে এ রকম কোনো আলোচনা হয়নি। হয়তো ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে দলগুলোর সঙ্গে আলাপ হতে পারে। এর বাইরে আমি কিছু জানি না।

সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে জামায়াত কোনো সাড়া দিয়েছে কি না জানতে চাইলে দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ.এইচ.এম হামিদুর রহমান আযাদ সময়ের আলোকে বলেন, সরকার বিভিন্নভাবে আলাপ করছে। তাদের প্রস্তাবে রাজি আছি যদি গণভোট জাতীয় নির্বাচনের আগে আয়োজন করা হয়। এ দাবিতে আমরা অনড় আছি। এখানে ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। গণভোটে ছাড় দিলে সনদই হবে না। কারণ বিএনপির মতলব খারাপ বলেই তারা ভোটের দিনে গণভোট চায়। তিনি বলেন, এখন দায়িত্ব সরকারের। তারা যাতে নতজানু না হয়ে কোনো দলের পক্ষে কাজ না করে। রাষ্ট্র সংস্কার তাদের মূল প্রতিশ্রুতি।

বিএনপিকে দোষারোপ করে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে বিএনপি যে পরিস্থিতি তৈরি করছে, সেটি অনাকাক্সিক্ষত। জাতীয় নির্বাচনের আগমুহূর্তে বিএনপির তৈরি রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও উত্তাপ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে।

চলমান সংকট প্রসঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারি সময়ের আলোকে বলেন, সরকার সমঝোতার চেষ্টা করছে। বিএনপি ও জামায়াত এক জায়গায় চলে এলে অবশ্যই তা ভালো। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হলেই আমরা খুশি। জুলাই সনদ কার্যক্ররের আদেশ জারি করতে হবে সরাসরি প্রধান উপদেষ্টার স্বাক্ষরে। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর আমরা মানব না। তিনি বলেন, নোট অব ডিসেন্ট সব সন্নিবেশিত করতে হবে; ব্যাপারটা তা নয়। সবাই সব বিষয়ে একমত হবে না, এটিই স্বাভাবিক। যেগুলোতে ঐকমত্য হয়েছে সনদে তা থাকলেই হবে।

এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন সময়ের আলোকে বলেন, সরকার কি আদেশ দেয় তার অপেক্ষায় আছি। আমরা মনে করি সরকার দ্রুতই জুলাই সনদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। গণভোট একই দিনে করতে চাইলে অনেক চাপ হয়ে যাবে। আগে করলে সুবিধা হলো গণভোটের রায়ের ভিত্তিতে সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া যাবে। তবে এটি নিয়ে আমরা খুব একটা উদ্বিগ্ন নই। দলের নির্বাচন প্রস্তুতি নিয়ে তিনি বলেন, প্রথমত আমরা নিজেরা নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে চাই। সেটি হতে পারলে সবচেয়ে বেস্ট হবে। আর যদি জোটই করতে হয়, আমরা তাদের সঙ্গে করব যারা রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের মনমানসিকতা আছে।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু সময়ের আলোকে বলেন, আমরা চাই সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট চাই। এখানে ছাড় দেওয়া মানে হেরে যাওয়া। সবকিছুতে ছাড় দিলে কিছু থাকে না। দেখি সরকার কি সিদ্ধান্ত নেয়। সরকারের অবস্থান দেখে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব। দলের নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যে মনোনয়ন তালিকা প্রকাশ করা হতে পারে। শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে। বলা যায় আমাদের নির্বাচনি কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়েছে। মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারা নির্বাচনি মাঠে কাজ করছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সরকারের সমঝোতা প্রস্তাব অনড় বিএনপি, জামায়াত

আপডেট টাইম : ১০:৩৮:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ নভেম্বর ২০২৫

জুলাই সনদ ঘিরে চলমান রাজনৈতিক মতানৈক্য কাটাতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগসহ নেওয়া হয়েছে অনানুষ্ঠানিক নানা উদ্যোগ। বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে সনদকেন্দ্রিক দূরত্ব কমাতে দেওয়া হয়েছে একাধিক প্রস্তাবও। তবে গতকাল পর্যন্ত দলগুলোর অনড় অবস্থানের কারণে এখনও আলোর মুখ দেখেনি সরকারের কোনো পদক্ষেপ। সরকার ও দলগুলোর একাধিক ঘনিষ্ঠ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিএনপি ও জামায়াতের একাধিক নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, গণভোট ইস্যুতে ছাড় দিলে তাদের রাজনীতি মাঠে মারা যাবে। ফলে এসব বিষয়ে সরকারের কোনো প্রস্তাবে সম্মত হওয়ার আগে দলীয় ফোরামে চূড়ান্ত বিশ্লেষণ করেই মতামত জানানো হবে। তবে সরকারের উদ্যোগে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। এদিকে এনসিপি নেতারা বলছেন, যেকোনো মূল্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হোক তা তারা নিশ্চিত করতে চান। এ ক্ষেত্রে সরকার কোনো পদক্ষেপের কারণে দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা হলে তাদের কোনো আপত্তি থাকবে না। আপাতত তারা বলকে সরকারের কোর্টেই দেখছেন। এখন সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয় তা দেখার অপেক্ষায়।

