ঢাকা ০২:৩৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাঁদের চেয়ে সুন্দর ছিলেন প্রিয় নবী (সা.)

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:৩৮:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ২২ বার

মুসলমান মাত্রই প্রিয় নবিজি (সা.)-এর আশেক। তাঁকে মহব্বত ইমানের শাশ্বত দাবি। তাই সব আশেকে রাসূলের উচিত-তাদের চিন্তাচেতনা, কাজ-কর্ম, বিচার-ফয়সালাসহ জীবনের সব পর্যায়ে রাসূল (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ করা। নিজেকে সেই মতে প্রতিষ্ঠা করা।

তবেই তাঁর প্রতি মহব্বত সার্থক হবে। অন্যথায় তা নিছক লৌকিকতা। রাসূল (সা.)-এর আনুগত্যের ব্যাপারে আল-কুরআনে আল্লাহতায়ালা নিজেই বলে দিয়েছেন ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করো…।’ (সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত : ৩৩)।

আমরা রাসূল (সা.)-কে দেখিনি, কিন্তু সেই রাসূল (সা.)-এর দৈহিক গঠন সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রতিটি মুমিন হৃদয়ে রয়েছে। রাসূল (সা.)-এর চরিত্র, গুণাবলি ও দৈহিক আকৃতি-প্রকৃতির সুষমা বর্ণনা করা মহাসমুদ্রে মুক্তা খোঁজার মতো। দৈহিক গঠনে তিনি কেমন ছিলেন তা হাদিসের আলোকে তুলে ধরার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

রাবিআ ইবনু আবু আবদুর রহমান (রহ.) থেকে বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে, ‘রাসূল (সা.) অতিরিক্ত লম্বাও ছিলেন না, আবার একেবারে খাটোও ছিলেন না। ধবধবে সাদাও ছিলেন না, তামাটে বর্ণেরও ছিলেন না। তার চুলগুলো অধিক কোঁকড়ানোও ছিল না, আবার একেবারে সোজাও ছিল না। … ।’ (সহিহ বুখারি : ৩৫৪৮; সহিহ মুসলিম: ২৩৪৭)।

এ হাদিস থেকে প্রতীয়মান হয় যে, রাসূল (সা.)-এর দেহ মোবারকের দীর্ঘতা ছিল। আর সেই দীর্ঘতা মাধ্যম গড়নের, যা খাটোর তুলনায় লম্বার দিকে ঝোঁকা ছিল। তাঁর দৈহিক কাঠামোটা ছিল প্রশংসিত। তাঁর ত্বকের বৈশিষ্ট্য ছিল সাদার ভেতরে লাল আভা শোভা পেত।

বারা ইবনুল আজিব (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘রাসূল (সা.) মধ্যম আকৃতির ছিলেন। উভয় কাঁধের মধ্যস্থল প্রশস্ত ছিল। তাঁর মাথার চুল উভয় কানের লতি পর্যন্ত ছিল। আমি তাঁকে লাল ডোরাকাটা জোড়া চাদর পরা অবস্থায় দেখেছি। আমি তাঁর চেয়ে অধিক সুন্দর আর কোনো কিছু দেখিনি।’ (সহিহ বুখারি : ৩৫৫১; সহিহ মুসলিম: ২৩৩৭)। এ হাদিসে তাঁর উভয় কাঁধের মধ্যস্থল প্রশস্ত ছিল। এর দ্বারা বোঝা যায়, তার সিনা মোবারকও প্রশস্ত ছিল, যা পরিমিত অবস্থার বেশি ছিল না। যা আভিজাত্যের প্রতীক হিসাবে বিবেচিত।

আলি ইবনে আবু তালিব (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে, ‘রাসূলুল্লাহ না অতি লম্বা ছিলেন আর না বেঁটে ছিলেন। হাত-পায়ের তালু ও আঙুলগুলো মাংসল ছিল। মাথা কিছুটা বড় ছিল। হাড়ের গ্রন্থিগুলো মোটা ও মজবুত ছিল। তার বুক থেকে নাভি পর্যন্ত ফুরফুরে পশমের একটি চিকন রেখা প্রলম্বিত ছিল।

চলার সময় সামনের দিকে কিছুটা ঝুঁকে চলতেন, যেন তিনি ঢালবিশিষ্ট জায়গা থেকে হেঁটে চলছেন। আমি তার পূর্বে কিংবা পরে আর কাউকে তাঁর মতো দেখিনি।’ (সুনানুত তিরমিজি : ৩৬৩৭)। তাঁর হাত-পায়ের তালু ও আঙুলগুলো মোটা ও পরিমিত লম্বা ছিল। আর তাঁর আঙুলগুলো ছোট ছিল না। অঙ্গগুলোর এ রকম গঠন প্রকৃতি পুরুষের ক্ষেত্রে অতি প্রশংসনীয়।

