রাগ, দুঃখ, যন্ত্রণা প্রকাশের কোনও কোচিং ক্লাস দরকার হয় কি? রাস্তার মাঝে হোঁচট খেয়ে পড়লে, যন্ত্রণার প্রকাশটা কি এমনিই বেরিয়ে আসে না? প্রেম, ভালোবাসাও ঠিক সেরকমই। মনের মানুষের সামনে কী করব, কী বলব – তা আজ স্কুল পড়ুয়াদেরও বুঝিয়ে দিতে হয় না। এমনিতেই সব শিখে যায়। “ওটা বয়েসের দোষ”। দোষ না গুণ সে তর্কে যাচ্ছি না। তবে এটা বলতে পারি, টিভি-সিরিয়ালের সৌজন্যে আর ইন্টারনেটের দয়ায় আজ আর ছোটোদেরও কিছু শিখিয়ে দিতে হয় না। ওরা বাড়ি বসেই আজকাল অনেক কিছু শিখে যায়। আর কলেজ-ইউনিভার্সিটি গণ্ডির মধ্যে যারা আছে, তাদের কী শেখাব ? তারাই আমাদের শিখিয়ে দিতে পারে।
যাইহোক, আমাদের আগের জেনারেশনে অবশ্য চুম্বনের এত রকমফের ছিল না। চুম্বন ছিল চুম্বনই। বুক কাঁপা আর শরীরের ভিতর লাভার স্রোত বয়ে যাওয়া। নিরালায়, নিভৃতে গভীর অনুভূতি। সেটাই ছিল। ছিল না – টিভি ক্যামেরার সামনে মুখে মুখ ঠুসে, চুক চুক করে চুষে যাওয়ার বুকের পাটা। যাক সে কথা, তবু বলি – পুরোনো চাল ভাতে বাড়ে। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি প্রেমিক আছে ভালো, কিন্তু নিজেকে তাঁর সামনে সামলে রাখতে হবে। কীভাবে –
১) বয়ফ্রেন্ডের সামনে কখনওই আ-দেখলাপনা কোরো না। এসব কথা আগেকার দিনের দিদিমা, ঠাকুমারাই শিখিয়ে দিতেন। এখন অগত্যা আমাদেরই শিখিয়ে দিতে হচ্ছে। জেনে রেখো – সব সময় চোখে হারাচ্ছো এটা বুঝিয়েছো কী মরেছো। মনের ব্যাকুলতা, মনেই রাখো। তাকে সব সময় প্রকাশ করতে নেই। কারণ – একটাই। পেয়ে বসবে। মনে করে নেবে, তাকে ছাড়া তোমার চলে না। তখন সকাল বিকেল তুমিই নাকে দড়ি পরে ঘুরে বেড়াবে। এ কথা বলে রাখলাম।
২) সব সময় চোখের সামনে ঘুর ঘুর করতেই হবে – এমনটা কোথাও লেখা নেই। বেশি করলে আগ্রহ কমে যাবে…। মিলিয়ে নিও আমার কথা।
৩) সব কিছুতে বয়ফ্রেন্ডের উপর নির্ভর করো না। সিনেমার টিকিটটা কেটে দাও। জামার কালারটা পছন্দ করে দাও। অ্যাসাইনমেন্টটা করে দাও। প্র্যাকটিকাল খাতায় ছবিটা এঁকে দাও।… এসব কিছু করতে করতে কোনও এক সময় তার মনে হতে পারে – যেন ছোট্ট বোনের কাজ গুছিয়ে দিচ্ছে। সঠিক প্রেম করতে গেলে, ম্যাচিওরড হতে হবে।
৪) জিনস্ পরে ঘুরে বেড়াও – কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু ডেটিং-এ গেলে একটু কন্যা কন্যা সেজে যেও। ওই ছেলে ছেলে মার্কা জামাকাপড় পরে, ছেলে ছেলে মার্কা চালচলনে পুরুষের বুকে মাথা ঠেকানো ঠিক মানায় না।
৫) আর হ্যাঁ। সবশেষে বলি – সব সময় কানের কাছে ঘ্যানর, ঘ্যানর করবে না। তাতে বোর (bore) হয়ে যেতে পারে। শাসন করেও লাভ নেই। জানবে তুমি শাসন করার কেউ নও। “সিগারেট খেও না, ড্রিংক করো না” – এসব বলে কোনও লাভ নেই। তুমি না থাকলেই – করবে, খাবে। ফলে ওসবে সময় নষ্ট না করে, দিনটা সঠিকভাবে কাটাও। হাত ধরে হাঁটো। গল্প করো। খাওয়া দাওয়া করো। আবার কিছুটা নিজেকে গুটিয়েও রাখো। পরবর্তী সময়ের জন্য। তাতে আগ্রহটা বহাল থাকবে।