প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে মধ্য ফেব্রুয়ারিতে কাজ শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আর মেয়াদ শেষ হয় ৩১ অক্টোবর। কমিশনের সদস্যরা মঙ্গলবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তাদের সুপারিশমালা কমিশনের সভাপতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে তুলে দেন। সেখানে বলা হয়েছে, সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে। তবে গণভোট কবে হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। সরকার সিদ্ধান্ত নেবে গণভোট কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে, নাকি আগে হবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদ বাস্তবায়নের যে সুপারিশমালা সরকারের কাছে জমা দিয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য বলেছে বিএনপি। দলটি বলছে, ঐকমত্য কমিশন এবং সরকারের কার্যক্রমে তারা হতাশ।

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি এবং গণভোটের সময় নিয়ে যে রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তা নিরসনে পরিষদের সিদ্ধান্তে দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টারা।

সরকারের একটি সূত্র জানায়, বিএনপি ১৫টি সংস্কারে নোট অব ডিসেন্ট দিলেও দলটিকে পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন পদ্ধতিতে আপত্তি তুলে নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। জামায়াতকে নির্বাচনের আগে গণভোট এবং নিম্নকক্ষে পিআরের দাবি ছাড়তে অনুরোধ করা হয়েছে। বিএনপির দিক থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে—উচ্চকক্ষে পিআরের বিষয়টি তারা পর্যালোচনা করবেন। তবে জামায়াতকে নির্বাচনের আগে গণভোট এবং নিম্নকক্ষে পিআরের দাবি প্রকাশ্যে ত্যাগ করতে হবে।  জামায়াতের দিক থেকে জানানো হয়েছে, বিএনপি সনদ অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন এবং আসন্ন সংসদ নির্বাচনে পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন মেনে নিলে তারা সমঝোতায় রাজি আছে।

এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সরকারের তৎতপরতা সম্পর্কে খোলাসা কিছু বলেননি। তিনি বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে উপদেষ্টা পরিষদে এ রকম কোনো আলোচনা হয়নি। হয়তো ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে দলগুলোর সঙ্গে আলাপ হতে পারে। এর বাইরে আমি কিছু জানি না।

সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে জামায়াত কোনো সাড়া দিয়েছে কি না জানতে চাইলে দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ.এইচ.এম হামিদুর রহমান আযাদ সময়ের আলোকে বলেন, সরকার বিভিন্নভাবে আলাপ করছে। তাদের প্রস্তাবে রাজি আছি যদি গণভোট জাতীয় নির্বাচনের আগে আয়োজন করা হয়। এ দাবিতে আমরা অনড় আছি। এখানে ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। গণভোটে ছাড় দিলে সনদই হবে না। কারণ বিএনপির মতলব খারাপ বলেই তারা ভোটের দিনে গণভোট চায়। তিনি বলেন, এখন দায়িত্ব সরকারের। তারা যাতে নতজানু না হয়ে কোনো দলের পক্ষে কাজ না করে। রাষ্ট্র সংস্কার তাদের মূল প্রতিশ্রুতি।

বিএনপিকে দোষারোপ করে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে বিএনপি যে পরিস্থিতি তৈরি করছে, সেটি অনাকাক্সিক্ষত। জাতীয় নির্বাচনের আগমুহূর্তে বিএনপির তৈরি রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও উত্তাপ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে।

চলমান সংকট প্রসঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারি সময়ের আলোকে বলেন, সরকার সমঝোতার চেষ্টা করছে। বিএনপি ও জামায়াত এক জায়গায় চলে এলে অবশ্যই তা ভালো। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হলেই আমরা খুশি। জুলাই সনদ কার্যক্ররের আদেশ জারি করতে হবে সরাসরি প্রধান উপদেষ্টার স্বাক্ষরে। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর আমরা মানব না। তিনি বলেন, নোট অব ডিসেন্ট সব সন্নিবেশিত করতে হবে; ব্যাপারটা তা নয়। সবাই সব বিষয়ে একমত হবে না, এটিই স্বাভাবিক। যেগুলোতে ঐকমত্য হয়েছে সনদে তা থাকলেই হবে।

এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন সময়ের আলোকে বলেন, সরকার কি আদেশ দেয় তার অপেক্ষায় আছি। আমরা মনে করি সরকার দ্রুতই জুলাই সনদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। গণভোট একই দিনে করতে চাইলে অনেক চাপ হয়ে যাবে। আগে করলে সুবিধা হলো গণভোটের রায়ের ভিত্তিতে সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া যাবে। তবে এটি নিয়ে আমরা খুব একটা উদ্বিগ্ন নই। দলের নির্বাচন প্রস্তুতি নিয়ে তিনি বলেন, প্রথমত আমরা নিজেরা নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে চাই। সেটি হতে পারলে সবচেয়ে বেস্ট হবে। আর যদি জোটই করতে হয়, আমরা তাদের সঙ্গে করব যারা রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের মনমানসিকতা আছে।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু সময়ের আলোকে বলেন, আমরা চাই সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট চাই। এখানে ছাড় দেওয়া মানে হেরে যাওয়া। সবকিছুতে ছাড় দিলে কিছু থাকে না। দেখি সরকার কি সিদ্ধান্ত নেয়। সরকারের অবস্থান দেখে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব। দলের নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যে মনোনয়ন তালিকা প্রকাশ করা হতে পারে। শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে। বলা যায় আমাদের নির্বাচনি কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়েছে। মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারা নির্বাচনি মাঠে কাজ করছেন।