ঢাকা ০১:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকার দুই সিটির মেয়র-কাউন্সিলররা লাপাত্তা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:৫২:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ অগাস্ট ২০২৪
  • ২০ বার

শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র, প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলরা লাপাত্তা। তারা সবাই আওয়ামী লীগ সমর্থক। দুই সিটির ১৭২ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১৮ জন বিএনপিপন্থী। ওই ১৮ জন ছাড়া অন্যরা অফিস করছেন না বলে জানা গেছে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) দুই মেয়রসহ অধিকাংশ কাউন্সিলর কোথায় তা জানেন না করপোরেশনের কর্মকর্তারা।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলি, টিয়ার গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়েছে। জবাবে ইটপাটকেল ও সড়কে অগ্নিসংযোগে ভঙ্গুর দশা হয়েছে সড়ক, ফুটপাত, সড়ক বিভাজক ও সড়কবাতিগুলোর। এখনও নগরীর যত্রতত্র পড়ে রয়েছে আবর্জনার স্তূপ, ইটপাটকেল ও গৃহস্থালি বর্জ্য। শিক্ষার্থীরা নিজেদের উদ্যোগে অনেক এলাকায় পরিষ্কার করলেও বেশিরভাগ এলাকার ফুটপাত, সড়ক বিভাজক, সড়কবাতি এখনও অকেজো। আঞ্চলিক ও কাউন্সিলরদের অনেক অফিস পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধরা। সন্ধ্যার পর নগরীর অধিকাংশ সড়কে অন্ধকার নেমে আসে। এক ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে নগরজুড়ে। গত দুদিনে রাত হলেই নগরীতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নিরাপত্তার জন্য নগরবাসী নিজেরাই টিম করে এলাকা পাহারা দিচ্ছেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক কর্মকর্তা জানান, মেয়র দেশের বাইরে পালিয়ে গেছেন। আর ফিরবেন বলে মনে হচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বেসামাল। সংক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নগর ভবনে টহল দিচ্ছেন, যে কোনো সময় হেনস্তা হতে পারেন। এই ভয়ে তারা নগর ভবনে প্রবেশ করতে চাচ্ছেন না। এছাড়া তারা নানাভাবে দুর্নীতি ও লুটপাট করেছেন, সেজন্য তারা আসলেই সংক্ষুব্ধদের হাতে অপদস্ত হতে পারেন এমন শঙ্কায় রয়েছেন।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) এক প্রকৌশলী জানান, ঢাকা উত্তরের কয়েকজন প্রকৌশলীর সহায়তায় একটি চক্র টেন্ডারবাজি ও দুর্নীতির উৎসব করেছে। কাজ না করে বিল পরিশোধ করেছে। তাদের কাউকে ছাড়া হবে না। যে যতটুকু অপরাধ করেছে, তাদের ততটুকু শাস্তি পেতেই হবে। এছাড়া যারা বঞ্চিত, তাদের ন্যায্য পাওনাও ফিরিয়ে দিতে হবে। প্রশাসনকে সেটা নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করা হবে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম বলেন, মেয়র অফিসে আসছেন না। তবে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ হয়েছে। আর্থিক ক্ষমতা তার হাতে। এজন্য ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, ফুটপাত, সড়ক বাতি ও সড়ক বিভাজক এবং অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কী হবে, তা বলা যাচ্ছে না। তিনি ফিরলে তার নির্দেশনায় কাজ করব, তা না হলে নতুন সরকারের নির্দেশনা অনুসরণ করে তখন উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, ফুটপাত, সড়কবাতি এবং অন্যান্য ক্ষতির হিসাব করা হয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, মেয়র কোথায় আছেন জানি না। তিনি কোনো যোগাযোগ রাখছেন না। এখন কার নির্দেশনায় কাজ চলবে, তা জানি না। দেখা যাক, নতুন সরকার কী সিদ্ধান্ত দেয়। নতুন সরকারের সিদ্ধান্তের আলোকে কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ঢাকার দুই সিটির মেয়র-কাউন্সিলররা লাপাত্তা

