আয়-ব্যয়ের হিসাব নিরীক্ষার (অডিট) কাজ যৌক্তিক সময়ে করতে না পারাই সরকারের অন্যতম দুর্বলতা বলে স্বীকার করেছেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান।
মঙ্গলবার রাজধানীর মতিঝিলে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) কনফারেন্সে হলে বাজেট বিষয়ক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা স্বীকার করেন। এমসিসিআই এবং পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) যৌথভাবে ‘বাজেট ২০১৫-২০১৬: ভিউস অব বিজনেস কমিউনিটি’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে। এতে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর ‘কি নোট পেপার’ উপস্থাপন করেন পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর।
পেপার উপস্থাপনের সময় বাজেটের স্বচ্ছতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে আহসান মনসুর বলেন, দেশের সর্বোচ্চ অডিট প্রতিষ্ঠান সরকারের বাৎসারিক আর্থিক বিবরণীর নিরীক্ষা যৌক্তিক সময়ে সম্পন্ন করতে পারে না এবং করলেও তা জনসমক্ষে প্রকাশ করে না। সব মিলিয়ে অডিট প্রক্রিয়া অর্থহীন এবং গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে।
পরে অডিট সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের অন্যতম দুর্বলতা হচ্ছে এই অডিট।
নিরীক্ষার দীর্ঘসূত্রিতা সম্পর্কে নিজের অভিজ্ঞতার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, আমি ২০১০-২০১১ সালে নিরীক্ষা অফিসে ছিলাম তখন দেখি ২০০৩-২০০৪ সালের কেইস নিয়ে অবজেকশন আসছে।
সভায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নতুন পে স্কেলে বেতন প্রদান সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ দেশে প্রশ্নবিদ্ধ কাজ করেও অনেকে ভালো বেতন পাচ্ছে। তাই সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বৃদ্ধিকে আইন এবং নৈতিকভাবে আমরা অন্যায় বলে করি না। এটাকে অ্যাফোর্ডেবল মনে করি।
তিনি বলেন, এখন বাজেটের সাইজ নিয়ে আর কেউ কথা বলে না। আমরা এ ব্যাপারে আমরা উচ্চাভিলাষী কেননা অনুন্নয়নের কিছু খাত আছে। সেগুলোকে পূরণ করতে হবে। উচ্চাভিলাষী বাজেট দিয়ে মানুষকে পুশ করার চেষ্টা করছি।
বাজেট নিয়ে বিতর্কের রেশ টেনে এম এ মান্নান বলেন, আমরা রাজনীতি করি। তাই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট থেকে বাজেট দিই। এজন্য সবার সাথে, সব দিকে সমঝোতা করতে হয়। সব মিলিয়ে আমাদের কিছু গোল আছে সেটা পূরণের চেষ্টা করি।
তিনি বলেন, এখন আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে দারিদ্র্য উপশম করা। এরপর হলো সমাজে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা করা। আমাদের আত্মপরিচয় লুপ্ত হয়ে গেছে। এমন বাজেট চাই যেটা দিয়ে আত্মপরিচয় পুনরুদ্ধারে সহায়তা করবে।
এমসিসিআই সহ-সভাপতি আনিস খানের সভাপতিত্বেতে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, পিআরআইয়ের চেয়ারম্যান জায়েদি সাত্তার, তত্ত্বাবধায়ক সরকার সাবেক উপদেষ্টা এবিএম মির্জা আজিজুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।