মৃত্যুদণ্ড পাওয়া চার আসামি। ছিলেন বগুড়া জেলা কারাগারে বন্দি। মঙ্গলবার (২৫ জুন) দিবাগত রাতে কারাগারের একটি ভবনের ছাদ ফুটো করে অভিনব কৌশলে পালিয়ে যান তারা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই পুলিশ তাদের পুনরায় গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
কিভাবে তাদের আবার ধরল পুলিশ?এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে কারাগারের নিরাপত্তা নিয়ে। ঘটনার তদন্তে করা হয়েছে একটি তদন্ত কমিটি। দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে এ ঘটনায়।
বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, মঙ্গলবার (২৫ জুন) দিবাগত রাতে বগুড়া জেলা কারাগারে এই ঘটনা ঘটে।
পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা চার আসামি হলেন- কুড়িগ্রামের নজরুল ইসলাম মঞ্জু (৬০), নরসিংদীর মো. আমির হামজা (৩৮), বগুড়ার ফরিদ শেখ (২৮) ও মো. জাকারিয়া (৩১)।মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টা ৫৬ মিনিটে পুলিশ জানতেপারে বগুড়া জেলা কারাগার থেকে চারজন মৃত্যুদণ্ড সাজাপ্রাপ্ত আসামি পালিয়ে গেছে। খবর পাওয়া মাত্র বগুড়া সদর থানা ও ফাঁড়ির পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে। তারা শহরের বিভিন্ন স্থানে একাধিক অভিযান পরিচালনা শুরু করে।
অভিযানের এক পর্যায়ে ভোর ৪টা ১০ মিনিটের দিকে সদরবারীর উপ-পরিদর্শক (এসআই) খোরশেদ আলম শহরের চেলোপাড়ায় করতোয়া নদীর পাড়ে চাষি বাজার থেকে চারজনকে আটক করেন। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হওয়া যায় এই চারজনই কারাগার থেকে পালানো সেই চার আসামি। এরপর তাদের ডিবি অফিসে নিয়ে আসা হয়।
খুব দ্রুততম সময়ে আমাদের পুলিশ সদস্যরা চার আসামিকেই আটক করতে সক্ষম হন। এখন তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার।
কয়েদিরা কীভাবে পালিয়ে যান এর বিস্তারিত সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী। তিনি জানান, পৃথক মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি একই কনডেম সেলে ছিলেন। সেখানে থেকেই তারা পালানোর পরিকল্পনা করেন। তারা নিজেদের বিছানার চাদর ছিঁড়ে দড়ি বানান। এরপর কৌশলে কারাগারের ছাদ ফুটো করে কারাগারের বাইরে বের হন। আগে থেকে বানানো বিছানার চাদরের দড়ি দিয়ে কারাগরের বিল্ডিং থেকে নিচে নামেন। এরপর কারাগারের পূর্ব পাশে করতোয়া নদীর ব্রিজের নিচে দিয়ে ওই চারজন পালিয়ে যান।
সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে আসামিরা ছাদ অল্প অল্প করে ফুটো করছিল। গরমের কারণে কেউ তা বুঝতে পারেনি। দিনের বেলায় ফুটো করার স্থানটি গামছা দিয়ে ঢেকে রাখা হতো।
এদিকে এই ঘটনায় ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, কমিটির প্রধান করা হয়েছে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে। কমিটিতে জেলা পুলিশ, গণপূর্ত অধিদপ্তর ও জেলা কারা কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।
এ ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি ছিল কি না এবং নিরাপত্তাব্যবস্থায় ত্রুটি ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।