এবার ‘ইন্টারঅ্যাক্টিভ ডিজিটাল বুক’ তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ট্যাবে বন্দি এই বই হাতে পাবে।
বইয়ের কঠিন শব্দ, বাক্য, জটিল বিষয় সহজভাবে বোঝানোর জন্য শব্দার্থ, ব্যাখ্যা, এনিমেশনসহ প্রয়োজনীয় ভিডিও যুক্ত করা হয়েছে। ক্লিক করলেই হাইপার লিঙ্কের মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য পাবে শিক্ষার্থীরা।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এ কে এম ছায়েফ উল্যা বাংলানিউজকে বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণির কুরআন মজিদ, আকাইদ ও ফিকহ্, আরবি প্রথম ও আরবি
দ্বিতীয় পত্র- এ চারটি বই ‘ইন্টারঅ্যাক্টিভ ডিজিটাল’ ভার্সন তৈরি করা হবে। এজন্য প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রণীত সাধারণ শিক্ষার প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তকগুলো ডিজিটাল ভার্সনে (ই-বুক) রূপান্তর করেছে। তবে মাদ্রাসা শিক্ষার কোনো বইয়ের ডিজিটাল ভার্সন নেই।
এনসিটিবি চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র পাল বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষায় প্রথমবারের মতো চারটি বই ডিজিটাল করা হচ্ছে।
‘ইন্টারঅ্যাক্টিভ ডিজিটাল বুক’ নিয়ে কনটেন্ট তৈরি করেছেন মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের প্রকাশনা নিয়ন্ত্রক মো. শাহজাহান।
তিনি বলেন, ‘ইন্টারঅ্যাক্টিভ ডিজিটাল বুক’ বলতে পাঠ্যপুস্তকের ডিজিটাল ভার্সন বোঝায় যা অনলাইন বা অফলাইনে কম্পিউটার, ট্যাব,
মোবাইল ফোনে পড়া যাবে।
‘কাগজে ছাপানো পাঠ্যপুস্তকের শব্দ, বাক্য, প্রক্রিয়া, ধারণা- সবই এতে পাওয়া যাবে; তবে তা আকর্ষণীয়, সহজবোধ্য ও জীবনঘনিষ্ঠ করে উপস্থাপিত হবে।
জাতীয় প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে ছবি, চিত্র, ডায়াগ্রাম, অডিও, এনিমেশন, ভিডিওসহ মাল্টিমিডিয়া উপকরণসমূহ হাইপার লিঙ্কের মাধ্যমে সংযোজিত থাকবে।’
এসব কাজে সহযোগিতা করবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই (এক্সেস টু ইনফরমেশন) প্রকল্প।
ইন্টারঅ্যাক্টিভ ডিজিটাল বইয়ে শিক্ষার্থীদেরকে সক্রিয় এবং মুখস্তবিদ্যা পরিহার করতে সাহায্য করবে বলে জানান মাদ্রাসা বোর্ডের এই কর্মকর্তা।
বইয়ে শিক্ষার্থীদের মনে ভীতি কিংবা কোন ধর্মের প্রতি বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হতে পারে এমন প্রসঙ্গ থাকবে না।
এর আগে বিভিন্ন সময় ২০১৬ সালে ষষ্ঠ শ্রেণির সব শিক্ষার্থীদের হাতে ট্যাব তুলে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এ কে এম ছায়েফ উল্যা জানান, চারটি বইয়ের স্ক্রিপ্ট তৈরির জন্য প্রযুক্তি দক্ষ ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ/ইনস্টিটিউটের অভিজ্ঞ আলেম-শিক্ষকদের দায়িত্ব দেওয়া হবে।
স্ক্রিপ্ট তৈরির পর উচ্চ পর্যায়ের পাঠ্যক্রম কো-অর্ডিনেশন কমিটির কাছে উপস্থাপন করা হবে, যাতে বিষয়বস্তুর সঙ্গে ধর্মীয় কোনো বিতর্ক সৃষ্টি না হয়।
প্রথম পর্যায়ে দাখিল স্তরের ষষ্ঠ শ্রেণির চারটি এবং সাধারণ শিক্ষার অন্য ১২টি বই নিয়ে ইন্টারঅ্যাক্টিভ বই তৈরির কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা।
ক্রমান্বয়ে সপ্তম, অষ্টম এবং নবম-দশম শ্রেণির বইও ইন্টারঅ্যাক্টিভ ডিজিটালাইজড করা হবে।