হার্ডওয়্যার শিল্প নিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় আয়োজন আইসিটি এক্সপো-২০১৫ শুরু হয়েছে। সোমবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এ মেলার উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
দেশে তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য উৎপাদন ও বিনিয়োগ আকর্ষণই এ মেলার প্রধান লক্ষ্য।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) যৌথভাবে তিন দিনের এই মেলার আয়োজন করেছে।
মেইক বাই বাংলাদেশ’ ধারণার উপস্থাপন নিয়ে এ মেলায় সরকারের ১০টিরও বেশি মন্ত্রণালয় ও সেবা প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তির শতাধিক দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান এ মেলায় হাজির হয়েছে। এতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সর্বশেষ সরকারি-বেসরকারি সেবাগুলো প্রদর্শন করা হচ্ছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থা, প্রশাসন, চিকিৎসা,সরকারি সেবা সব জায়গায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ায় অন্যতম দেশ।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্বে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন হচ্ছে। বদলে যাচ্ছে প্রেক্ষাপট। তাই বিশ্বের সাখে তাল মিলিয়ে চলতে নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কার ও ব্যবহারে অভ্যস্ত হতে হবে।
সভাপতিত্বের বক্তব্যে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা। পথ চলার এ পর্যায়ে এখন আমরা সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি মানবসম্পদ উন্নয়নের দিকে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের সোনা- রূপা- হীরার খনি নেই। কিন্তু আমাদের আছে অফুরন্ত তারুণ্যের শক্তি। আর এ শক্তি দিয়েই আমরা বিশ্ব জয় করবো।
তিনি বলেন, হার্ডওয়্যার ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে অসীম সম্ভাবনা, কর্মপ্রচেষ্টা ও রূপকল্পকে তুলে ধরা, জনসচেতনতা সৃষ্টি, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যবান্ধব পরিবেশ তৈরী, তরুণদের অংশগ্রহণ বাড়ানো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পথ ও উদ্যোক্তা তৈরীতে এই মেলা ভূমিকা রাখবে।
পলক বলেন, আমরা আর আমদানীকারক দেশ থাকতে চাই না। এখন বাংলাদেশের উৎপাদক দেশ হওয়ার সময় এসেছে ।
স্বাগত বক্তব্যে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার বলেন, দেশীয় তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য ও সেবার সবচেয়ে বড় আয়োজন এই মেলা। তথ্যপ্রযুক্তির অত্যাধুনিক পণ্য ও সেবার উপস্থাপন, উৎপাদক, বিক্রেতা, ক্রেতার মতবিনিময়, বিশেষজ্ঞ ব্যাবহারকারীর মিথস্ক্রিয়া, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরীতে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও ব্যাপক বেচাকেনার অবারিত সুযোগ এনে দেবে এ মেলা ।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইমরান আহমেদ, বিসিএস সভাপতি এএইচএম মাহফুজুল আরিফ।
মেলায় নবীনদের উদ্ভাবন নিয়ে রয়েছে ইনোভেশন জোন। এছাড়া এতে গেইমিং প্রতিযোগিতা, রোবট শো, সেলিব্রেটি শো রয়েছে।
থাকছে ১০ টি সেমিনার। ডিজিটাল ই-হেলথ, হার্ডওয়্যার: চ্যালেঞ্জস অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড, ক্লাউড কম্পিউটিং : দি ফিউচার, পাওয়ার ব্যাকআপ সলিউশন, ফিউচার টেকনোলজি, ট্রান্সফর্মিং এডুকেশন টু ডিজিটাল, আইসিটি ফর বেটার ম্যানজেমেন্ট শীর্ষক এসব সেমিনারে বক্তব্য রাখবেন দেশী-বিদেশী তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা।
প্রথম দিনে বিকালে বেসিস স্টুডেন্টস ফোরামের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হবে প্রযুক্তি খাতে ক্যারিয়ার নিয়ে বিশেষ সেমিনার। শেষদিনে দেশীয় মার্কেটপ্লেস বিল্যান্সারের আয়োজনে রয়েছে সেমিনার- ফ্রিল্যান্সার, লোকাল মার্কেটপ্লেস: পসিবিলিটিজ অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস।
এছাড়াও অনুষ্ঠিত হবে ‘ভবিষ্যত উদ্যোক্তা ফোরাম’ সম্মেলন।
মেলা চলাকালে ইনোভেশন প্রজেক্ট চ্যাম্পিয়নশিপ, ডিজিটাল ফটো কনটেস্ট, সেলফি কনটেস্ট, গেইমিং কনটেস্ট, সেলিব্রেটি শো, প্রোডাক্ট শো, স্পন্সর আওয়ার নামের নানা সেশন থাকছে। থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও।
মেলায় শিশুদের জন্য বিশেষ চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। বয়সভিত্তিক দুই বিভাগে ‘তোমার ভবিষত স্বপ্নের ডিভাইস’ বিষয়ে অঙ্কন প্রতিযোগিতা মেলার দ্বিতীয় দিন বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে।
রয়েছে মেগা সেল জোন। যেখানে মূল্য ছাড়, উপহারসহ ক্রেতাদের জন্য বিশেষ অফার দেয়া হয়েছে।
সকলের জন্য উম্মুক্ত এই মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে। মেলার সমাপনীতে প্রধান অতিথি থাকছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।