আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া অমর একুশে বইমেলার আয়তন বাড়ার পাশাপাশি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও বেড়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় বইমেলা-২০২৫ পরিচালনা কমিটি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী শনিবার বিকেল ৩টায় বইমেলার উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
লিখিত বক্তব্যে বইমেলা-২০২৫ পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব সরকার আমিন বলেন, এবারের বইমেলায় মোট ৭০৮টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে ১ হাজার ৮৪ ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গত বছর প্রতিষ্ঠান ছিল ৬৪২টি এবং ইউনিট ছিল ৯৪৬টি। এর মধ্যে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ৯৯টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৬০৯টি প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এবার মোট প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৩৭টি, যার মধ্যে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে একটি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩৬টি। গত বছরও প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৩৭টি ছিল। এবার লিটল ম্যাগাজিন চত্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চের কাছাকাছি গাছতলায় করা হয়েছে। সেখানে ১৩০টি লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মেলার শিশুচত্বরে ৭৪টি প্রতিষ্ঠানকে ১২০ ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গত বছর শিশুচত্বরে ৬৮টি প্রতিষ্ঠানকে ১০৯ ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বইমেলায় বাংলা একাডেমি এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করবে। প্রতিদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে সেমিনার এবং সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বাংলা একাডেমির তিনটি প্যাভিলিয়ন এবং শিশুকিশোর উপযোগী প্রকাশনার বিপণনের জন্য একটি স্টল থাকবে।এবারের বইমেলা বাংলা একাডেমি প্রকাশ করছে নতুন ৪৩টি ও পুনর্মুদ্রিত ৪১টি বই।
সরকার আমিন বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারি ও ১৫ ফেব্রুয়ারি ছাড়া প্রতি শুক্র ও শনিবার মেলায় সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত ‘শিশুপ্রহর’ থাকবে। অমর একুশ উদ্যাপনের অংশ হিসেবে শিশুকিশোর চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি এবং সংগীত প্রতিযোগিতার আয়োজন থাকছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে থাকবে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা।
তিনি বলেন, বইমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ২০২৪ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগতমান বিচারে সেরা বইয়ের জন্য প্রকাশককে ‘চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার’ এবং ২০২৪ সালের বইমেলায় প্রকাশিত বইয়ের মধ্য থেকে শৈল্পিক বিচারে সেরা বই প্রকাশের জন্য তিনটি প্রতিষ্ঠানকে ‘মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ দেওয়া হবে। এ ছাড়া ২০২৪ সালে প্রকাশিত শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগত মান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থের জন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে ‘রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার’ এবং এ বছর মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে স্টলের নান্দনিক সাজসজ্জায় শ্রেষ্ঠ বিবেচিত প্রতিষ্ঠানকে ‘কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন দুপুর ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। রাত সাড়ে ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবেন না। ছুটির দিন বইমেলা চলবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। ২১শে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মেলা শুরু হবে সকাল ৮টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম নানা প্রশ্নের উত্তর দেন। এ সময় বাংলা একাডেমির সচিব মো. সেলিম রেজা, জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) জি এম মিজানুর রহমান ও সহযোগী প্রতিষ্ঠান ড্রিমার ডংকির সিএমও রাকিব হাসান রাজ উপস্থিত ছিলেন।