ঢাকা ০৭:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোদি-মমতা বিরোধ তুঙ্গে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫২:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ১৯ বার
পশ্চিমবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধ তুঙ্গে উঠেছে। মমতার দাবি, ডিভিসির (দামোদর ভ্যালি করপোরেশন) বাঁধ থেকে পানি ছাড়ায় পশ্চিমবঙ্গের আটটি জেলায় বন্যা হয়েছে এবং ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। এই বন্যাকে মানবসৃষ্ট আখ্যা দিয়েছেন তিনি। তবে কেন্দ্রীয় সরকার বলছে, রাজ্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ করেই পানি ছাড়া হয়েছে।

পানি ছাড়ার প্রতিবাদে এরই মধ্যে ডিভিসির বোর্ড এবং দামোদর ভ্যালি রিজার্ভার রেগুলেশন কমিটি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছেন মমতা। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে রাজ্যের বিরোধ নতুন মাত্রা পেয়েছে। দক্ষিণবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতিতে ডিভিসির ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে নরেন্দ্র মোদিকে দুই দফা চিঠি লিখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রথম চিঠির জবাবে কেন্দ্রীয় পানিশক্তিমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয় ডিভিসি।মোদিকে দেওয়া দ্বিতীয় চিঠিতে ওই দাবি প্রত্যাখ্যান করে মমতা বলেছেন, অনেক ক্ষেত্রেই রাজ্যের সম্মতি ছাড়া পানি ছাড়ে ডিভিসি। বারবার পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চিত করা হয়। এর প্রতিবাদে দামোদর ভ্যালি জলাধার নিয়ন্ত্রণ কমিটি (ডিভিআরআরসি) থেকে রাজ্যের প্রতিনিধি প্রত্যাহারের কথা জানান মমতা।

এরপর গত রবিবার ওই কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন রাজ্যের প্রতিনিধি সেচ দপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এবং বিদ্যুৎ দপ্তরের সচিব শান্তনু বসু।এদিকে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলা তলিয়ে গেছে। ডিভিসি পানি ছাড়ায় পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। দামোদর, ময়ূরাক্ষী, অজয়সহ রাজ্যের একাধিক নদীর পানি উপচে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাস্তাঘাট, ভেঙে গেছে সেতু

বিপর্যস্ত হয়েছে জনজীবন।

এমন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে মমতা বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যাঁদের জমি নষ্ট হয়েছে, তাঁদের জমি মেপে দ্রুত শস্যবীমার টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। আমি কৃষকদের চিন্তা করতে বারণ করব। দুর্গত এলাকার মানুষকে শরণার্থীশিবিরে আনা হবে।

কেন্দ্র সরকারের সমালোচনা করে মমতা বলেন, বাংলার দুর্ভাগ্য—এখানে যত বন্যা হয়, অন্য কোথাও তত হয় না। বাংলার অবস্থা নৌকার মতো। ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হলে আমাদের চিন্তা বাড়ে। কারণ তারা নিজেদের বাঁচাতে পানি ছেড়ে দেয়। বিহারও বাঁধ কেটে বাংলায় পানি ঢুকিয়ে দেয়। ডিভিসি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো কাজ না করায় লাখ লাখ মানুষের বাড়ি ডুবে যাচ্ছে। ভোটের জন্য যে টাকা খরচ করা হয়, তার একাংশ দিলেও বন্যা আটকাতে পারতাম।

পানি কমলে সমীক্ষা করার কথা জানিয়ে মমতা বলেন, ডিসেম্বরে ১১ লাখ পাকা বাড়ি করার জন্য সরকার টাকা দেবে। পানি কমলে সমীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েত দপ্তরকে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

মোদি-মমতা বিরোধ তুঙ্গে

আপডেট টাইম : ১০:৫২:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
পশ্চিমবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধ তুঙ্গে উঠেছে। মমতার দাবি, ডিভিসির (দামোদর ভ্যালি করপোরেশন) বাঁধ থেকে পানি ছাড়ায় পশ্চিমবঙ্গের আটটি জেলায় বন্যা হয়েছে এবং ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। এই বন্যাকে মানবসৃষ্ট আখ্যা দিয়েছেন তিনি। তবে কেন্দ্রীয় সরকার বলছে, রাজ্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ করেই পানি ছাড়া হয়েছে।

পানি ছাড়ার প্রতিবাদে এরই মধ্যে ডিভিসির বোর্ড এবং দামোদর ভ্যালি রিজার্ভার রেগুলেশন কমিটি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছেন মমতা। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে রাজ্যের বিরোধ নতুন মাত্রা পেয়েছে। দক্ষিণবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতিতে ডিভিসির ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে নরেন্দ্র মোদিকে দুই দফা চিঠি লিখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রথম চিঠির জবাবে কেন্দ্রীয় পানিশক্তিমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয় ডিভিসি।মোদিকে দেওয়া দ্বিতীয় চিঠিতে ওই দাবি প্রত্যাখ্যান করে মমতা বলেছেন, অনেক ক্ষেত্রেই রাজ্যের সম্মতি ছাড়া পানি ছাড়ে ডিভিসি। বারবার পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চিত করা হয়। এর প্রতিবাদে দামোদর ভ্যালি জলাধার নিয়ন্ত্রণ কমিটি (ডিভিআরআরসি) থেকে রাজ্যের প্রতিনিধি প্রত্যাহারের কথা জানান মমতা।

এরপর গত রবিবার ওই কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন রাজ্যের প্রতিনিধি সেচ দপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এবং বিদ্যুৎ দপ্তরের সচিব শান্তনু বসু।এদিকে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলা তলিয়ে গেছে। ডিভিসি পানি ছাড়ায় পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। দামোদর, ময়ূরাক্ষী, অজয়সহ রাজ্যের একাধিক নদীর পানি উপচে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাস্তাঘাট, ভেঙে গেছে সেতু

বিপর্যস্ত হয়েছে জনজীবন।

এমন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে মমতা বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যাঁদের জমি নষ্ট হয়েছে, তাঁদের জমি মেপে দ্রুত শস্যবীমার টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। আমি কৃষকদের চিন্তা করতে বারণ করব। দুর্গত এলাকার মানুষকে শরণার্থীশিবিরে আনা হবে।

কেন্দ্র সরকারের সমালোচনা করে মমতা বলেন, বাংলার দুর্ভাগ্য—এখানে যত বন্যা হয়, অন্য কোথাও তত হয় না। বাংলার অবস্থা নৌকার মতো। ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হলে আমাদের চিন্তা বাড়ে। কারণ তারা নিজেদের বাঁচাতে পানি ছেড়ে দেয়। বিহারও বাঁধ কেটে বাংলায় পানি ঢুকিয়ে দেয়। ডিভিসি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো কাজ না করায় লাখ লাখ মানুষের বাড়ি ডুবে যাচ্ছে। ভোটের জন্য যে টাকা খরচ করা হয়, তার একাংশ দিলেও বন্যা আটকাতে পারতাম।

পানি কমলে সমীক্ষা করার কথা জানিয়ে মমতা বলেন, ডিসেম্বরে ১১ লাখ পাকা বাড়ি করার জন্য সরকার টাকা দেবে। পানি কমলে সমীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েত দপ্তরকে।