ঢাকা ০৭:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিয়ানমার সীমান্তে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ পররাষ্ট্র সচিবের

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২৪:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪
  • ৭ বার

মিয়ানমার সীমান্তে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানালেন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন।

রোববার (১০ নভেম্বর) বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত ইউ কিয়াও সোয়ে মো’য়ের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত ইউ কিয়াও সোয়ে মো পররাষ্ট্র দপ্তরে সাক্ষাৎ করতে এলে পররাষ্ট্রসচিব এ উদ্বেগের কথা জানান।

বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব প্রারম্ভিক প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে আশ্রয়দাতা জনগোষ্ঠীর পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক ক্ষতির কথাও উল্লেখ করেন।

তিনি মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের দিকে আরও বাস্তুচ্যুতি রোধ করতে এ উদ্বেগ মোকাবিলায় অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য মিয়ানমারকে আহ্বান জানান।

বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব মিয়ানমারে বিশেষ করে রাখাইন রাজ্যের ক্রমবর্ধমান অশান্ত পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানান। তিনি মিয়ানমারের অশান্তি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতিকে আরও তীব্র করেছে উল্লেখ করে বলেন, এর ফলে সম্প্রতি আরও বাংলাদেশে রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটেছে এবং ইতিমধ্যে সেখানে আশ্রয় নেওয়া ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গার সঙ্গে তারা যুক্ত হয়েছে।

পররাষ্ট্র সচিব মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে লক্ষ্যচ্যুত মর্টার শেল সীমান্তের এপারে এসে পড়া এবং বাংলাদেশি নৌকায় গুলিবর্ষণের কথা উল্লেখ করে সীমান্তে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ উত্থাপন করেন।

তিনি বলেন, এসব ঘটনা বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জনগোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলেছে, তাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলেছে।

বাংলাদেশি জেলেদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনাও তুলে ধরে এ ধরনের ঘটনা রোধ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন পররাষ্ট্রসচিব।

কক্সবাজারে তার সাম্প্রতিক সফরের কথা উল্লেখ করে তিনি আইনশৃঙ্খলার অবনতি, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়া এবং আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষ, মাদক চোরাচালান ও পাচার বেড়ে যাওয়ার উল্লেখ করে বলেন, এসব বিষয় স্থানীয় সম্পদ ও প্রশাসনের ওপর যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করেছে।

মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত তাদের প্রত্যাবাসনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে নিশ্চিত করে বাস্তুচ্যুতি সংকটের একটি সম্ভাব্য সমাধানের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেন।

উভয়পক্ষই রাখাইনে ইউএনডিপি’র সাম্প্রতিক সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষের পূর্বাভাস নিয়েও আলোচনা করে।

কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের ওপারে রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনী এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘাতের কারণে সীমান্ত এলাকায় নানা সময়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে মর্টার শেল, বোমা বিস্ফোরণের বিকট শব্দে আতঙ্কে দিন কাটছে সীমান্তে বসবাসকারীদের।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

মিয়ানমার সীমান্তে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ পররাষ্ট্র সচিবের

আপডেট টাইম : ১১:২৪:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪

মিয়ানমার সীমান্তে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানালেন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন।

রোববার (১০ নভেম্বর) বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত ইউ কিয়াও সোয়ে মো’য়ের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত ইউ কিয়াও সোয়ে মো পররাষ্ট্র দপ্তরে সাক্ষাৎ করতে এলে পররাষ্ট্রসচিব এ উদ্বেগের কথা জানান।

বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব প্রারম্ভিক প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে আশ্রয়দাতা জনগোষ্ঠীর পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক ক্ষতির কথাও উল্লেখ করেন।

তিনি মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের দিকে আরও বাস্তুচ্যুতি রোধ করতে এ উদ্বেগ মোকাবিলায় অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য মিয়ানমারকে আহ্বান জানান।

বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব মিয়ানমারে বিশেষ করে রাখাইন রাজ্যের ক্রমবর্ধমান অশান্ত পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানান। তিনি মিয়ানমারের অশান্তি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতিকে আরও তীব্র করেছে উল্লেখ করে বলেন, এর ফলে সম্প্রতি আরও বাংলাদেশে রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটেছে এবং ইতিমধ্যে সেখানে আশ্রয় নেওয়া ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গার সঙ্গে তারা যুক্ত হয়েছে।

পররাষ্ট্র সচিব মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে লক্ষ্যচ্যুত মর্টার শেল সীমান্তের এপারে এসে পড়া এবং বাংলাদেশি নৌকায় গুলিবর্ষণের কথা উল্লেখ করে সীমান্তে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ উত্থাপন করেন।

তিনি বলেন, এসব ঘটনা বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জনগোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলেছে, তাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলেছে।

বাংলাদেশি জেলেদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনাও তুলে ধরে এ ধরনের ঘটনা রোধ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন পররাষ্ট্রসচিব।

কক্সবাজারে তার সাম্প্রতিক সফরের কথা উল্লেখ করে তিনি আইনশৃঙ্খলার অবনতি, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়া এবং আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষ, মাদক চোরাচালান ও পাচার বেড়ে যাওয়ার উল্লেখ করে বলেন, এসব বিষয় স্থানীয় সম্পদ ও প্রশাসনের ওপর যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করেছে।

মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত তাদের প্রত্যাবাসনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে নিশ্চিত করে বাস্তুচ্যুতি সংকটের একটি সম্ভাব্য সমাধানের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেন।

উভয়পক্ষই রাখাইনে ইউএনডিপি’র সাম্প্রতিক সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষের পূর্বাভাস নিয়েও আলোচনা করে।

কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের ওপারে রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনী এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘাতের কারণে সীমান্ত এলাকায় নানা সময়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে মর্টার শেল, বোমা বিস্ফোরণের বিকট শব্দে আতঙ্কে দিন কাটছে সীমান্তে বসবাসকারীদের।