নবিজি যখন জিহাদের অথবা গৃহের কোনো কাজ নিজ হাতে করতেন, তখন তার হাতের তালু অমসৃণ হতো। আবার যখন কাজ থেকে বিরত থাকতেন, মসৃণতা ফিরে আসত। যা ছিল নবিজির সৃষ্টিগত সৌন্দর্য।

সিমাক ইবনু হারব (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি জাবির ইবনু সামুরা (রা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, ‘রাসূল (সা.) প্রশস্ত চেহারার অধিকারী ছিলেন। চোখের শুভ্রতার মাঝে কিছুটা লালিমা ছিল। তিনি সুষম গোড়ালিবিশিষ্ট আকৃতির অধিকারী ছিলেন। শুরা (রহ.) বলেন, আমি সিমাক (রহ.)কে জিজ্ঞেস করলাম, দালিউল ফাম কী? তিনি বললেন, প্রশস্ত চেহারা। আমি বললাম, আশকালুল আইন কী? তিনি বললেন, ডাগর চক্ষুবিশিষ্ট। আমি বললাম, মানহুসুল আকাব কী? তিনি বললেন, গোড়ালিতে মাংস কম হওয়া’। (সহিহ মুসলিম : ২৩৩৯)।

জাবির ইবনে সামুরা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি রাসূল (সা.)-এর দিকে তাকিয়ে দেখলাম। তাঁর পরনে ছিল এক জোড়া লাল রঙের পোশাক। আমি রাসূল (সা.) ও চাঁদের দিকে তাকাতে লাগলাম। আমার চোখে রাসূল (সা.) চাঁদের চেয়ে অধিক সুন্দর ছিলেন।’ (সুনানুত তিরমিজি : ২৮১১)। সহিহ মুসলিম শরিফে বর্ণিত হয়েছে, এক ব্যক্তি সামুরা (রা.)কে জিজ্ঞেস করল, ‘নবিজির চেহারা কি তরবারির মতো ছিল? তিনি বললেন, না, বরং চন্দ্র ও সূর্যের মতো ছিল এবং তা গোলাকার ছিল।’ (সহিহ মুসলিম : ২৩৪৪)। সূর্যের সঙ্গে উপমা পেশ করার উদ্দেশ্য হলো-তাঁর চেহারার উজ্জ্বলতা বর্ণনা করা। আর চন্দ্রের সঙ্গে তুলনা করার তাৎপর্য হলো লাবণ্যময়তা তুলে ধরা। এ উভয় উপমায় তাঁর অপার সৌন্দর্য ও গোলাকৃতির বিষয়টির ইঙ্গিত রয়েছে।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘আমি রাসূল (সা.)-এর চেয়ে অধিক সুন্দর কোনো কিছু দেখিনি। যেন সূর্য তাঁর চেহারায় বিচরণ করছে।’ (মুসনাদু আহমদ ইবনু হাম্বল : ৮৬০৪)। রুবাইয়্যা বিনতে মুআওয়িজ (রা.)-এর বর্ণনায় এসেছে-তিনি বলেন, ‘হে প্রিয় বৎস! যদি তুমি তাকে দেখতে তাহলে বলতে, সূর্য উদিত হয়েছে।’

তিনি মোটাও ছিলেন না, আবার চিকনও নন। ইবনুল কাইয়িম (রহ.) বলেন, ‘যেহেতু সৌন্দর্য অন্তর আকৃষ্টের কারণ এবং মর্যাদাদানের কারণ হয়, এজন্য আল্লাহতায়ালা প্রত্যেক নবিকেই সুন্দর আকৃতি, সুন্দর চেহারা, শ্রেষ্ঠ বংশ, উত্তম চরিত্র ও মায়াবী কণ্ঠস্বর দিয়ে প্রেরণ করেছেন।’

আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) বলেন, ‘রাসূল (সা.) যখন মদিনায় এসে পৌঁছলেন, লোকজন তাকে দেখার জন্য দ্রুত তাঁর দিকে ছুটতে লাগল। এবং বলাবলি করতে লাগল যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) এসেছেন। অতএব, আমিও তাঁকে দেখার জন্য লোকদের সঙ্গে উপস্থিত হলাম। আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর চেহারা মোবারকের দিকে তাকিয়েই বুঝতে পারলাম যে, এ চেহারা কোনো মিথ্যুকের চেহারা নয়।

তখন তিনি প্রথম যে কথা বললেন, তা হলো-হে লোক সকল! তোমরা সালামের প্রসার ঘটাও, খাদ্য দান করো এবং মানুষ ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় (তাহাজ্জুদ) নামাজ আদায় করো। তাহলে নিশ্চয়ই তোমরা অনায়াসে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (সুনানুত তিরমিজি : ২৪৮৫)।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

চাঁদের চেয়ে সুন্দর ছিলেন প্রিয় নবী (সা.)

