ঢাকা ১১:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢেলে সাজানো হয়েছে শিক্ষা প্রশাসন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৪৩:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৭ বার

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী সরকারি অন্যান্য দপ্তরের মতো রদবদল, নতুন পদায়ন ও নিয়োগের মাধ্যমে ঢেলে সাজানো হয়েছে শিক্ষা প্রশাসনের দপ্তরগুলোয়। তবে কর্মকর্তা পরিবর্তনের সঙ্গেই এসব দপ্তরে হয়রানিমুক্ত সেবারও প্রত্যাশা করছেন সেবাগ্রহীতারা। তাদের প্রত্যাশা পূরণে সচেষ্ট থাকবেন বলে জানিয়েছেন নতুন দায়িত্বপ্রাপ্তরা।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পর সারাদেশের শিক্ষক কর্মচারীদের সবচেয়ে বড় কর্মযজ্ঞ পরিচালিত হয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি)। বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যাপক ড. এহতেসাম-উল হককে গতকাল এই দপ্তরের প্রধান (মহাপরিচালক) করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

জানা গেছে, গত ৪ জানুয়ারি চাকরির বয়সসীমা শেষ হওয়ায় অবসরোত্তর ছুটিতে যান মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক এ বি এম রেজাউল করীম। তারপর থেকে পদটি ফাঁকা ছিল।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর ২১ আগস্ট পদত্যাগ করেন মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। তিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন। এরপর রুটিন দায়িত্ব পান অধ্যাপক এ বি এম রেজাউল করীম। পরে তাকে মহাপরিচালক পদে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়।

গতকাল দুপুরে শিক্ষাভবনে দেখা যায়, নতুন মহাপরিচালকে বরণ করে নিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে উৎসাহ ও প্রস্তুতি চলছে। অন্যদিকে প্রতিদিনের মতো চিত্র ভবনের দুই ও তিন তলায় ওয়েটিং সোফায় বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে আগত শিক্ষক-কর্মচারীরা বসে আছেন নানা প্রয়োজনে। খুলনার একটি বেসরকারি উচ্চমাধ্যমিক কলেজে নতুন যোগদান করা প্রভাষক মো. সালাউদ্দিন আমাদের সময়কে বলেন, এমপিওভুক্তির কাগজপত্র স্থানীয় অফিসের মাধ্যমে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু যথাসময়ে এমপিওভুক্তি হয়নি কেন জানতে এসেছি। ঢাকার অদূরে দোহার থেকে সরকারি মাধ্যমিক স্কুলশিক্ষক তাসলিমা আক্তার চিকিৎসার জন্য ছুটির আবেদন নিয়ে এসেছেন। চাকরি থেকে অবসরে যাওয়া অধ্যাপক জিল্লুর হোসেন জানান, কনট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) অফিসের জন্য একটি বেতনের কাগজ নিতে কয়েকবার আসতে হচ্ছে সুদূর কক্সবাজার থেকে। মাউশির হয়রানিমুক্ত সেবাই আমাদের প্রত্যাশা।

মাউশির অর্থ ও ক্রয় উইংয়েও পরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে গতকাল। নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজের গণিতের অধ্যাপক শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা গোপীনাথ পাল এতে পদায়ন পেয়েছেন।

এদিকে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) মহাপরিচালক পদে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক ড. মো. জুলফিকার হায়দার। তিনি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞ ছিলেন।

একই দিন নায়েম-এর উপ-পরিচালক পদে নিয়োগ পেয়েছেন বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো. আবু সাঈদ।

২৮ জানুয়ারি ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক ড. খন্দকার এহসানুল কবির। তিনি যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। পৃথক প্রজ্ঞাপনে ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আবুল বাশারকে প্রেষণ প্রত্যাহার করে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (দায়িত্বহীন) করা হয়েছে। বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পদে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার। তিনি সরকারি তিতুমীর কলেজের অধ্যাপক।

নতুন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার আমাদের সময়কে বলেন, বোর্ডের সেবা প্রদানে মানুষের প্রত্যাশাকে গুরুত্ব দিয়ে দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকব। কীভাবে সেবাপ্রদান আরও সহজ করা যায়, সে বিষয়েও কাজ করব।

২০ জানুয়ারি যশোর, কুমিল্লা, সিলেট ও দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়েছে সরকার। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের এসব কর্মকর্তাকে প্রেষণে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের আদেশে রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. আসমা বেগমকে যশোর শিক্ষা বোর্ড, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ (গণিতের অধ্যাপক) মো. আনোয়ার হোসেন চৌধুরীকে সিলেট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ (ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক) ?মুহা. তৌহিদুল ইসলামকে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। সিলেট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান (গণিতের অধ্যাপক) মো. শামসুল ইসলাম কুমিল্লা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ঢেলে সাজানো হয়েছে শিক্ষা প্রশাসন