আপডেট টাইম : ০৩:৫২:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ অগাস্ট ২০২৪

শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র, প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলরা লাপাত্তা। তারা সবাই আওয়ামী লীগ সমর্থক। দুই সিটির ১৭২ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১৮ জন বিএনপিপন্থী। ওই ১৮ জন ছাড়া অন্যরা অফিস করছেন না বলে জানা গেছে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) দুই মেয়রসহ অধিকাংশ কাউন্সিলর কোথায় তা জানেন না করপোরেশনের কর্মকর্তারা।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলি, টিয়ার গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়েছে। জবাবে ইটপাটকেল ও সড়কে অগ্নিসংযোগে ভঙ্গুর দশা হয়েছে সড়ক, ফুটপাত, সড়ক বিভাজক ও সড়কবাতিগুলোর। এখনও নগরীর যত্রতত্র পড়ে রয়েছে আবর্জনার স্তূপ, ইটপাটকেল ও গৃহস্থালি বর্জ্য। শিক্ষার্থীরা নিজেদের উদ্যোগে অনেক এলাকায় পরিষ্কার করলেও বেশিরভাগ এলাকার ফুটপাত, সড়ক বিভাজক, সড়কবাতি এখনও অকেজো। আঞ্চলিক ও কাউন্সিলরদের অনেক অফিস পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধরা। সন্ধ্যার পর নগরীর অধিকাংশ সড়কে অন্ধকার নেমে আসে। এক ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে নগরজুড়ে। গত দুদিনে রাত হলেই নগরীতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নিরাপত্তার জন্য নগরবাসী নিজেরাই টিম করে এলাকা পাহারা দিচ্ছেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক কর্মকর্তা জানান, মেয়র দেশের বাইরে পালিয়ে গেছেন। আর ফিরবেন বলে মনে হচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বেসামাল। সংক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নগর ভবনে টহল দিচ্ছেন, যে কোনো সময় হেনস্তা হতে পারেন। এই ভয়ে তারা নগর ভবনে প্রবেশ করতে চাচ্ছেন না। এছাড়া তারা নানাভাবে দুর্নীতি ও লুটপাট করেছেন, সেজন্য তারা আসলেই সংক্ষুব্ধদের হাতে অপদস্ত হতে পারেন এমন শঙ্কায় রয়েছেন।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) এক প্রকৌশলী জানান, ঢাকা উত্তরের কয়েকজন প্রকৌশলীর সহায়তায় একটি চক্র টেন্ডারবাজি ও দুর্নীতির উৎসব করেছে। কাজ না করে বিল পরিশোধ করেছে। তাদের কাউকে ছাড়া হবে না। যে যতটুকু অপরাধ করেছে, তাদের ততটুকু শাস্তি পেতেই হবে। এছাড়া যারা বঞ্চিত, তাদের ন্যায্য পাওনাও ফিরিয়ে দিতে হবে। প্রশাসনকে সেটা নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করা হবে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম বলেন, মেয়র অফিসে আসছেন না। তবে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ হয়েছে। আর্থিক ক্ষমতা তার হাতে। এজন্য ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, ফুটপাত, সড়ক বাতি ও সড়ক বিভাজক এবং অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কী হবে, তা বলা যাচ্ছে না। তিনি ফিরলে তার নির্দেশনায় কাজ করব, তা না হলে নতুন সরকারের নির্দেশনা অনুসরণ করে তখন উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, ফুটপাত, সড়কবাতি এবং অন্যান্য ক্ষতির হিসাব করা হয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, মেয়র কোথায় আছেন জানি না। তিনি কোনো যোগাযোগ রাখছেন না। এখন কার নির্দেশনায় কাজ চলবে, তা জানি না। দেখা যাক, নতুন সরকার কী সিদ্ধান্ত দেয়। নতুন সরকারের সিদ্ধান্তের আলোকে কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।