ঢাকা ০৮:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাতীয় হাওর নীতির পক্ষে জীবন ও জীবিকা বিপন্ন হয়ে পড়েছে দেশটির পরিবেশবিদরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৫৭:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬
  • ৩২০ বার

বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলে বিশাল এলাকাজুড়ে যে হাওর বা জলাভূমি রয়েছে তার মধ্যে অনেকগুলো শুকিয়ে চাষের জমিতে পরিণত হওয়ায় মানুষের জীবন ও জীবিকা বিপন্ন হয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন দেশটির পরিবেশবিদরা ।
তাদের অভিযোগ, সরকারের দেওয়া ইজারার সুযোগে জলমহালগুলোর নিয়ন্ত্রণ চলে যাচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের হাতে এবং এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন মৎস্যজীবিরা ।

বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ডের গতবছরের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলে সাতটি জেলায় ৪১৪টি হাওর রয়েছে যার মধ্যে অধিকাংশ হওরই এখন শুকিয়ে গেছে নানান প্রাকৃতিক কারনে আরার ঐ শুকনো হাওরে ধান চাষ করলে তাও আবার প্রতি এক বছর পর পর আকস্মিক বন্যার কারণে নষ্ট হয়ে যায় ।

ফলে এসব হাওর এলাকা জুড়েই মানুষের মধ্যে এখন চলছে চরম হতাশা তারা হয়ে পড়ছে ঋনগ্রস্থ বিশেষ করে দাদন ব্যাবসায়ীদের কারনে।

নেত্রকোনার ছায়ার হাওর এলাকার অধিবাসী এবং পরিবেশবিদ মোস্তফা জব্বার বলছেন,“ এটা বহুবছর ধরে চলে আসছে অবাক করার বিষয় হচ্ছে যখন ধানের দাম থাকে প্রতি মন ২০০ টাকা, তখন অভাবের কারনে কৃষক তার ধান অগ্রিম বিক্রি করে দেয় মাত্র ৫০ টাকা মন দরে ফলে বৈশাখ মাসে যখন তার ঘরে ধান আসে তখন সে ৫০ টাকা দরে মহাজনদের কাছে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হয়“

“এ সমস্যা হাওর এলাকার প্রতিটি গ্রামে প্রতিটি পরিবারেই আছে ফলে জৈষ্ঠ আষাঢ় মাসে তাদের ঘরে আর কোন ধান থাকেনা কারন মহাজনের দেনা শোধ করতেই তার সব ধান শেষ হয়ে যায়, এটা একটি ভয়াবহ সমস্যা“

মোস্তফা জব্বার বলেন হাওর এলাকার মানুষ এখন আর সেখানকার মাছ ধরে খেতে পারেনা কারণ সব জলাভূমিই এখন ইজারাদারদের দখলে এবং তারা অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে তাদের ঝলাভূমিতে গোসল পরযন্ত করদত দেয়না ।

অর্থনীতিবিদ কাজী খলিকুজ্জামান আহমেদ বলছেন দেশে হাওর ইজারা দেবার কোন নিয়ম নেই এটা প্রভাবশালীরা করছে তাদের প্রভাব খাটিয়ে এসব প্রভাবশালীদের হাত থেকে সাধারন মানুষকে বাঁচাতে তিনি অবিলম্বে জাতীয় হাওর নীতি প্রনয়নের জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানান।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক ইনামুল হক বলেন,“ আমাদের পানি নীতি আছে এবং সেখানে হওরের উপর কিছু নীতি রয়েছে তবে সেটা যথেস্ট নয় হাওরগুলি বাঁচানোর জন্য সত্যিই একটা হওর নীতি হওয়া উচিত“ ।

তিনি বলেন যে সরকার হাওর এলাকার উন্নয়নের জন্য একটি বড় ধরনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে যেটা এখন পরিকল্পনা কমিশনের বিচেনাধীন রয়েছে তিনি বলেন হাওর এলাকাগুলিতে সুষ্ঠূ বন্যা ব্যবস্থাপনা এবং সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পরিকল্পনাও সরকারের রয়েছে ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

