মার্কিন নেতৃত্ব ও জাতিসংঘে শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কূটনৈতিক সাফল্যের আশা করছেন। ‘বিজয় পরিকল্পনা’ পেশ করে তিনি রাশিয়াকে কোণঠাসা করতে চান।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি রোববার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তিনি তার সহযোগীদের সঙ্গে প্রকৃত শান্তির লক্ষ্যে ‘বিজয় ভাগ করে নিতে চান’ বলে জানিয়েছেন। দেশবাসীর উদ্দেশ্যে দৈনিক ভিডিও বার্তার পাশাপাশি তিনি এক্স-এ পোস্ট করে লিখেছেন, ‘‘চলতি হেমন্তকালই এই যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নির্ণয় করবে।”
যুক্তরাষ্ট্র সফরের শুরুতেই জেলেনস্কি পেন্সিলভেনিয়া রাজ্যে জো বাইডেনের শহর স্ক্র্যানটনে এক গোলাবারুদের কারখানা পরিদর্শন করেন। সেখানে ইউক্রেনের জন্য পুরোদমে কামানের গোলা তৈরি হচ্ছে। শ্রমিকদের সঙ্গে ছবি তুলে জেলেনস্কি লেখেন, এমন সব জায়গাতে এলে সত্যি বোঝা যায়, যে গণতান্ত্রিক জগতের জয় সম্ভব। নিউ ইয়র্ক শহরে তিনি নিজের দেশের জ্বালানির চাহিদা নিয়ে আলোচনা করতে কয়েকটি মার্কিন কোম্পানির কর্ণধারদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। এছাড়া বেশ কয়েকজন বিশ্বনেতার সঙ্গেও তার বৈঠক করার কথা।
জেলেনস্কি তার যুক্তরাষ্ট্র সফরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনের ‘বিজয় পরিকল্পনা’ পেশ করবেন বলে আগেই জানিয়েছিলেন। প্রথমে বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে সেই পরিকল্পনা পেশ করে তিনি বিশ্ব দরবারেও সেটি তুলে ধরতে চান তিনি। বাইডেন প্রশাসন চলতি সপ্তাহেই ইউক্রেনের জন্য সাড়ে সাঁইত্রিশ কোটি মার্কিন ডলার অংকের সহায়তা ঘোষণা করতে চলেছে। ডেমোক্র্যাট দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কমলা হ্যারিসের সঙ্গেও বৃহস্পতিবার তার আলোচনা হওয়ার কথা। তিনি রিপাবলিকান দলের পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও সম্ভবত সাক্ষাৎ করবেন।
নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট একাধিক কূটনৈতিক উদ্যোগ নিচ্ছেন। সোমবার তিনি পৃথিবীর ভবিষ্যৎ নিয়ে জাতিসংঘের শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য দিয়েছেন। মঙ্গলবার নিরাপত্তা পরিষদের এক অধিবেশনে তিনি উপস্থিত থাকবেন। বুধবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তিনি ভাষণ দেবেন।
মার্কিন নেতৃত্ব ও জাতিসংঘের কূটনৈতিক উদ্যোগের মাধ্যমে জেলেনস্কি যুদ্ধক্ষেত্রে কতটা পরিবর্তন আনতে পারবেন, সে বিষয়ে সংশয় দেখা দিচ্ছে। ইউক্রেনের পূর্বাংশে রাশিয়ার বাহিনী আরো অগ্রসর হচ্ছে। রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলের একাংশ দখল করেও ইউক্রেন বাড়তি কোনো সুবিধা পাচ্ছে না। ইউক্রেনের আবেদন সত্ত্বেও পশ্চিমা বিশ্ব, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন এখনো রাশিয়ার গভীরে দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র প্রয়োগের ছাড়পত্র দিচ্ছে না।
হোয়াইট হাউসের বৈঠকে জেলেনস্কি সে বিষয়ে বাইডেনের মত বদলের চেষ্টা করবেন বলে ধরে নেয়া হচ্ছে। মস্কো সাফ জানিয়ে দিয়েছে, যে ইউক্রেন এমন ছাড়পত্র পেলে রাশিয়া ধরে নেবে, যে ন্যাটো দেশগুলি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ছে। সে ক্ষেত্রে পালটা পদক্ষেপের হুমকি দিচ্ছে তারা।