আপডেট টাইম : ০৩:৩৮:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মুসলমান মাত্রই প্রিয় নবিজি (সা.)-এর আশেক। তাঁকে মহব্বত ইমানের শাশ্বত দাবি। তাই সব আশেকে রাসূলের উচিত-তাদের চিন্তাচেতনা, কাজ-কর্ম, বিচার-ফয়সালাসহ জীবনের সব পর্যায়ে রাসূল (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ করা। নিজেকে সেই মতে প্রতিষ্ঠা করা।

তবেই তাঁর প্রতি মহব্বত সার্থক হবে। অন্যথায় তা নিছক লৌকিকতা। রাসূল (সা.)-এর আনুগত্যের ব্যাপারে আল-কুরআনে আল্লাহতায়ালা নিজেই বলে দিয়েছেন ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করো…।’ (সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত : ৩৩)।

আমরা রাসূল (সা.)-কে দেখিনি, কিন্তু সেই রাসূল (সা.)-এর দৈহিক গঠন সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রতিটি মুমিন হৃদয়ে রয়েছে। রাসূল (সা.)-এর চরিত্র, গুণাবলি ও দৈহিক আকৃতি-প্রকৃতির সুষমা বর্ণনা করা মহাসমুদ্রে মুক্তা খোঁজার মতো। দৈহিক গঠনে তিনি কেমন ছিলেন তা হাদিসের আলোকে তুলে ধরার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

রাবিআ ইবনু আবু আবদুর রহমান (রহ.) থেকে বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে, ‘রাসূল (সা.) অতিরিক্ত লম্বাও ছিলেন না, আবার একেবারে খাটোও ছিলেন না। ধবধবে সাদাও ছিলেন না, তামাটে বর্ণেরও ছিলেন না। তার চুলগুলো অধিক কোঁকড়ানোও ছিল না, আবার একেবারে সোজাও ছিল না। … ।’ (সহিহ বুখারি : ৩৫৪৮; সহিহ মুসলিম: ২৩৪৭)।

এ হাদিস থেকে প্রতীয়মান হয় যে, রাসূল (সা.)-এর দেহ মোবারকের দীর্ঘতা ছিল। আর সেই দীর্ঘতা মাধ্যম গড়নের, যা খাটোর তুলনায় লম্বার দিকে ঝোঁকা ছিল। তাঁর দৈহিক কাঠামোটা ছিল প্রশংসিত। তাঁর ত্বকের বৈশিষ্ট্য ছিল সাদার ভেতরে লাল আভা শোভা পেত।

বারা ইবনুল আজিব (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘রাসূল (সা.) মধ্যম আকৃতির ছিলেন। উভয় কাঁধের মধ্যস্থল প্রশস্ত ছিল। তাঁর মাথার চুল উভয় কানের লতি পর্যন্ত ছিল। আমি তাঁকে লাল ডোরাকাটা জোড়া চাদর পরা অবস্থায় দেখেছি। আমি তাঁর চেয়ে অধিক সুন্দর আর কোনো কিছু দেখিনি।’ (সহিহ বুখারি : ৩৫৫১; সহিহ মুসলিম: ২৩৩৭)। এ হাদিসে তাঁর উভয় কাঁধের মধ্যস্থল প্রশস্ত ছিল। এর দ্বারা বোঝা যায়, তার সিনা মোবারকও প্রশস্ত ছিল, যা পরিমিত অবস্থার বেশি ছিল না। যা আভিজাত্যের প্রতীক হিসাবে বিবেচিত।

আলি ইবনে আবু তালিব (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে, ‘রাসূলুল্লাহ না অতি লম্বা ছিলেন আর না বেঁটে ছিলেন। হাত-পায়ের তালু ও আঙুলগুলো মাংসল ছিল। মাথা কিছুটা বড় ছিল। হাড়ের গ্রন্থিগুলো মোটা ও মজবুত ছিল। তার বুক থেকে নাভি পর্যন্ত ফুরফুরে পশমের একটি চিকন রেখা প্রলম্বিত ছিল।

চলার সময় সামনের দিকে কিছুটা ঝুঁকে চলতেন, যেন তিনি ঢালবিশিষ্ট জায়গা থেকে হেঁটে চলছেন। আমি তার পূর্বে কিংবা পরে আর কাউকে তাঁর মতো দেখিনি।’ (সুনানুত তিরমিজি : ৩৬৩৭)। তাঁর হাত-পায়ের তালু ও আঙুলগুলো মোটা ও পরিমিত লম্বা ছিল। আর তাঁর আঙুলগুলো ছোট ছিল না। অঙ্গগুলোর এ রকম গঠন প্রকৃতি পুরুষের ক্ষেত্রে অতি প্রশংসনীয়।

