আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৪ আসনে ১ ডজন প্রার্থী ১৩ তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন কে সামনে রেখে মাঠে নেমেছেন। জেলার ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম নিয়ে কিশোরগঞ্জ ৪ আসনটি। এটি মূলত আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। বিএনপি, জামাত, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সহ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এ আসনটি দখল করার লক্ষ্যে সভা-সমাবেশ, সামাজিক অনুষ্ঠান এবং ব্যানার-পোস্টারে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছেন।
কেবল বিএনপি’র আধা ডজনের ও বেশি প্রার্থী নির্বাচনী প্রচারণা কাজ শুরু করেছেন। চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মোহাম্মদ শাহীন রেজা চৌধুরী কোন দলের না হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে নামায় সব চেয়ে বেশি তিনি আলোচনায় রয়েছেন।
কিশোরগঞ্জ ৪ আসনটি মূলত এডভোকেট আব্দুল হামিদের ঘাটি। তিনি রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তার ছেলে রেজাউন আহমেদ তৌফিক আসনটি দখল করেন। ছাত্র জনতার আন্দোলনের পর বাপ বেটা এলাকা ছেড়ে ঘা ঢাকা দিয়েছেন। ফলে অনেক নেতা আশায় বুক বেঁধেছেন এই আসনটি দখল করার। ইতিমধ্যে বিএনপির আধা-ডজনের ও বেশি নেতা দলীয় মনোনয়নের আশায় রয়েছেন। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে এখনো আলোচিত বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মো.ফজলুর রহমান তিনি আশাবাদী রয়েছেন মনোনয়নের। এছাড়াও কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্র দলের প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক ও
সাবেক সভাপতি আরেক এডভোকেট ফজলুর রহমান শিকদার বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন। এছাড়াও অবসরপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম মোল্লা ,বিএনপিপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ
-ড্যাবের নেতা ও সাবেক এমপি ফরহাদ আহমেদ কাঞ্চনের ছেলে অধ্যাপক ডা.ফেরদৌস আহমেদ লাকী,হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট সুরঞ্জন ঘোষ, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আমিনুল ইসলাম রতন, বুয়েট ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি প্রকৌশলী মো.নেছার উদ্দিন খান, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসভাপতি মো.হাফিজুল্লাহ হিরা, অষ্টগ্রাম উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও তিন
বারের নির্বাচিত অষ্টগ্রাম সদর ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ ফাইয়াজ হাসান বাবু। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের
সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্র কল্যাণ সম্পাদক ও জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার আইন বিভাগীয় সেক্রেটারী এডভোকেট মো.রোকন রেজা শেখকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। এছাড়াও খেলাফত মজলিসের মাওলানা অলিউর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এডভোকেট বিল্লাল আহমেদ মজুমদার ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের প্রার্থী হয়েছেন শায়খ মাওলানা আনোয়ারুল ইসলাম। এনসিপি দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক আকরাম হোসেন রাজ নির্বাচনে আসার ও সম্ভাবনা রয়েছে। বিভিন্ন ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে আলোচিত এডভোকেট ফজলুর রহমান এখন ও বিএনপির মনোনয়ন পাওয়ার জন্য দৌড়ঝাপ চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে ফজলুর রহমানের পদ স্থগিত করায় বিএনপিতে অভ্যন্তরীণ কোন্দল দেখা দিয়েছে।
ফজলুর রহমান বিএনপির মনোনয়ন পেলে কয়েকজন মনোনয়ন প্রত্যাশী বিদ্রোহ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করতে পারেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। এ আসনটি যেহেতু আওয়ামী লীগের ঘাঁটি তাই ইসলামী দলের প্রার্থী একক ভাবে এসে চমক দেখাতে পারবেন না নিশ্চিত। তবে ইসলামী দল গুলো জোটে মনোনয়ন পেলে ওই আসন থেকে সুবিধা পেতে পারেন জামায়াতের প্রার্থী এডভোকেট রোকন রেজা শেখ অথবা এডভোকেট বিল্লর মজুমদার। এ আসনে আওয়ামী লীগের
প্রচুর ভোট রয়েছে। সেই ভোটের কারণে অনেক প্রার্থীর হিসাব-নিকাশ উলট-পালট হয়ে যেতে পারে। মনোনয়ন
প্রত্যাশী এডভোকেট ফজলুর রহমান বলেন, ‘গত নির্বাচনে ষড়যন্ত্র ও জুলুমের শিকার হয়েছি। এবার আশা করছি
বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেলে ধানের শীষে জয়ী হবো।’
ডা.ফেরদৌস আহমেদ লাকী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় গণসংযোগ করেছি। পরিবার এবং আমার অবদানের ভিত্তিতেই মনোনয়ন চাইবো। তবে বিএনপি অন্য কাউকে দিলে তার পক্ষেও কাজ করবো। সৈয়দ ফাইয়াজ হাসান বাবু বলেন, ‘১৯৯৫ সালে ছাত্রদলের রাজনীতি শুরু করি।
বিভিন্ন প্রলোভন উপেক্ষা করে বিএনপিতে থেকেছি। ২০১৬ সালে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচনে ফ্যাসিবাদের হস্তক্ষেপে ভোট বয়কট করতে হয়েছিল। আশা করি, দল এইসব বিষয় বিবেচনা করে আমাকে মনোনয়ন দিবেন। অপরদিকে জামায়াতের প্রার্থী রোকন রেজা শেখ বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী সব সময়ই মানুষের কল্যাণে কাজ করছে। নির্বাচন সামনে রেখে আমরা ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে সক্রিয়ভাবে প্রচারণা চালাচ্ছি। আশা করি জনগণ এবার সঠিক নেতা নির্বাচিত করবেন।
যাতে দেশে ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম হয়। প্রকৌশলী মোহাম্মদ নেছার উদ্দিন খান বলেন, আমার বাবা ছিলেন প্রখ্যাত আলেম। আমি বহু বছর ধরে বিএনপির আদর্শে রাজনীতি করে আসছি মিঠামইন, ইটনা ও অষ্টগ্রামের মানুষ আমার প্রতি যথেষ্ট আন্তরিক রয়েছেন। বিএনপির মানোনয় পেলে নির্বাচন করবো। অন্যদিকে সুরঞ্জন ঘোষ পূর্বের নির্বাচন গুলোতে ও বিএনপি’র মানোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। এবার তিনি মাঠে-ঘাটে নির্বাচনী প্রচারণা কাজ করে চলেছেন। এডভোকেট ফজলুর রহমান শিকদার ও বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন বলে তিনি সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে ঘোষণা দিয়েছেন। এনসিপির নেতা আকরাম হোসেন রাজ বলেন ছাত্র জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। ঐ সরকারের আমলে মানুষের অধিকার ছিল না। আমরা অধিকার ফিরিয়ে এনেছি। ভোটারদের ভোটে এনসিপি থেকে নির্বাচিত হয়ে শুধু মানুষের কল্যাণে কাজ করবো। আগামী নির্বাচন কে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ নেতারা ছোটাছুটি করছেন দলীয় মনোনয়ন নেওয়ার জন্য।
এদিকে দেখা গেছে নিজের শক্তিকে পুঁজি করে মাঠে নেমেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী দৃষ্টি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মো.শাহীন রেজা চৌধুরী। তিনি ঐতিহ্যবাহী পরিবারের সন্তান।রাজনীতিতে নতুন হলেও রেজা পরিবার পূর্বকাল থেকেই মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন যেহেতু এই কারনে হয়ত কিছু হবে।
Reporter Name 
























