পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের জব্দ করা স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পদ বিক্রি ও হস্তান্তর বন্ধে উদ্যোগ নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ লক্ষ্যে সোমবার (২৭ মে) সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে আদালতের আদেশের কপি ও চিঠি পাঠিয়েছে দুদকের ঢাকাস্থ প্রধান কার্যালয়ের বিশেষ অনুসন্ধান দল।
জানা গেছে, বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামের যেসব জমি জব্দ হয়েছে, সেগুলো বিক্রি ও হস্তান্তর বন্ধে আদালতের আদেশের কপি সংশ্লিষ্ট জেলা রেজিস্ট্রার ও সংশ্লিষ্ট সাব রেজিস্ট্রারের কাছে পাঠানো হয়েছে। জমি অন্য কারো নামে যাতে নামজারি না করা হয় সেজন্য আদালতের রায়ের কপি সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট এসিল্যান্ড অফিসেও পাঠানো হয়েছে।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, বেনজীর ও তার পারিবারিক মালিকানাধীন কোম্পানির শেয়ার স্থানান্তর বন্ধে আদালতের রায়ের একটি কপি পাঠানো হয়েছে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসিতে। কোম্পানির মালিকানা হস্তান্তর বন্ধে যৌথমূলধন কোম্পানি এবং ফার্মসমূহের পরিদপ্তরেও আদালতের ওই আদেশ পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে ব্যাংকে জমা থাকা টাকা উত্তোলন বন্ধে অবরুদ্ধের আদেশ সোনালী ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ গত ২৩ মে ও ২৬ মে দুই দফায় বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা অঢেল সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধের আদেশ দেন। এর মধ্যে স্থাবর সম্পদের ক্ষেত্রে জব্দ ও অস্থাবর সম্পদের ক্ষেত্রে অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে আদালতের আদেশের কপির সঙ্গে চিঠিও পাঠানো হয়। চিঠিতে ওই আদেশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়।
গত ২৬ মে আদালত বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ১১৯টি জমির দলিল, ২৩টি কোম্পানির শেয়ার ও গুলশানে ৪টি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দেন। এর আগে গত ২৩ মে তাদের নামীয় ৩৪৫ বিঘা (১১৪ একর) জমি, বিভিন্ন ব্যাংকের ৩৩টি হিসাব জব্দ ও অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়।
দুদক সূত্র জানায়, আদালতের আদেশের পর সংশ্লিষ্ট সরকারি অফিস ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চোখে ধুলো দিয়ে অভিযুক্তরা যেন সম্পদ বিক্রি বা হস্তান্তর করতে না পারেন এবং ব্যাংক থেকে যেন অর্থ উত্তোলন করতে না পারেন সেজন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিটি অফিসে আদালতের আদেশের কপি পাঠানো হয়েছে। এই পর্যায়ে বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যরা তাদের নামীয় সম্পদ বিক্রি কিংবা হস্তান্তর করতে গেলে সরকারের সংশ্লিষ্ট অফিসগুলো রেকর্ডভিত্তিক সম্পদ যাচাই করে আদালতের আদেশ পরিপালন করবে। তাতে জব্দ ও অবরুদ্ধ সম্পদ বেহাত হওয়ার কোনো ধরনের সুযোগ থাকবে না।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল বেনজীর, তার স্ত্রী জিসান মির্জা, দুই মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাশিন রাইসা বিনতে বেনজীরের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক হাফিজুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিশেষ অনুসন্ধান দল অভিযোগটি অনুসন্ধান করছে। দলের অন্য দুই সদস্য হলেন দুদকের সহকারী পরিচালক নিয়ামুল আহসান গাজী ও জয়নাল আবেদীন