ঢাকা ০৭:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুলিশের কাছ থেকে শ্রমিক লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিলেন বিএনপি নেতা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:৫৮:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১৮ বার

গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত পোশাকশ্রমিক জুয়েল হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি শ্রমিক লীগ নেতা জালাল উদ্দিন জালুকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত বিএনপি নেতা হলেন ভাওয়ালগড় ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন (৪৫)।

গতকাল শনিবার রাত ৮টার দিকে গাজীপুর সদর উপজেলার শিরিরচালা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অভিযুক্ত বিল্লাল হোসেন সদর উপজেলার জয়দেবপুর থানার শিরিরচালা গ্রামের বাসিন্দা। আসামি জালাল উদ্দিন জালু তার ছোট ভাই। জালাল শ্রীপুর থানা এলাকায় জুয়েল হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।

নিহত জুয়েল ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার সিংদই গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে। তিনি মাওনা উত্তরপাড়া এলাকার আরিফুল ইসলাম সরকারের বাড়িতে ভাড়া থেকে স্থানীয় ক্রাউন সোয়েটার কারখানায় অপরেটর পদে চাকরি করতন।

পুলিশ জানায়, ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় মাওনা (পল্লী বিদ্যুৎ মোড়) এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নিহত হন জুয়েল। এ ঘটনায় তার স্ত্রী জুবেদা আক্তার শ্রীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় জালাল উদ্দিন জালু এজাহারভুক্ত ৯১ নম্বর আসামি। আসামি গ্রামে অবস্থান করছে এমন সংবাদে পুলিশ শিরিরচালা (প্যানটেক্স মোড়) এলাকায় অভিযান চালিয়ে জালাল উদ্দিন জালুকে গ্রেপ্তার করে। ছোট ভাইকে গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে বড় ভাই স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন ও তার কয়েকজন সহযোগী ঘটনাস্থলে আসেন। পরে পুলিশের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করে জোর করে আসামি জালাল উদ্দিন জালুকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

অভিযুক্ত ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। কিছু দুষ্কৃতিকারী আমার বিরুদ্ধে গুজব ছড়াচ্ছে। তবে আমি শুনেছি, আমার ছোট ভাই জালাল উদ্দিন জালুকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না এবং এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’

জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম জানান, আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং জালাল উদ্দিনকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগেও জয়দেবপুর থানায় পুলিশের কাছ থেকে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিয়েছিলেন বিএনপির আরেক নেতা। ওই ঘটনায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয় এবং এই ঘটনায় থানায় একটি মামলা করা হয়।

একই ধরনের ঘটনা বারবার ঘটায় স্থানীয়দের মধ্যে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রম আরও কঠোর ও সুসংগঠিত করার দাবি জানিয়েছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পুলিশের কাছ থেকে শ্রমিক লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিলেন বিএনপি নেতা

আপডেট টাইম : ০৫:৫৮:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত পোশাকশ্রমিক জুয়েল হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি শ্রমিক লীগ নেতা জালাল উদ্দিন জালুকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত বিএনপি নেতা হলেন ভাওয়ালগড় ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন (৪৫)।

গতকাল শনিবার রাত ৮টার দিকে গাজীপুর সদর উপজেলার শিরিরচালা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অভিযুক্ত বিল্লাল হোসেন সদর উপজেলার জয়দেবপুর থানার শিরিরচালা গ্রামের বাসিন্দা। আসামি জালাল উদ্দিন জালু তার ছোট ভাই। জালাল শ্রীপুর থানা এলাকায় জুয়েল হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।

নিহত জুয়েল ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার সিংদই গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে। তিনি মাওনা উত্তরপাড়া এলাকার আরিফুল ইসলাম সরকারের বাড়িতে ভাড়া থেকে স্থানীয় ক্রাউন সোয়েটার কারখানায় অপরেটর পদে চাকরি করতন।

পুলিশ জানায়, ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় মাওনা (পল্লী বিদ্যুৎ মোড়) এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নিহত হন জুয়েল। এ ঘটনায় তার স্ত্রী জুবেদা আক্তার শ্রীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় জালাল উদ্দিন জালু এজাহারভুক্ত ৯১ নম্বর আসামি। আসামি গ্রামে অবস্থান করছে এমন সংবাদে পুলিশ শিরিরচালা (প্যানটেক্স মোড়) এলাকায় অভিযান চালিয়ে জালাল উদ্দিন জালুকে গ্রেপ্তার করে। ছোট ভাইকে গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে বড় ভাই স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন ও তার কয়েকজন সহযোগী ঘটনাস্থলে আসেন। পরে পুলিশের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করে জোর করে আসামি জালাল উদ্দিন জালুকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

অভিযুক্ত ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। কিছু দুষ্কৃতিকারী আমার বিরুদ্ধে গুজব ছড়াচ্ছে। তবে আমি শুনেছি, আমার ছোট ভাই জালাল উদ্দিন জালুকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না এবং এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’

জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম জানান, আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং জালাল উদ্দিনকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগেও জয়দেবপুর থানায় পুলিশের কাছ থেকে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিয়েছিলেন বিএনপির আরেক নেতা। ওই ঘটনায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয় এবং এই ঘটনায় থানায় একটি মামলা করা হয়।

একই ধরনের ঘটনা বারবার ঘটায় স্থানীয়দের মধ্যে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রম আরও কঠোর ও সুসংগঠিত করার দাবি জানিয়েছেন।