কোটা সংস্কার আন্দোলনে রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সাঈদের পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে ঢাকায় এসেছেন। শনিবার সকালে রংপুরের পীরগঞ্জ থেকে ঢাকা আসেন আবু সাঈদের বাবা, মা ও ভাই।
গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান। তিনি বলেন, ‘আবু সাঈদের পরিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের দেখা করার সার্বিক ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
আবু সাঈদ হত্যার বিচার, পরিবারের দায়-দায়িত্বসহ নানা বিষয়ে কথা বলতে রবিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তারা দেখা করবেন বলে জানা যায়।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুলাই দুপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিছিলে অংশ নেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। এই আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে তিনি মিছিলের সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার সেল, রাবার বুলেট ও কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে পুলিশ। আবু সাঈদ একাই দাঁড়িয়ে তা মোকাবিলার চেষ্টা করেন। পুলিশের সামনে বুক উঁচিয়ে দাঁড়ানো আবু সাঈদকে লক্ষ্য গুলি ছোড়ে পুলিশ। বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। তাৎক্ষণিকভাবে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রংপুরের পীরগঞ্জের বাবনপুর গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে আবু সাঈদ। তিনি ছিলেন দরিদ্র পরিবারের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সন্তান। প্রবল ইচ্ছাশক্তিতে ৯ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি লেখাপড়া চালিয়ে গেছেন। অভাবের সংসারে অন্য ভাইবোনেরা লেখাপড়া করতে না পারলেও আবু সাঈদ গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি ও এইচএসসি পাসের পর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।