বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, সুনীল অর্থনীতির আওতায় সমুদ্র সম্পদ আহরণে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ অপরিহার্য। সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় করে সবল সম্ভাবনাকে সফলভাবে কাজে লাগাতে হবে।
রাজধানীতে সুনীল অর্থনীতি নিয়ে দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বুধবার নসরুল হামিদ এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সহায়তায় এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সমুদ্রের জ্বালানিসম্পদ বিষয়ে নসরুল হামিদ বলেন, সমুদ্রে মাল্টিক্লায়েন্ট সার্ভে শেষ হয়েছে। আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। সেপ্টেম্বরে এটি শেষ হবে। মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর গড়ে উঠছে। এখানে এলএনজি টার্মিনাল, কোল টার্মিনাল, এলপিজি টার্মিনালের চিন্তা নিয়ে এগোচ্ছে সরকার। এ ছাড়া সেখানে হাইড্রোজেন পাওয়ারের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ হবে। জলবিদ্যুতে ভালো সম্ভাবনা থাকতে পারে। তিনি আরও বলেন, সামিটের এফএসআরইউ সচল হলে ১৫ জুলাইয়ের পর থেকে গ্যাস সংকট কমে আসবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর পিএসসিগুলোকে বিবেচনায় নিয়ে এবং বাংলাদেশের স্বার্থকে সর্বাগ্রে অক্ষুণ্ণ রেখে বাংলাদেশে অফশোর মডেল পিএসসি-২০২৩ প্রণয়ন করা হয়েছে। ওই অফশোর মডেল পিএসসির আওতায় বাংলাদেশ অফশোর বিডিং রাউন্ড-২০২৪ গত ১০ মার্চ ঘোষণা এবং বিড দাখিলের সর্বশেষ তারিখ আগামী ৯ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃক উপকূলীয় এলাকায় ও দ্বীপাঞ্চলে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন এবং সমুদ্র শক্তি কাজে লাগিয়ে ২০৫০ সালের মধ্যে ১৫০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এডিবির সহায়তায় ২২টি সম্ভাবনাময় স্থানে অফশোর উইন্ড থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবতা যাচাই করা হয়েছে। অফশোর উইন্ড থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রাথমিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নবায়ণযোগ্য শক্তির ক্ষেত্রে প্রযুক্তির উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকে গবেষণার কাজে উৎসাহিত করা এবং তার প্রয়োগের জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্যও মন্ত্রণালয় কাজ করছে। তাছাড়া টাইডাল বেস পাওয়ার প্ল্যান্ট করার বিষয়ে মন্ত্রণালয় চিন্তা ভাবনা করছে।
সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। জিইডি সদস্য (সচিব) ড. কাওসার আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুস সালাম, প্রতিমন্ত্রী মো. শহিদুজ্জামান সরকার, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট ইংমিং ইয়ং।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর রিয়াল অ্যাডমিরাল মো. খালেদ ইকবালের (অব.) সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আলী হোসেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম বিষয়ক ইউনিটের সচিব রিয়াল অ্যাডমিরাল (অব.) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম, এডিবির কোস্টাল, রিভার ও পোর্ট এক্সপার্ট বিষয়ক ইউনিটের মহাপরিচালক জেন হেনরি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শক্তি ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. এসএম নাফিস শামস।