কক্সবাজারের টেকনাফে ইফতারের প্রস্তুতির সময় ঘরে ঢুকে গুলি করে মোহাম্মদ জুবায়ের (২২) নামে এক যুবককে হত্যা করা হয়েছে স্বজনরা জানিয়েছে
শুক্রবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যায় ইফতারের আগ মুহূর্তে টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাজির পাড়ায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
নিহত মোহাম্মদ জুবায়ের নাজির পাড়ার মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে। তিনি পেশায় একজন দর্জি শ্রমিক।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গণি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্বজনদের বরাতে ওসি বলেন, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাজির পাড়ার স্থানীয় মো. কায়েসের দোকান থেকে বাকিতে মোহাম্মদ জুবায়ের কিছু মালামাল কিনেছিলেন। এ নিয়ে গত বুধবার উভয়ের মধ্যে তর্কাতর্কির ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়ভাবে ওই বিরোধের মিমাংসাও হয়।
নিহতের স্বজনরা জানিয়েছেন, ঘটনাটি দোকানি কায়েস তার মামা নজমুদ্দিনকে জানায়। শুক্রবার সন্ধ্যায় নজমুদ্দিনের নেতৃত্বে কয়েকজন লোক জুবায়ের এর বাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারিরা এক পর্যায়ে জুবায়েরকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। এতে তিনি মাথায় গুলিবিদ্ধ হন।
ওসি বলেন, গুলিবিদ্ধ জুবায়েরকে স্বজনরা উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠান। সেখান থেকে ফের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) পাঠান। পরে রাত ১১ টার দিকে চমেকে নেওয়ার পথে রামু উপজেলার চা বাগান এলাকায় জুবায়ের মারা যান।
নিহতের বড় ভাই আব্দুস সাত্তার বলেন, স্থানীয় দোকানি কায়েস তার ভাই জুবায়েরের কাছে বাকিতে মালামাল ক্রয় বাবদ ৫০০ টাকার কিছু বেশি পাওনা ছিল। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাদানুবাদের ঘটনা ঘটলেও পরে স্থানীয়ভাবে বিরোধের মিমাংসাও হয়েছে। পরে ঘটনার ব্যাপারে দোকানি কায়েস তার মামা নজমুদ্দিনকে জানায়। শুক্রবার সন্ধ্যায় জুবায়ের বাড়িতে খাবার সামগ্রী নিয়ে ইফতারের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এসময় স্থানীয় ইউপি সদস্য এনামুল হক ওরফে এনাম মেম্বারের ইন্ধনে নজমুদ্দিন ও তার ভাই ফিরোজের নেতৃত্বে ৮/১০ জন আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারিরা এক পর্যায়ে জুবায়েরকে লক্ষ্য করে পর পর দুইটি গুলি ছুড়ে। এতে সে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিল।
কক্সবাজারের টেকনাফে ইফতারের প্রস্তুতির সময় ঘরে ঢুকে মোহাম্মদ জুবায়ের (২২) নামে এক যুবককে গুলি করা হয়েছে বলে স্বজনরা জানিয়েছেন। পরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
নিহতের নিকটাত্মীয় ও প্রতিবেশী রবিউল আলম বলেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য এনামুল হকের নেতৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র সক্রিয় রয়েছে। আর চক্রটির সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় জমি জবরদখল, মাদকপাচার ও সাগরে দস্যুতাসহ নানা অপরাধ সংঘটিত করে আসছে। এলাকার সাধারণ মানুষ কোথাও তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে ভয় পায়।
ঘটনায় অভিযোগের ব্যাপারে জানতে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এনামুল হকের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলে সাড়া দেননি। পরে ক্ষুদে বার্তা পাঠানোর পরও কোন ধরনের সাড়া না দেওয়ায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।