আপডেট টাইম : ১০:৪৩:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী সরকারি অন্যান্য দপ্তরের মতো রদবদল, নতুন পদায়ন ও নিয়োগের মাধ্যমে ঢেলে সাজানো হয়েছে শিক্ষা প্রশাসনের দপ্তরগুলোয়। তবে কর্মকর্তা পরিবর্তনের সঙ্গেই এসব দপ্তরে হয়রানিমুক্ত সেবারও প্রত্যাশা করছেন সেবাগ্রহীতারা। তাদের প্রত্যাশা পূরণে সচেষ্ট থাকবেন বলে জানিয়েছেন নতুন দায়িত্বপ্রাপ্তরা।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পর সারাদেশের শিক্ষক কর্মচারীদের সবচেয়ে বড় কর্মযজ্ঞ পরিচালিত হয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি)। বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যাপক ড. এহতেসাম-উল হককে গতকাল এই দপ্তরের প্রধান (মহাপরিচালক) করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

জানা গেছে, গত ৪ জানুয়ারি চাকরির বয়সসীমা শেষ হওয়ায় অবসরোত্তর ছুটিতে যান মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক এ বি এম রেজাউল করীম। তারপর থেকে পদটি ফাঁকা ছিল।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর ২১ আগস্ট পদত্যাগ করেন মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। তিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন। এরপর রুটিন দায়িত্ব পান অধ্যাপক এ বি এম রেজাউল করীম। পরে তাকে মহাপরিচালক পদে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়।

গতকাল দুপুরে শিক্ষাভবনে দেখা যায়, নতুন মহাপরিচালকে বরণ করে নিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে উৎসাহ ও প্রস্তুতি চলছে। অন্যদিকে প্রতিদিনের মতো চিত্র ভবনের দুই ও তিন তলায় ওয়েটিং সোফায় বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে আগত শিক্ষক-কর্মচারীরা বসে আছেন নানা প্রয়োজনে। খুলনার একটি বেসরকারি উচ্চমাধ্যমিক কলেজে নতুন যোগদান করা প্রভাষক মো. সালাউদ্দিন আমাদের সময়কে বলেন, এমপিওভুক্তির কাগজপত্র স্থানীয় অফিসের মাধ্যমে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু যথাসময়ে এমপিওভুক্তি হয়নি কেন জানতে এসেছি। ঢাকার অদূরে দোহার থেকে সরকারি মাধ্যমিক স্কুলশিক্ষক তাসলিমা আক্তার চিকিৎসার জন্য ছুটির আবেদন নিয়ে এসেছেন। চাকরি থেকে অবসরে যাওয়া অধ্যাপক জিল্লুর হোসেন জানান, কনট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) অফিসের জন্য একটি বেতনের কাগজ নিতে কয়েকবার আসতে হচ্ছে সুদূর কক্সবাজার থেকে। মাউশির হয়রানিমুক্ত সেবাই আমাদের প্রত্যাশা।

মাউশির অর্থ ও ক্রয় উইংয়েও পরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে গতকাল। নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজের গণিতের অধ্যাপক শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা গোপীনাথ পাল এতে পদায়ন পেয়েছেন।

এদিকে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) মহাপরিচালক পদে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক ড. মো. জুলফিকার হায়দার। তিনি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞ ছিলেন।

একই দিন নায়েম-এর উপ-পরিচালক পদে নিয়োগ পেয়েছেন বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো. আবু সাঈদ।

২৮ জানুয়ারি ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক ড. খন্দকার এহসানুল কবির। তিনি যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। পৃথক প্রজ্ঞাপনে ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আবুল বাশারকে প্রেষণ প্রত্যাহার করে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (দায়িত্বহীন) করা হয়েছে। বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পদে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার। তিনি সরকারি তিতুমীর কলেজের অধ্যাপক।

নতুন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার আমাদের সময়কে বলেন, বোর্ডের সেবা প্রদানে মানুষের প্রত্যাশাকে গুরুত্ব দিয়ে দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকব। কীভাবে সেবাপ্রদান আরও সহজ করা যায়, সে বিষয়েও কাজ করব।

২০ জানুয়ারি যশোর, কুমিল্লা, সিলেট ও দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়েছে সরকার। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের এসব কর্মকর্তাকে প্রেষণে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের আদেশে রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. আসমা বেগমকে যশোর শিক্ষা বোর্ড, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ (গণিতের অধ্যাপক) মো. আনোয়ার হোসেন চৌধুরীকে সিলেট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ (ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক) ?মুহা. তৌহিদুল ইসলামকে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। সিলেট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান (গণিতের অধ্যাপক) মো. শামসুল ইসলাম কুমিল্লা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।