ঢাকা ০২:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অন্তর্বর্তী সরকারকে সুখবর চীন ও কানাডার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৩৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ অগাস্ট ২০২৪
  • ২৬ বার

উচ্চ সুদে নেওয়া ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণের সুদের হার কমানো প্রস্তাব চীনা রাষ্ট্রদূতকে দিয়েছেন অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বাংলাদেশকে দেওয়া চীনা ঋণের প্রতিশ্রুতি আছে ৭০০ কোটি ডলারের। সব মিলে এসব ঋণ আগামীতে পরিশোধের ক্ষেত্রে বিদ্যমান মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাবও দেওয়া হয়। অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এর আগে সচিবালয় উপদেষ্টার কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং কানাডার রাষ্ট্রদূত ড. লিলি নিকোলাসের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করে অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে তাদের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। বিশেষ করে চীন এবং কানাডার অর্থায়নে বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলোতে আর্থিক সহায়তা অব্যাহত রাখার কথা বলা হয়। তারাও আগ্রহ দেখিয়েছেন।

রাষ্ট্রদূতরা কি বলেছেন প্রশ্নের জবাবে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, চীন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যার কথা আগে বলেছিল, কিন্তু সমাধান হয়নি বলে অভিযোগ করেছে। আমি বলেছি এখন আর সময় নেব না, দ্রুত সমস্যা শনাক্ত করে সমাধান করব।

এ সময় প্রকল্পের অর্থ ব্যয়ে গুণগত মান নিশ্চিত, অর্থ ব্যয় যেন মানুষের কল্যাণের জন্য হয় এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যয় এটি নিশ্চিত করবেন বলে যোগ করেন অর্থ উপদেষ্টা।

তিনি আরও বলেন, প্রকল্প না নিলে হতো এমন প্রকল্পও নিয়েছে বিগত সরকার। এতে আমাদের ওপর ঋণের বোঝা পড়েছে। এগুলো দুঃখজনক ব্যাপার। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে চীনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে কিনা প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, কিছু ইস্যু আছে, কানাডার সঙ্গে কিছু ইস্যু আছে। এগুলো নিয়ে খুব বিস্তারিত আলোচনা করিনি। অন্যান্য অনেক বিষয়ে কথা হয়েছে।

উচ্চহারে সুদের বিনিময়ে চীন থেকে নেওয়া ঋণের বিষয়ে তিনি বলেন, রেট অব ইন্টারেস্ট নিয়ে আমরা তার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন দেখবেন। রি-পেমেন্ট পিরিয়ড আরও ১০ বছর বাড়ানোর জন্য বলেছি।

আওয়ামী লীগ সরকার ১৮ লাখ কোটি টাকা ঋণের বোঝা রেখে গেছে, সেটি কীভাবে কমাবেন জানতে চাইলে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ওটা বড় প্রেসার, প্রচণ্ড প্রেসার। কারণ এগুলো দিয়েছে ওরা চুক্তি করে। ডোনারদের বলতে হবে এটি বিরাট প্রেসার। আমরা এগুলো রিভিউ করছি, দেখছি। আমরা এটি নিয়ে সতর্ক আছি। আমাদের নিজেদের মধ্যেও এটি নিয়ে কথা হচ্ছে। এতবড় ঋণের বোঝা নিয়ে শুরু করেছি, আমাদের জন্য খুব কঠিন। ঋণ নিয়ে ফেরতের বিষয় আছে। এগুলো আমরা সমাধানের চেষ্টা করব।

উচ্চহারে সুদে চীনের ঋণ প্রসঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী বলেন, রেট অব ইন্টারেস্ট নিয়ে উপদেষ্টা বলেছেন এটি যত কমানো যায় এবং রি-পেমেন্ট পিরিয়ডটা যেন বাড়ানো যায়। তারা সম্মত হয়েছেন যে তারা বেইজিং হেডকোয়ার্টার্সে আমাদের কনসার্নটা পৌঁছে দেবে এবং শিগগির আমাদের জানাবে।

এদিকে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের আগে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে এটা তার প্রথম সাক্ষাৎ। আমাদের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে। তিনি আরও বলেন, চীনা অর্থায়নে বাংলাদেশে যেসব প্রকল্প চলমান রয়েছে সেসব নিয়ে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে কথা হয়েছে। এসব প্রকল্প চলমান থাকবে। পাশাপাশি নতুন করে প্রয়োজনীয় সহায়তার বিষয়েও কথা হয়েছে। চীনা ঋণের সুদহার নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশের দিক থেকে ঋণের সুদহার নিয়ে যে আপত্তি উঠেছে তা নিয়েও কথা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে।

