ঢাকা ০৩:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ৩০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
কিশোরগঞ্জ- হোসেনপুর-কিশোরগঞ্জ সদর, বাজিতপুর ও নিকলী আসন বিএনপির মনোনয়ন স্থগিতে তীব্র অসন্তোষ জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি গণভোট ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য সংসদ গঠন করতে হবে : সালাহউদ্দিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের বিএনপি কৃষকদের হাতকে শক্তিশালী করবে সর্বমহলেই তারেক রহমানের প্রশংসা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত যুক্তরাজ্যের মন্ত্রীকে প্রধান উপদেষ্টা মুসলমানদের জন্য সুরক্ষিত স্থাপনা চীনা সরকারের আরও ১৪ জেলায় নতুন ডিসি রাজধানী ও আশপাশের জেলায় ১২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন মুরাদ-তাইজুলের ঘূর্ণিতে ইনিংস ও ৪৭ রানে জিতল বাংলাদেশ

আজ খুলে দেওয়া হবে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫১:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫
  • ২০ বার

দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন আজ খুলে দেওয়া হচ্ছে পর্যটকদের জন্য। প্রায় নয় মাস পর সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আবারও পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে এই অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দ্বীপ। তবে পর্যটকদের জন্য নানা শর্তের বেড়াজাল জুড়ে দেওয়ায় আনন্দের মধ্যেও সংশ্লিষ্ট ট্যুর অপারেটরদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা।

কারণ নভেম্বর মাসে পর্যটকরা সেন্টমার্টিনে দিনে গিয়ে দিনে ফিরতে পারবেন, রাতযাপন করতে পারবেন না বলে শর্ত দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকবাহী জাহাজ চালুর পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছেন সংশ্লিষ্ট অপারেটররা। ফলে দ্বীপে ভ্রমণের আনুষ্ঠানিক অনুমতি মিললেও বাস্তবে পর্যটন মৌসুম শুরু হচ্ছে না।

দিনে গিয়ে দিনে ফেরা অবাস্তব শর্ত : ‘সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’-এর সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বলেছেন, কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচলের অনুমতি পেলেও নভেম্বরে যাত্রী পাওয়া যাবে না। কারণ দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা সম্ভব নয়। কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন যেতে ৭-৮ ঘণ্টা লাগে। ফলে নভেম্বরে জাহাজ চালানোর কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই।

তিনি আরও জানান, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে যখন পর্যটকদের রাতযাপনের অনুমতি থাকবে, তখনই তারা জাহাজ চালাবেন। গত বছর এই দুই মাসে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করেছিলেন।

ইনানী রুট বন্ধ, কক্সবাজার ঘাট থেকে জাহাজ ছাড়বে : আইনগত বিধিনিষেধের কারণে উখিয়ার ইনানী সৈকত থেকে এবার কোনো জাহাজ ছাড়বে না। পর্যটকবাহী নৌযানগুলো কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে ছাড়বে। জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান বলেন, ১ নভেম্বর থেকে পর্যটক যাতায়াতের জন্য দুটি জাহাজ কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ও বারো আউলিয়া অনুমতি পেয়েছে। তবে পর্যটকদের দিনে গিয়ে দিনে ফিরতে হবে। অনলাইনে টিকেট ও কিউআর কোড যাচাইয়ের মাধ্যমে যাত্রা নিয়ন্ত্রিত হবে।

জেটির কাজ অসম্পূর্ণ, ভোগান্তির আশঙ্কা : অন্যদিকে সেন্টমার্টিন জেটির সংস্কারকাজ এখনও শেষ হয়নি। সাত কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকায় পর্যটকবাহী জাহাজ ঘাটে ভিড়তে পারবে না, এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসএস রহমান ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের প্রতিনিধি মো. আলী হায়দার বলেন, ৭০টি পাইলিংয়ের কাজ প্রায় শেষ। রোলিং ও সিঁড়ির কাজ বাকি আছে। চেষ্টা করছি মৌসুম শুরুর আগেই শেষ করতে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ক্ষতির আশঙ্কা : রাতযাপন নিষিদ্ধ হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন দ্বীপের হোটেল, রেস্তোরাঁ ও দোকান মালিকরা। সেন্টমার্টিন দোকান মালিক সমিতির সহ-সভাপতি নুর মোহাম্মদ বলেন, দুই বছর আগেও মৌসুমে পাঁচ মাস পর্যটকরা দ্বীপে রাতযাপন করতেন। এখন সেই সুযোগ নেই। দোকানে বেচাবিক্রি বন্ধ। ইতিমধ্যে ৬০ থেকে ৭০টি দোকান বন্ধ হয়ে গেছে।

হোটেল-রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি শিবলুল আযম কোরেশী বলেন, পরিবেশ রক্ষার সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু পরিবেশ রক্ষার নামে বিনিয়োগকারীদের পথে বসিয়ে পর্যটন টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। অন্তত অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাতযাপনের অনুমতি দিলে স্থানীয় অর্থনীতি বাঁচত।

কঠোর শর্তে সীমিত পর্যটন : সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত তিন মাস পর্যটকরা দ্বীপ ভ্রমণ করতে পারবেন। তবে নভেম্বরে কেবল দিনের বেলা অবস্থান, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে রাতযাপন অনুমোদিত। প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক দ্বীপে যেতে পারবেন।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জারি করা ১২টি নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে বিআইডব্লিউটিএ ও মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান চলবে না; টিকেট অনলাইনে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে কিনতে হবে; প্রতিটি টিকেটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকতে হবে; সৈকতে আলো জ্বালানো, বারবিকিউ পার্টি, শব্দ সৃষ্টি, মোটরচালিত যান চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং কেয়াবন থেকে ফল সংগ্রহ, সামুদ্রিক প্রাণী বা প্রবালের ক্ষতি, পলিথিন ও একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক বহন নিষিদ্ধ।

প্রশাসনের অবস্থান : জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান বলেন, সেন্টমার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের ১২টি নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন যাত্রায় নিরাপত্তা, টিকেট যাচাই ও পরিবেশ সুরক্ষায় জেলা প্রশাসন প্রস্তুত।

পরিবেশ অধিদফতর কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, জাহাজে ওঠা থেকে দ্বীপ ত্যাগ পর্যন্ত পর্যটকদের আচরণ পর্যবেক্ষণ করা হবে। কোনো অনিয়ম সহ্য করা হবে না।

পর্যটনের নতুন বাস্তবতা : দীর্ঘ নয় মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে দ্বীপ খুললেও নভেম্বরের বাস্তবতা ভিন্ন চিত্র দেখাচ্ছে।

রাতযাপনের অনুমতি না থাকায় পর্যটকদের আগ্রহ কমে গেছে। জাহাজ চালকরাও নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছেন। চূড়ান্তভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে চলেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে জেটি সংস্কার, অনলাইন টিকেটিং ও প্রশাসনিক জটিলতা মিলিয়ে সেন্টমার্টিনের মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই দ্বীপজুড়ে নেমেছে অনিশ্চয়তার ছায়া।

কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ বিরতির পর খুলছে সেন্টমার্টিন। কিন্তু রাতযাপন নিষিদ্ধ থাকায় পর্যটন মৌসুম কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। পর্যটক, ব্যবসায়ী ও জাহাজ মালিক সব পক্ষই সরকারের কঠোর শর্তে বিপাকে পড়েছে। পরিবেশ রক্ষার প্রয়াসে নেওয়া এই পদক্ষেপ টিকিয়ে রাখবে কি দ্বীপের পর্যটন এ প্রশ্নই এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

কিশোরগঞ্জ- হোসেনপুর-কিশোরগঞ্জ সদর, বাজিতপুর ও নিকলী আসন বিএনপির মনোনয়ন স্থগিতে তীব্র অসন্তোষ

আজ খুলে দেওয়া হবে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন

আপডেট টাইম : ১০:৫১:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫

দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন আজ খুলে দেওয়া হচ্ছে পর্যটকদের জন্য। প্রায় নয় মাস পর সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আবারও পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে এই অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দ্বীপ। তবে পর্যটকদের জন্য নানা শর্তের বেড়াজাল জুড়ে দেওয়ায় আনন্দের মধ্যেও সংশ্লিষ্ট ট্যুর অপারেটরদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা।

কারণ নভেম্বর মাসে পর্যটকরা সেন্টমার্টিনে দিনে গিয়ে দিনে ফিরতে পারবেন, রাতযাপন করতে পারবেন না বলে শর্ত দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকবাহী জাহাজ চালুর পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছেন সংশ্লিষ্ট অপারেটররা। ফলে দ্বীপে ভ্রমণের আনুষ্ঠানিক অনুমতি মিললেও বাস্তবে পর্যটন মৌসুম শুরু হচ্ছে না।

দিনে গিয়ে দিনে ফেরা অবাস্তব শর্ত : ‘সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’-এর সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বলেছেন, কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচলের অনুমতি পেলেও নভেম্বরে যাত্রী পাওয়া যাবে না। কারণ দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা সম্ভব নয়। কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন যেতে ৭-৮ ঘণ্টা লাগে। ফলে নভেম্বরে জাহাজ চালানোর কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই।

তিনি আরও জানান, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে যখন পর্যটকদের রাতযাপনের অনুমতি থাকবে, তখনই তারা জাহাজ চালাবেন। গত বছর এই দুই মাসে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করেছিলেন।

