ঢাকা ০৭:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাকরি আর ফিরে পাচ্ছেন না বাবুল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৮:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬
  • ২৪৮ বার

পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার আর চাকরিতে ফিরে আসতে পারবেন না । পুলিশ সদর দফতরের একটি বিশ্বস্ত সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

অবশ্য বুধবার দুপুরে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহিদুল হক বলেছেন, বাবুল পদত্যাগ করেছেন। তার বিষয়ে মন্ত্রণালয় পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।

পুলিশের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বাবুল আক্তার আর চাকরিতে ফিরে আসছেনা। মিতু হত্যা মামলার তদন্ত সংস্থা চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) এবং সদর দফতরের কর্মকর্তারা স্ত্রী হত্যায় বাবুলের সম্পৃক্ততার ইঙ্গিত দিয়েছেন। এছাড়াও যেহেতু নিজেই চাকরি থেকে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছে, সেখানে তাকে চাকরি ফিরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত কেউ নিচ্ছেননা। কেননা সদর দফতর থেকে পদত্যাগ পত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে দেড় মাস পর। এতোদিন চুপ থেকে যদি সেই পদত্যাগ পত্র জোর করে নেয়া হয়েছে বলা হয়ে থাকে, তবে তার দায়ভার তাকেই নিতে হবে।

সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের একটি অংশ চান তদন্তে বাবুল আক্তারের সংশ্লিষ্টতা থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক। আবার অপর একটি মনে করেন বাবুলকে হয়তো ফাঁসানো হচ্ছে। এজন্য মিতু হত্যার তদন্তে যেনো অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়।

অবশ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক বাবুল আক্তার বিষয়ে বারবার বলে আসছেন তার পদত্যাগ পত্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। এখন মন্ত্রণালয় যে সিদ্ধান্ত নেবে তাই হবে। স্বরাষ্ট্র সচিব বলেছেন, বাবুল আক্তারের ফাইল রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে পাঠানো হবে, সেখান থেকেই সিদ্ধান্ত আসবে।

এদিকে, এসপি বাবুল আক্তার চাকরি ফিরে পেতে প্রায় প্রতিদিন পুলিশ সদর দফতরে বিভিন্ন কর্মকর্তাদের কাছে ধর্না দিচ্ছেন। যদি পুলিশের শীর্ষকতারা তার সঙ্গে দেখা করতে চাননা। বাবুল আক্তার পুলিশ সদর দফতরে প্রবেশের পর কিছু সময় ঘোরাঘুরি ফের বের হয়ে যান।

গত ৩ ও ৪ আগস্ট পুলিশ সদর দফতরে গিয়ে তিনি চাকরি ছাড়ার বিষয়ে একটি লিখিত ব্যাখ্যা দেন। এরপরও তাকে চাকরি যোগদান করতে না দেওয়ায় পরবর্তীতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাকরিতে যোগ দেওয়ার জন্য লিখিত আবেদন করেন। পাশাপাশি আগের দেওয়া পদত্যাগপত্র জোর করে নেওয়া হয়েছে তাও লিখিত দেন তিনি।

এরআগে, স্ত্রী হত্যাকাণ্ডের ১৫ দিনের মাথায় গত ২৪ জুন মধ্যরাতে শ্বশুর বাড়ি থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবুলকে মিন্টো রোডের গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ২৫ জুন ১৬ ঘণ্টা পর তাকে বনশ্রীতে শ্বশুরের বাসায় পৌঁছে দেয় ডিবি। ওই সময় তার কাছ থেকে পদত্যাগপত্র নেওয়া হয় বলেও সূত্র জানায়। সূত্র আরো জানিয়েছিলো বাবুল নিজেই চাকরি ছাড়ার শর্তে স্ত্রী হত্যার দায় থেকে বাঁচতে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলেন।

বুধবার সাম্প্রতিক আইন শৃঙ্খলা বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আইজিপি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘বাবুল আক্তার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। আমরা তা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে। পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর আমরা দেড় মাস অপেক্ষা করেছিলাম। তিনি এটা প্রত্যাহার করেন কিনা। তবে তিনি কোনও ব্যবস্থা নেননি।

উল্লেখ্য, গত ৫ জুন চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড় এলাকায় বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু শিশু সন্তানের সামনে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন। স্ত্রী খুন হওয়ার দিন বাবুল আক্তার ঢাকার পুলিশ সদর দফতরেই কর্মরত ছিলেন। ঘটনার পর থেকে দুই শিশু সন্তান নিয়ে রাজধানীর বনশ্রীর ভূঁইয়া পাড়ায় শ্বশুরের বাসাতে এখন পর্যন্ত বসবাস করে আসছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