নবিজি যখন জিহাদের অথবা গৃহের কোনো কাজ নিজ হাতে করতেন, তখন তার হাতের তালু অমসৃণ হতো। আবার যখন কাজ থেকে বিরত থাকতেন, মসৃণতা ফিরে আসত। যা ছিল নবিজির সৃষ্টিগত সৌন্দর্য।

সিমাক ইবনু হারব (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি জাবির ইবনু সামুরা (রা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, ‘রাসূল (সা.) প্রশস্ত চেহারার অধিকারী ছিলেন। চোখের শুভ্রতার মাঝে কিছুটা লালিমা ছিল। তিনি সুষম গোড়ালিবিশিষ্ট আকৃতির অধিকারী ছিলেন। শুরা (রহ.) বলেন, আমি সিমাক (রহ.)কে জিজ্ঞেস করলাম, দালিউল ফাম কী? তিনি বললেন, প্রশস্ত চেহারা। আমি বললাম, আশকালুল আইন কী? তিনি বললেন, ডাগর চক্ষুবিশিষ্ট। আমি বললাম, মানহুসুল আকাব কী? তিনি বললেন, গোড়ালিতে মাংস কম হওয়া’। (সহিহ মুসলিম : ২৩৩৯)।

জাবির ইবনে সামুরা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি রাসূল (সা.)-এর দিকে তাকিয়ে দেখলাম। তাঁর পরনে ছিল এক জোড়া লাল রঙের পোশাক। আমি রাসূল (সা.) ও চাঁদের দিকে তাকাতে লাগলাম। আমার চোখে রাসূল (সা.) চাঁদের চেয়ে অধিক সুন্দর ছিলেন।’ (সুনানুত তিরমিজি : ২৮১১)। সহিহ মুসলিম শরিফে বর্ণিত হয়েছে, এক ব্যক্তি সামুরা (রা.)কে জিজ্ঞেস করল, ‘নবিজির চেহারা কি তরবারির মতো ছিল? তিনি বললেন, না, বরং চন্দ্র ও সূর্যের মতো ছিল এবং তা গোলাকার ছিল।’ (সহিহ মুসলিম : ২৩৪৪)। সূর্যের সঙ্গে উপমা পেশ করার উদ্দেশ্য হলো-তাঁর চেহারার উজ্জ্বলতা বর্ণনা করা। আর চন্দ্রের সঙ্গে তুলনা করার তাৎপর্য হলো লাবণ্যময়তা তুলে ধরা। এ উভয় উপমায় তাঁর অপার সৌন্দর্য ও গোলাকৃতির বিষয়টির ইঙ্গিত রয়েছে।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘আমি রাসূল (সা.)-এর চেয়ে অধিক সুন্দর কোনো কিছু দেখিনি। যেন সূর্য তাঁর চেহারায় বিচরণ করছে।’ (মুসনাদু আহমদ ইবনু হাম্বল : ৮৬০৪)। রুবাইয়্যা বিনতে মুআওয়িজ (রা.)-এর বর্ণনায় এসেছে-তিনি বলেন, ‘হে প্রিয় বৎস! যদি তুমি তাকে দেখতে তাহলে বলতে, সূর্য উদিত হয়েছে।’

তিনি মোটাও ছিলেন না, আবার চিকনও নন। ইবনুল কাইয়িম (রহ.) বলেন, ‘যেহেতু সৌন্দর্য অন্তর আকৃষ্টের কারণ এবং মর্যাদাদানের কারণ হয়, এজন্য আল্লাহতায়ালা প্রত্যেক নবিকেই সুন্দর আকৃতি, সুন্দর চেহারা, শ্রেষ্ঠ বংশ, উত্তম চরিত্র ও মায়াবী কণ্ঠস্বর দিয়ে প্রেরণ করেছেন।’

আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) বলেন, ‘রাসূল (সা.) যখন মদিনায় এসে পৌঁছলেন, লোকজন তাকে দেখার জন্য দ্রুত তাঁর দিকে ছুটতে লাগল। এবং বলাবলি করতে লাগল যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) এসেছেন। অতএব, আমিও তাঁকে দেখার জন্য লোকদের সঙ্গে উপস্থিত হলাম। আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর চেহারা মোবারকের দিকে তাকিয়েই বুঝতে পারলাম যে, এ চেহারা কোনো মিথ্যুকের চেহারা নয়।

তখন তিনি প্রথম যে কথা বললেন, তা হলো-হে লোক সকল! তোমরা সালামের প্রসার ঘটাও, খাদ্য দান করো এবং মানুষ ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় (তাহাজ্জুদ) নামাজ আদায় করো। তাহলে নিশ্চয়ই তোমরা অনায়াসে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (সুনানুত তিরমিজি : ২৪৮৫)।