ইনানী রুট বন্ধ, কক্সবাজার ঘাট থেকে জাহাজ ছাড়বে : আইনগত বিধিনিষেধের কারণে উখিয়ার ইনানী সৈকত থেকে এবার কোনো জাহাজ ছাড়বে না। পর্যটকবাহী নৌযানগুলো কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে ছাড়বে। জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান বলেন, ১ নভেম্বর থেকে পর্যটক যাতায়াতের জন্য দুটি জাহাজ কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ও বারো আউলিয়া অনুমতি পেয়েছে। তবে পর্যটকদের দিনে গিয়ে দিনে ফিরতে হবে। অনলাইনে টিকেট ও কিউআর কোড যাচাইয়ের মাধ্যমে যাত্রা নিয়ন্ত্রিত হবে।

জেটির কাজ অসম্পূর্ণ, ভোগান্তির আশঙ্কা : অন্যদিকে সেন্টমার্টিন জেটির সংস্কারকাজ এখনও শেষ হয়নি। সাত কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকায় পর্যটকবাহী জাহাজ ঘাটে ভিড়তে পারবে না, এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসএস রহমান ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের প্রতিনিধি মো. আলী হায়দার বলেন, ৭০টি পাইলিংয়ের কাজ প্রায় শেষ। রোলিং ও সিঁড়ির কাজ বাকি আছে। চেষ্টা করছি মৌসুম শুরুর আগেই শেষ করতে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ক্ষতির আশঙ্কা : রাতযাপন নিষিদ্ধ হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন দ্বীপের হোটেল, রেস্তোরাঁ ও দোকান মালিকরা। সেন্টমার্টিন দোকান মালিক সমিতির সহ-সভাপতি নুর মোহাম্মদ বলেন, দুই বছর আগেও মৌসুমে পাঁচ মাস পর্যটকরা দ্বীপে রাতযাপন করতেন। এখন সেই সুযোগ নেই। দোকানে বেচাবিক্রি বন্ধ। ইতিমধ্যে ৬০ থেকে ৭০টি দোকান বন্ধ হয়ে গেছে।

হোটেল-রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি শিবলুল আযম কোরেশী বলেন, পরিবেশ রক্ষার সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু পরিবেশ রক্ষার নামে বিনিয়োগকারীদের পথে বসিয়ে পর্যটন টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। অন্তত অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাতযাপনের অনুমতি দিলে স্থানীয় অর্থনীতি বাঁচত।

কঠোর শর্তে সীমিত পর্যটন : সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত তিন মাস পর্যটকরা দ্বীপ ভ্রমণ করতে পারবেন। তবে নভেম্বরে কেবল দিনের বেলা অবস্থান, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে রাতযাপন অনুমোদিত। প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক দ্বীপে যেতে পারবেন।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জারি করা ১২টি নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে বিআইডব্লিউটিএ ও মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান চলবে না; টিকেট অনলাইনে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে কিনতে হবে; প্রতিটি টিকেটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকতে হবে; সৈকতে আলো জ্বালানো, বারবিকিউ পার্টি, শব্দ সৃষ্টি, মোটরচালিত যান চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং কেয়াবন থেকে ফল সংগ্রহ, সামুদ্রিক প্রাণী বা প্রবালের ক্ষতি, পলিথিন ও একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক বহন নিষিদ্ধ।

প্রশাসনের অবস্থান : জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান বলেন, সেন্টমার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের ১২টি নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন যাত্রায় নিরাপত্তা, টিকেট যাচাই ও পরিবেশ সুরক্ষায় জেলা প্রশাসন প্রস্তুত।

পরিবেশ অধিদফতর কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, জাহাজে ওঠা থেকে দ্বীপ ত্যাগ পর্যন্ত পর্যটকদের আচরণ পর্যবেক্ষণ করা হবে। কোনো অনিয়ম সহ্য করা হবে না।

পর্যটনের নতুন বাস্তবতা : দীর্ঘ নয় মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে দ্বীপ খুললেও নভেম্বরের বাস্তবতা ভিন্ন চিত্র দেখাচ্ছে।

রাতযাপনের অনুমতি না থাকায় পর্যটকদের আগ্রহ কমে গেছে। জাহাজ চালকরাও নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছেন। চূড়ান্তভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে চলেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে জেটি সংস্কার, অনলাইন টিকেটিং ও প্রশাসনিক জটিলতা মিলিয়ে সেন্টমার্টিনের মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই দ্বীপজুড়ে নেমেছে অনিশ্চয়তার ছায়া।

কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ বিরতির পর খুলছে সেন্টমার্টিন। কিন্তু রাতযাপন নিষিদ্ধ থাকায় পর্যটন মৌসুম কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। পর্যটক, ব্যবসায়ী ও জাহাজ মালিক সব পক্ষই সরকারের কঠোর শর্তে বিপাকে পড়েছে। পরিবেশ রক্ষার প্রয়াসে নেওয়া এই পদক্ষেপ টিকিয়ে রাখবে কি দ্বীপের পর্যটন এ প্রশ্নই এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।