চাকরি আর ফিরে পাচ্ছেন না বাবুল

আপডেট টাইম : ১২:১৮:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার আর চাকরিতে ফিরে আসতে পারবেন না । পুলিশ সদর দফতরের একটি বিশ্বস্ত সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

অবশ্য বুধবার দুপুরে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহিদুল হক বলেছেন, বাবুল পদত্যাগ করেছেন। তার বিষয়ে মন্ত্রণালয় পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।

পুলিশের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বাবুল আক্তার আর চাকরিতে ফিরে আসছেনা। মিতু হত্যা মামলার তদন্ত সংস্থা চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) এবং সদর দফতরের কর্মকর্তারা স্ত্রী হত্যায় বাবুলের সম্পৃক্ততার ইঙ্গিত দিয়েছেন। এছাড়াও যেহেতু নিজেই চাকরি থেকে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছে, সেখানে তাকে চাকরি ফিরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত কেউ নিচ্ছেননা। কেননা সদর দফতর থেকে পদত্যাগ পত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে দেড় মাস পর। এতোদিন চুপ থেকে যদি সেই পদত্যাগ পত্র জোর করে নেয়া হয়েছে বলা হয়ে থাকে, তবে তার দায়ভার তাকেই নিতে হবে।

সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের একটি অংশ চান তদন্তে বাবুল আক্তারের সংশ্লিষ্টতা থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক। আবার অপর একটি মনে করেন বাবুলকে হয়তো ফাঁসানো হচ্ছে। এজন্য মিতু হত্যার তদন্তে যেনো অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়।

অবশ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক বাবুল আক্তার বিষয়ে বারবার বলে আসছেন তার পদত্যাগ পত্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। এখন মন্ত্রণালয় যে সিদ্ধান্ত নেবে তাই হবে। স্বরাষ্ট্র সচিব বলেছেন, বাবুল আক্তারের ফাইল রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে পাঠানো হবে, সেখান থেকেই সিদ্ধান্ত আসবে।

এদিকে, এসপি বাবুল আক্তার চাকরি ফিরে পেতে প্রায় প্রতিদিন পুলিশ সদর দফতরে বিভিন্ন কর্মকর্তাদের কাছে ধর্না দিচ্ছেন। যদি পুলিশের শীর্ষকতারা তার সঙ্গে দেখা করতে চাননা। বাবুল আক্তার পুলিশ সদর দফতরে প্রবেশের পর কিছু সময় ঘোরাঘুরি ফের বের হয়ে যান।

গত ৩ ও ৪ আগস্ট পুলিশ সদর দফতরে গিয়ে তিনি চাকরি ছাড়ার বিষয়ে একটি লিখিত ব্যাখ্যা দেন। এরপরও তাকে চাকরি যোগদান করতে না দেওয়ায় পরবর্তীতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাকরিতে যোগ দেওয়ার জন্য লিখিত আবেদন করেন। পাশাপাশি আগের দেওয়া পদত্যাগপত্র জোর করে নেওয়া হয়েছে তাও লিখিত দেন তিনি।

এরআগে, স্ত্রী হত্যাকাণ্ডের ১৫ দিনের মাথায় গত ২৪ জুন মধ্যরাতে শ্বশুর বাড়ি থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবুলকে মিন্টো রোডের গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ২৫ জুন ১৬ ঘণ্টা পর তাকে বনশ্রীতে শ্বশুরের বাসায় পৌঁছে দেয় ডিবি। ওই সময় তার কাছ থেকে পদত্যাগপত্র নেওয়া হয় বলেও সূত্র জানায়। সূত্র আরো জানিয়েছিলো বাবুল নিজেই চাকরি ছাড়ার শর্তে স্ত্রী হত্যার দায় থেকে বাঁচতে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলেন।

বুধবার সাম্প্রতিক আইন শৃঙ্খলা বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আইজিপি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘বাবুল আক্তার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। আমরা তা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে। পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর আমরা দেড় মাস অপেক্ষা করেছিলাম। তিনি এটা প্রত্যাহার করেন কিনা। তবে তিনি কোনও ব্যবস্থা নেননি।

উল্লেখ্য, গত ৫ জুন চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড় এলাকায় বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু শিশু সন্তানের সামনে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন। স্ত্রী খুন হওয়ার দিন বাবুল আক্তার ঢাকার পুলিশ সদর দফতরেই কর্মরত ছিলেন। ঘটনার পর থেকে দুই শিশু সন্তান নিয়ে রাজধানীর বনশ্রীর ভূঁইয়া পাড়ায় শ্বশুরের বাসাতে এখন পর্যন্ত বসবাস করে আসছেন।