দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদে হাসিনার পাশে আশরাফই ‘উপযুক্ত’

সভাপতি শেখ হাসিনার পাশে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদে (সাধারণ সম্পাদক) সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকেই উপযুক্ত মনে করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। দলের বেশিরভাগ নেতা আশরাফুল ইসলামের প্রতিই নির্ভর করতে শুরু করছেন। আসন্ন সম্মেলন নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের অধিকাংশই সৈয়দ আশরাফ সম্পর্কে একই মত পোষণ করেছেন।
বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে যেসব কারণে কেন্দ্রীয় নেতারা সৈয়দ আশরাফকে নিরাপদ মনে করেন সেগুলো হল-দুইবারের সাধারণ সম্পাদক হলেও সবসময়ই পর্দার আড়ালে থেকেছেন আশরাফুল ইসলাম। শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। আশরাফ মনে করেছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্ব শক্তিশালী হলে আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হবে, বাংলাদেশ শক্তিশালী হবে।
অারও পড়তে পারেন: ফাঁস হলো ২ লাখের বেশি অফশোর অ্যাকাউন্ট

আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর তিন নেতা অভিন্ন সুরেই বলেছেন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আওয়ামী লীগে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব সুদৃঢ় করেছেন। তিনি অনেক কেন্দ্রীয় নেতাকে নেতৃত্ব অনুসরণ করার পদ্ধতি শিখিয়েছেন।
আসন্ন ২০তম সম্মেলনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই শীর্ষ এ পদ নিয়েই জমে উঠছে আলোচনা। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে ফের দেখতে চান দলের বিভিন্ন পর্যায়ের অধিকাংশ নেতা। তবে এসব নেতা সাধারণ সম্পাদক পদে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের পক্ষে গোপনে যতটা সোচ্চার রাজনৈতিক কারণে প্রকাশ্যে ততটা নন।শীর্ষ নেতাদের অনেকেই বলেন, নাম ছাড়াই লেখেন-আমাদের অনুভূতির কথা। আশরাফ শুধু উপযুক্তই নন, নিরাপদও।

শীর্ষ সারির বেশ কয়েকজন নেতা বলেন, ২০১৯ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে গেলে যেসব পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে আওয়ামী লীগকে এর জন্যে শেখ হাসিনার পাশে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মতো নেতার বেশি প্রয়োজন। ইতোপূর্বে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সৈয়দ আশরাফ শেখ হাসিনার আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছেন।
সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সাংগঠনিক কাজে দলের অনেক নেতা ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ পেলেও দল ও সরকার সংকটে পড়লে শেখ হাসিনার পাশে থেকে আশরাফের ভূমিকার প্রশংসা করেন তারা। অবশ্য, পদটির প্রত্যাশা করেন এমন কয়েকজনের মূল্যায়ন আবার ভিন্ন। পদ-প্রত্যাশী কয়েকজন ছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটির অনেক নেতাই রয়েছেন সৈয়দ আশরাফকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দেখার পক্ষে।
কেন্দ্রীয় কমিটিতে রয়েছেন এমন এক নেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সম্পর্কে বলেন, শেখ হাসিনার হাতকে কিভাবে শক্তিশালী করা যায় সেটাই ভেবেছেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক। আশরাফ ভাই তার পদকে এমনভাবে মূল্যায়ন করেন যে কাগজে-কলমে তিনি হয়তো সাধারণ সম্পাদক,কিন্তু আসলে আমরা সবাই শেখ হাসিনার সৈনিক।
আরও পড়ুন: তালিকায় আ.লীগের নেতাসহ অর্ধশতাধিক বাংলাদেশির নাম
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সভাপতিমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য নূহ-উল আলম লেনিন বলেন,আওয়ামী লীগ নেতা নির্বাচন করে সম্মেলনের মধ্য দিয়ে। আওয়ামী লীগকে গতিশীল করতে কাকে নেতা বানানো যায় সেটা কাউন্সিলররা ঠিক করেন। তাই পূর্ব ধারণা থেকে কে নেতা হবেন আর কে নেতা হবেন না সেটা বলা মুশকিল।
তিনি আরও বলেন, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ইতোমধ্যে যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছেন। আমার জানা মতে, শেখ হাসিনার আস্থাও অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।
জানতে চাইলে সভাপতিমণ্ডলীর অপর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগই একমাত্র সংগঠন নেতাদের যোগ্যতা-অযোগ্যতা সরাসরি বিচার করে কাউন্সিলরা। তাই কে নেতা হচ্ছেন বা কে হচ্ছেন না এটাও নির্ভর করে তাদের উপরই। গত দুইবার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে সৈয়দ আশরাফ চেষ্টা করেছেন আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করতে।
উল্লেখ্য, আগামী ১০ ও ১১ জুলাই আওয়ামী লীগের দুই দিনব্যাপী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। কেন্দ্রীয় নেতারা এ প্রসঙ্গে বলেন, শেখ হাসিনা ও সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দু’জন আবারও শীর্ষ দুই পদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলে সরকার ও দল শক্তিশালী হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর