ঢাকা ০৩:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পৌনে দুই হাজার কোটি টাকার রেললাইনে একটিমাত্র ট্রেন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৫৩:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪
  • ৪১ বার
দেশের পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের অধীন ঈশ্বরদী-ঢালারচর ৭৮ কিলোমিটারে রেলপথে একটিমাত্র ট্রেন চলাচল করছে, যা ওই অঞ্চলে বিপুলসংখ্যক যাত্রীর চাহিদা ও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না। অথচ প্রায় পৌনে দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ওই রেলপথ নির্মাণের লক্ষ্য পাবনার সঙ্গে ঢাকার ট্রেন চলাচলের পাশাপাশি স্থানীয় গন্তব্যগুলোতে পর্যাপ্ত যাত্রীসেবা দেওয়া।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, যাত্রীদের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও ট্রেনসংকটের কারণে এই রেলপথে এখন একটির বেশি ট্রেন দেওয়া যাচ্ছে না। এই রেলপথে তাদের আরো ট্রেন চালানোর ইচ্ছা আছে।

তবে এ প্রত্যাশা কবে পূরণ হবে, এ ব্যাপারে তারা কিছু বলতে পারছে না।

ঈশ্বরদী-ঢালারচর রেলপথে চলা একমাত্র ট্রেনটি সকালে পাবনার বেড়া উপজেলার ঢালারচর থেকে একবার রাজশাহীতে যায়। বিকেলে রাজশাহী থেকে ঢালারচরে ফিরে আসে। দিনের বাকি সময় আর কোনো ট্রেন না থাকায় যাত্রীরা ওই রেলপথ আর ব্যবহার করতে পারে না।

ওই রেলপথে ১০টি স্টেশন রয়েছে। দেখভালের অভাবে বেশির ভাগই একরকম অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে সূত্র মতে, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে ঢালারচর পর্যন্ত নতুন লাইন নির্মাণ’ শীর্ষক এই প্রকল্পে ব্যয় করা হয়েছে মোট এক হাজার ৭১৪ কোটি টাকার বেশি। ব্যয়ের শতভাগ অর্থই সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়।

২০১৩ সালের ২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে ঢালারচর পর্যন্ত ৭৮ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। এরপর প্রথম ধাপে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ঈশ্বরদী-পাবনা ৩০ কিলোমিটার রেলপথের কাজ শেষ হয়। ওই বছরের ১৪ জুন এই ৩০ কিলোমিটারে রাজশাহী-পাবনা রেলপথের ‘পাবনা এক্সপ্রেস’ নামে একটি ট্রেন চালু করা হয়। এরপর পুরো কাজ শেষে ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি রেলপথটি চালু করা হয়। তখন ‘পাবনা এক্সপ্রেস’ ট্রেনের নাম বদলে রাখা হয় ‘ঢালারচর এক্সপ্রেস’।

সেই থেকে ওই রেলপথে শুধু রাজশাহী থেকে ঢালারচর পর্যন্ত একটি ট্রেনই চলছে। করোনাকালে ট্রেনটি ছয় মাসের জন্য বন্ধ রাখায় রেলপথটি অব্যবহৃত ছিল। এখন এই ট্রেনটি সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে ঢালারচর থেকে ছেড়ে সকাল ১১টায় রাজশাহী পৌঁছায়। একই ট্রেন বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজশাহী থেকে ছেড়ে রাত ৮টা ১৫ মিনিটে ঢালারচর পৌঁছায়। এভাবে দিনে দুইবার এবং সপ্তাহে ছয় দিন চলে ট্রেন।

রেলওয়ে সূত্র মতে, পাবনা থেকে ঢালারচর পর্যন্ত রেললাইনটি চালু করতে নতুন ১০টি স্টেশন নির্মাণ করা হয়। লেভেলক্রসিং হয়েছে ৬০টি। সঙ্গে ছোট-বড় ৯১টি সেতুও নির্মাণ করতে হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। প্রকল্প বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রতিবেদনে উঠে আসে এসব অনিয়মের চিত্র। পরিবহন অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষায়ও অনিয়ম ধরা পড়ে। সেই অডিট আপত্তি এখনো নিষ্পত্তি করা হয়নি।

স্থানীয় নাদের আলী নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘দিনে মাত্র একটা ট্রেন চলে এই পথে। স্টেশনগুলো প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এসব দেখভাল করার জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা প্রহরীও নেই। কোনো কোনো স্টেশন একেবারে অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে।’

তিনি বলেন, সীমিত গন্তব্যে একটিমাত্র ট্রেন চলায় পাবনার ৯টি উপজেলার মধ্যে শুধু ঈশ্বরদী, চাটমোহর, বেড়া ও ভাঙ্গুড়ার অল্প কিছু মানুষ সুবিধা পাচ্ছে। তবে নতুন রেললাইনে পাবনা থেকে ঢাকা পর্যন্ত ট্রেন দেওয়া হলে পুরো জেলার মানুষ সুবিধা পাবে। তাই দ্রুত ঢাকা-পাবনা ট্রেন দেওয়া দরকার।

