রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশের অভ্যুদয় ইতিহাস-ঐতিহ্য, সমৃদ্ধি আর সাফল্যের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
সোমবার (১ জুলাই) দেশের ঐতিহ্যবাহী সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ১০৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস) উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, অভিভাবক, অ্যালামনাইসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, মানবিক জ্ঞান এবং সাম্প্রতিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নিবিড় সমন্বয়ে বিশ্বমানস্পর্শী হয়ে ওঠার সাধনায় নিয়োজিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই উপমহাদেশে উচ্চশিক্ষার বিস্তার, জ্ঞান আহরণ-বিতরণ ও সৃষ্টিতে অনন্য ভূমিকা পালন করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করেই এই অঞ্চলে রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জাগরণ ঘটেছে এবং এরই ক্রমধারায় অভ্যুদয় হয়েছে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের।
তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম এবং দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ থেকেই দেশের আপামর মানুষের মুক্তির স্বপ্ন দেখেছিলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সব বুদ্ধিজীবীর প্রতি।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’-কে বাস্তব রূপ দিতে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত উন্নত, সমৃদ্ধ, স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে সরকার ‘রূপকল্প-২০৪১’ ঘোষণা করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে এবং চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুফল ভোগ করতে, প্রযুক্তি ও মানবিক মুক্তির অনন্য সংশ্লেষে এগিয়ে যেতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। মানসম্মত শিক্ষা, প্রগাঢ় দেশপ্রেম এবং মুক্তমনের মানবিক মানুষ হয়ে ওঠার মধ্য দিয়েই বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করা সম্ভব বলে আমি মনে করি।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, বাঙালি জাতিসত্তার নিরন্তর বিকাশ ও সকল নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক উদ্ভাসনকে সর্বোচ্চ বিবেচনায় নিয়ে দেশের উন্নয়নে সকলের সামর্থ্যের সবটুকু নিয়োজিত করা এবং দেশের জন্য ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরি করাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম লক্ষ্য হতে হবে। বিশ্বমানের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনায় দেশের সর্বোচ্চ এই বিদ্যাপীঠকে আরও বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন দক্ষ মানবসম্পদ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘তরুণ প্রজন্মের দক্ষতা বৃদ্ধিতে উচ্চশিক্ষা’ যথার্থ ও সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।’
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রা আরও বেগবান হোক এবং এ বিদ্যায়তনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সুনিপুণভাবে বাস্তবায়িত হোক- এই প্রত্যাশা করছি। নতুন জ্ঞান ও আলোকিত মানুষ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে শোভা পাক অগ্রণী বাংলাদেশের আলোকবর্তিকা।
রাষ্ট্রপতি ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।