জাতীয় হাওর নীতির পক্ষে জীবন ও জীবিকা বিপন্ন হয়ে পড়েছে দেশটির পরিবেশবিদরা

আপডেট টাইম : ১২:৫৭:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলে বিশাল এলাকাজুড়ে যে হাওর বা জলাভূমি রয়েছে তার মধ্যে অনেকগুলো শুকিয়ে চাষের জমিতে পরিণত হওয়ায় মানুষের জীবন ও জীবিকা বিপন্ন হয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন দেশটির পরিবেশবিদরা ।
তাদের অভিযোগ, সরকারের দেওয়া ইজারার সুযোগে জলমহালগুলোর নিয়ন্ত্রণ চলে যাচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের হাতে এবং এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন মৎস্যজীবিরা ।

বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ডের গতবছরের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলে সাতটি জেলায় ৪১৪টি হাওর রয়েছে যার মধ্যে অধিকাংশ হওরই এখন শুকিয়ে গেছে নানান প্রাকৃতিক কারনে আরার ঐ শুকনো হাওরে ধান চাষ করলে তাও আবার প্রতি এক বছর পর পর আকস্মিক বন্যার কারণে নষ্ট হয়ে যায় ।

ফলে এসব হাওর এলাকা জুড়েই মানুষের মধ্যে এখন চলছে চরম হতাশা তারা হয়ে পড়ছে ঋনগ্রস্থ বিশেষ করে দাদন ব্যাবসায়ীদের কারনে।

নেত্রকোনার ছায়ার হাওর এলাকার অধিবাসী এবং পরিবেশবিদ মোস্তফা জব্বার বলছেন,“ এটা বহুবছর ধরে চলে আসছে অবাক করার বিষয় হচ্ছে যখন ধানের দাম থাকে প্রতি মন ২০০ টাকা, তখন অভাবের কারনে কৃষক তার ধান অগ্রিম বিক্রি করে দেয় মাত্র ৫০ টাকা মন দরে ফলে বৈশাখ মাসে যখন তার ঘরে ধান আসে তখন সে ৫০ টাকা দরে মহাজনদের কাছে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হয়“

“এ সমস্যা হাওর এলাকার প্রতিটি গ্রামে প্রতিটি পরিবারেই আছে ফলে জৈষ্ঠ আষাঢ় মাসে তাদের ঘরে আর কোন ধান থাকেনা কারন মহাজনের দেনা শোধ করতেই তার সব ধান শেষ হয়ে যায়, এটা একটি ভয়াবহ সমস্যা“

মোস্তফা জব্বার বলেন হাওর এলাকার মানুষ এখন আর সেখানকার মাছ ধরে খেতে পারেনা কারণ সব জলাভূমিই এখন ইজারাদারদের দখলে এবং তারা অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে তাদের ঝলাভূমিতে গোসল পরযন্ত করদত দেয়না ।

অর্থনীতিবিদ কাজী খলিকুজ্জামান আহমেদ বলছেন দেশে হাওর ইজারা দেবার কোন নিয়ম নেই এটা প্রভাবশালীরা করছে তাদের প্রভাব খাটিয়ে এসব প্রভাবশালীদের হাত থেকে সাধারন মানুষকে বাঁচাতে তিনি অবিলম্বে জাতীয় হাওর নীতি প্রনয়নের জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানান।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক ইনামুল হক বলেন,“ আমাদের পানি নীতি আছে এবং সেখানে হওরের উপর কিছু নীতি রয়েছে তবে সেটা যথেস্ট নয় হাওরগুলি বাঁচানোর জন্য সত্যিই একটা হওর নীতি হওয়া উচিত“ ।

তিনি বলেন যে সরকার হাওর এলাকার উন্নয়নের জন্য একটি বড় ধরনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে যেটা এখন পরিকল্পনা কমিশনের বিচেনাধীন রয়েছে তিনি বলেন হাওর এলাকাগুলিতে সুষ্ঠূ বন্যা ব্যবস্থাপনা এবং সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পরিকল্পনাও সরকারের রয়েছে ।