পাবনার সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম মোল্লা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এখন এই রেললাইনের তেমন উপকার পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু পাবনার চার উপজেলার মানুষ একটি ট্রেনে রাজশাহী যাওয়া-আসা করছে।’

স্থানীয় লোকজনের তথ্য মতে, রেলপথের ১০টি স্টেশনের মধ্যে বাঁধের হাট, কাশিনাথপুর, সাঁথিয়া, রাজাপুর, তাঁতিবন্ধ, দুবলিয়া ও রাঘবপুর স্টেশনে রেলওয়ের নিজস্ব কোনো লোকবল নেই। চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী জনবল দিয়ে স্টেশনগুলো চালানো হয়। এসব স্টেশনে নিরাপত্তাকর্মীও থাকেন না। ফলে স্টেশনে থাকে বখাটেদের উৎপাত। বসে মাদকের আড্ডা।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য মতে, এই রেলপথ দিয়ে একটি ট্রেনে মাসে গড়ে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা হয়। গত মার্চের হিসাব অনুযায়ী, ঢালারচর এক্সপ্রেস ৪৭ হাজার ৬৯৫ জন যাত্রী পরিবহন করেছে। তাদের কাছে ৩৫ লাখ সাত হাজার ৬২ টাকার টিকিট বিক্রি করা হয়। কিন্তু ট্রেনটির পরিচালনাসহ স্টেশন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পেছনে ব্যয় এর চেয়েও কয়েক গুণ বেশি।

বিপুল টাকা লোকসান করে রেলপথটিতে মাত্র একটি ট্রেন চালানোর সমালোচনা করেছেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবান অ্যান্ড রিজিওনাল প্ল্যানিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান রিপন। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের প্রকল্প আসলেই দুর্ভাগ্যজনক। প্রতিটা প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে এর কস্ট অ্যাফেক্টিভ অ্যানালাইসিস করা দরকার। কত খরচ করলে রিটার্ন কত আসবে, সেটা হিসাব করতে হবে। রিটার্ন আনার পরিকল্পনা থাকতে হবে।’

জানতে চাইলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, ‘এই রেলপথে আরো ট্রেন দরকার। কয়টা দরকার, সেটা আমরা এখনো হিসাব করে দেখিনি। কারণ আমাদের এখন সামর্থ্যই নেই নতুন ট্রেন চালানোর।’

এই রেলপথে পাবনা-ঢাকা ট্রেন চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা মহামান্য রাষ্ট্রপতিও চেয়েছিলেন। কিছুদিন এটা নিয়ে আলোচনা হয়ে থেমে গেছে। এখন কোনো আলোচনা নেই।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

পৌনে দুই হাজার কোটি টাকার রেললাইনে একটিমাত্র ট্রেন

আপডেট টাইম : ১১:৫৩:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪
দেশের পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের অধীন ঈশ্বরদী-ঢালারচর ৭৮ কিলোমিটারে রেলপথে একটিমাত্র ট্রেন চলাচল করছে, যা ওই অঞ্চলে বিপুলসংখ্যক যাত্রীর চাহিদা ও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না। অথচ প্রায় পৌনে দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ওই রেলপথ নির্মাণের লক্ষ্য পাবনার সঙ্গে ঢাকার ট্রেন চলাচলের পাশাপাশি স্থানীয় গন্তব্যগুলোতে পর্যাপ্ত যাত্রীসেবা দেওয়া।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, যাত্রীদের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও ট্রেনসংকটের কারণে এই রেলপথে এখন একটির বেশি ট্রেন দেওয়া যাচ্ছে না। এই রেলপথে তাদের আরো ট্রেন চালানোর ইচ্ছা আছে।

তবে এ প্রত্যাশা কবে পূরণ হবে, এ ব্যাপারে তারা কিছু বলতে পারছে না।

ঈশ্বরদী-ঢালারচর রেলপথে চলা একমাত্র ট্রেনটি সকালে পাবনার বেড়া উপজেলার ঢালারচর থেকে একবার রাজশাহীতে যায়। বিকেলে রাজশাহী থেকে ঢালারচরে ফিরে আসে। দিনের বাকি সময় আর কোনো ট্রেন না থাকায় যাত্রীরা ওই রেলপথ আর ব্যবহার করতে পারে না।

ওই রেলপথে ১০টি স্টেশন রয়েছে। দেখভালের অভাবে বেশির ভাগই একরকম অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে সূত্র মতে, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে ঢালারচর পর্যন্ত নতুন লাইন নির্মাণ’ শীর্ষক এই প্রকল্পে ব্যয় করা হয়েছে মোট এক হাজার ৭১৪ কোটি টাকার বেশি। ব্যয়ের শতভাগ অর্থই সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়।

২০১৩ সালের ২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে ঢালারচর পর্যন্ত ৭৮ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। এরপর প্রথম ধাপে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ঈশ্বরদী-পাবনা ৩০ কিলোমিটার রেলপথের কাজ শেষ হয়। ওই বছরের ১৪ জুন এই ৩০ কিলোমিটারে রাজশাহী-পাবনা রেলপথের ‘পাবনা এক্সপ্রেস’ নামে একটি ট্রেন চালু করা হয়। এরপর পুরো কাজ শেষে ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি রেলপথটি চালু করা হয়। তখন ‘পাবনা এক্সপ্রেস’ ট্রেনের নাম বদলে রাখা হয় ‘ঢালারচর এক্সপ্রেস’।

সেই থেকে ওই রেলপথে শুধু রাজশাহী থেকে ঢালারচর পর্যন্ত একটি ট্রেনই চলছে। করোনাকালে ট্রেনটি ছয় মাসের জন্য বন্ধ রাখায় রেলপথটি অব্যবহৃত ছিল। এখন এই ট্রেনটি সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে ঢালারচর থেকে ছেড়ে সকাল ১১টায় রাজশাহী পৌঁছায়। একই ট্রেন বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজশাহী থেকে ছেড়ে রাত ৮টা ১৫ মিনিটে ঢালারচর পৌঁছায়। এভাবে দিনে দুইবার এবং সপ্তাহে ছয় দিন চলে ট্রেন।

রেলওয়ে সূত্র মতে, পাবনা থেকে ঢালারচর পর্যন্ত রেললাইনটি চালু করতে নতুন ১০টি স্টেশন নির্মাণ করা হয়। লেভেলক্রসিং হয়েছে ৬০টি। সঙ্গে ছোট-বড় ৯১টি সেতুও নির্মাণ করতে হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। প্রকল্প বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রতিবেদনে উঠে আসে এসব অনিয়মের চিত্র। পরিবহন অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষায়ও অনিয়ম ধরা পড়ে। সেই অডিট আপত্তি এখনো নিষ্পত্তি করা হয়নি।

স্থানীয় নাদের আলী নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘দিনে মাত্র একটা ট্রেন চলে এই পথে। স্টেশনগুলো প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এসব দেখভাল করার জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা প্রহরীও নেই। কোনো কোনো স্টেশন একেবারে অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে।’

তিনি বলেন, সীমিত গন্তব্যে একটিমাত্র ট্রেন চলায় পাবনার ৯টি উপজেলার মধ্যে শুধু ঈশ্বরদী, চাটমোহর, বেড়া ও ভাঙ্গুড়ার অল্প কিছু মানুষ সুবিধা পাচ্ছে। তবে নতুন রেললাইনে পাবনা থেকে ঢাকা পর্যন্ত ট্রেন দেওয়া হলে পুরো জেলার মানুষ সুবিধা পাবে। তাই দ্রুত ঢাকা-পাবনা ট্রেন দেওয়া দরকার।

পাবনার সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম মোল্লা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এখন এই রেললাইনের তেমন উপকার পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু পাবনার চার উপজেলার মানুষ একটি ট্রেনে রাজশাহী যাওয়া-আসা করছে।’

স্থানীয় লোকজনের তথ্য মতে, রেলপথের ১০টি স্টেশনের মধ্যে বাঁধের হাট, কাশিনাথপুর, সাঁথিয়া, রাজাপুর, তাঁতিবন্ধ, দুবলিয়া ও রাঘবপুর স্টেশনে রেলওয়ের নিজস্ব কোনো লোকবল নেই। চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী জনবল দিয়ে স্টেশনগুলো চালানো হয়। এসব স্টেশনে নিরাপত্তাকর্মীও থাকেন না। ফলে স্টেশনে থাকে বখাটেদের উৎপাত। বসে মাদকের আড্ডা।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য মতে, এই রেলপথ দিয়ে একটি ট্রেনে মাসে গড়ে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা হয়। গত মার্চের হিসাব অনুযায়ী, ঢালারচর এক্সপ্রেস ৪৭ হাজার ৬৯৫ জন যাত্রী পরিবহন করেছে। তাদের কাছে ৩৫ লাখ সাত হাজার ৬২ টাকার টিকিট বিক্রি করা হয়। কিন্তু ট্রেনটির পরিচালনাসহ স্টেশন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পেছনে ব্যয় এর চেয়েও কয়েক গুণ বেশি।

বিপুল টাকা লোকসান করে রেলপথটিতে মাত্র একটি ট্রেন চালানোর সমালোচনা করেছেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবান অ্যান্ড রিজিওনাল প্ল্যানিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান রিপন। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের প্রকল্প আসলেই দুর্ভাগ্যজনক। প্রতিটা প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে এর কস্ট অ্যাফেক্টিভ অ্যানালাইসিস করা দরকার। কত খরচ করলে রিটার্ন কত আসবে, সেটা হিসাব করতে হবে। রিটার্ন আনার পরিকল্পনা থাকতে হবে।’

জানতে চাইলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, ‘এই রেলপথে আরো ট্রেন দরকার। কয়টা দরকার, সেটা আমরা এখনো হিসাব করে দেখিনি। কারণ আমাদের এখন সামর্থ্যই নেই নতুন ট্রেন চালানোর।’

এই রেলপথে পাবনা-ঢাকা ট্রেন চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা মহামান্য রাষ্ট্রপতিও চেয়েছিলেন। কিছুদিন এটা নিয়ে আলোচনা হয়ে থেমে গেছে। এখন কোনো আলোচনা নেই।’