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

অন্তর্বর্তী সরকারকে সুখবর চীন ও কানাডার

আপডেট টাইম : ১০:৩৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ অগাস্ট ২০২৪

উচ্চ সুদে নেওয়া ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণের সুদের হার কমানো প্রস্তাব চীনা রাষ্ট্রদূতকে দিয়েছেন অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বাংলাদেশকে দেওয়া চীনা ঋণের প্রতিশ্রুতি আছে ৭০০ কোটি ডলারের। সব মিলে এসব ঋণ আগামীতে পরিশোধের ক্ষেত্রে বিদ্যমান মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাবও দেওয়া হয়। অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এর আগে সচিবালয় উপদেষ্টার কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং কানাডার রাষ্ট্রদূত ড. লিলি নিকোলাসের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করে অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে তাদের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। বিশেষ করে চীন এবং কানাডার অর্থায়নে বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলোতে আর্থিক সহায়তা অব্যাহত রাখার কথা বলা হয়। তারাও আগ্রহ দেখিয়েছেন।

রাষ্ট্রদূতরা কি বলেছেন প্রশ্নের জবাবে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, চীন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যার কথা আগে বলেছিল, কিন্তু সমাধান হয়নি বলে অভিযোগ করেছে। আমি বলেছি এখন আর সময় নেব না, দ্রুত সমস্যা শনাক্ত করে সমাধান করব।

এ সময় প্রকল্পের অর্থ ব্যয়ে গুণগত মান নিশ্চিত, অর্থ ব্যয় যেন মানুষের কল্যাণের জন্য হয় এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যয় এটি নিশ্চিত করবেন বলে যোগ করেন অর্থ উপদেষ্টা।

তিনি আরও বলেন, প্রকল্প না নিলে হতো এমন প্রকল্পও নিয়েছে বিগত সরকার। এতে আমাদের ওপর ঋণের বোঝা পড়েছে। এগুলো দুঃখজনক ব্যাপার। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে চীনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে কিনা প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, কিছু ইস্যু আছে, কানাডার সঙ্গে কিছু ইস্যু আছে। এগুলো নিয়ে খুব বিস্তারিত আলোচনা করিনি। অন্যান্য অনেক বিষয়ে কথা হয়েছে।

উচ্চহারে সুদের বিনিময়ে চীন থেকে নেওয়া ঋণের বিষয়ে তিনি বলেন, রেট অব ইন্টারেস্ট নিয়ে আমরা তার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন দেখবেন। রি-পেমেন্ট পিরিয়ড আরও ১০ বছর বাড়ানোর জন্য বলেছি।

আওয়ামী লীগ সরকার ১৮ লাখ কোটি টাকা ঋণের বোঝা রেখে গেছে, সেটি কীভাবে কমাবেন জানতে চাইলে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ওটা বড় প্রেসার, প্রচণ্ড প্রেসার। কারণ এগুলো দিয়েছে ওরা চুক্তি করে। ডোনারদের বলতে হবে এটি বিরাট প্রেসার। আমরা এগুলো রিভিউ করছি, দেখছি। আমরা এটি নিয়ে সতর্ক আছি। আমাদের নিজেদের মধ্যেও এটি নিয়ে কথা হচ্ছে। এতবড় ঋণের বোঝা নিয়ে শুরু করেছি, আমাদের জন্য খুব কঠিন। ঋণ নিয়ে ফেরতের বিষয় আছে। এগুলো আমরা সমাধানের চেষ্টা করব।

উচ্চহারে সুদে চীনের ঋণ প্রসঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী বলেন, রেট অব ইন্টারেস্ট নিয়ে উপদেষ্টা বলেছেন এটি যত কমানো যায় এবং রি-পেমেন্ট পিরিয়ডটা যেন বাড়ানো যায়। তারা সম্মত হয়েছেন যে তারা বেইজিং হেডকোয়ার্টার্সে আমাদের কনসার্নটা পৌঁছে দেবে এবং শিগগির আমাদের জানাবে।

এদিকে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের আগে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে এটা তার প্রথম সাক্ষাৎ। আমাদের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে। তিনি আরও বলেন, চীনা অর্থায়নে বাংলাদেশে যেসব প্রকল্প চলমান রয়েছে সেসব নিয়ে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে কথা হয়েছে। এসব প্রকল্প চলমান থাকবে। পাশাপাশি নতুন করে প্রয়োজনীয় সহায়তার বিষয়েও কথা হয়েছে। চীনা ঋণের সুদহার নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশের দিক থেকে ঋণের সুদহার নিয়ে যে আপত্তি উঠেছে তা নিয়েও কথা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে।