পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত আরও ২৩টি কোম্পানির প্রকৃত অবস্থা জানতে তাদের প্রধান কার্যালয় ও কারখানা সরেজমিন পরিদর্শনের অনুমতি পেয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।
সম্প্রতি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে পাঠানো এক চিঠিতে এ নির্দেশনা ডিএসইকে দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, দীর্ঘ সময় ধরে উৎপাদন বন্ধ, বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করতে ব্যর্থ ও বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিতে না পারা দুর্বল এসব কোম্পানির সামগ্রিক কার্যক্রম যাচাই করে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের গত ২২ জানুয়ারি আরও ৩১ কোম্পানি পরিদর্শনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল ডিএসইকে। এর আগে ২০২৩ সালের ৪ ডিসেম্বর অনুমতি চেয়ে বিএসইসিকে চিঠি দিয়েছিল ডিএসই। চিঠির প্রেক্ষিতেই দুই দফায় ৫৪টি কোম্পারি সার্বিক অবস্থা দেখার অনুমতি পেলো ডিএসই।
২৩টি কোম্পানির মধ্যে ১২টি কোম্পানিগুলোর ব্যাপারে বিশেষ অনুসন্ধানের জন্য চিঠিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কোম্পানিগুলো হলো-অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, অ্যাপোলো ইস্পাত কমপ্লেক্স, আরামিট সিমেন্ট, আজিজ পাইপস, বাংলাদেশ সার্ভিসেস, বাংলাদেশ ওয়েল্ডিং, বিআইএফসি, জিবিবি পাওয়ার, ইনটেক লিমিটেড, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ এবং মিথুন নিটিং অ্যান্ড ডাইং লিমিটেড।
এছাড়া ১১টি কোম্পানর উৎপাদন, এজিএম ও লভ্যাংশ প্রদানের বিষয় অনুসন্ধানের জন্য চিঠিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কোম্পানিগুলো হলো-ন্যাশনাল টি কোম্পানি, নূরানী ডাইং অ্যান্ড সোয়েটার, পিপলস লিজিং, রেনউইক যজ্ঞেশ্বর, প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স, রিং সাইন টেক্সটাইল, আরএসআরএম, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, সাফকো স্পিনিংস, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ এবং ইয়াকিন পলিমার। এসব কোম্পানির উৎপাদন, এজিএম এবং লভ্যাংশ প্রদানের বিষয় নিয়েও পর্যালোচনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ২২ জানুয়ারি ৩১টি কোম্পানি পরিদর্শনের অনুমোতি দেওয়া হয় ডিএসইকে। এর মধ্যে ৯টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ১০টি টেক্সটাইল এবং ১২টি অন্য খাতের কোম্পানি রয়েছে।
ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলো হলো–রূপালী এবং আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক। আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে রয়েছে ফারইস্ট, এফএএস, ফার্স্ট ফাইন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, প্রিমিয়ার লিজিং, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল এবং উত্তরা ফাইন্যান্স।
এছাড়া বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলো হলো–আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং, ড্রাগন সোয়েটার, সিএনএটেক্স, ডেল্টা স্পিনার্স, জেনারেশন নেক্সট, আরএন স্পিনিং, তাল্লু স্পিনিং, তুংহাই নিটিং এবং কাট্টলী টেক্সটাইল।
অন্য কোম্পানিগুলো হলো–জুট স্পিনার্স, বিচ হ্যাচারি, ইমাম বাটন, খুলনা প্রিন্টিং, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ, অলিম্পিক অ্যাক্সেসরিজ, সাইফ পাওয়ারটেক, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, শ্যামপুর সুগার এবং জিল বাংলা সুগার। এসএমই বাজারে তালিকাভুক্ত অপর দুই কোম্পানি হলো–হিমাদ্রি এবং ইউসুফ ফ্লাওয়ার মিলস।
পুঁজিবাজারে নানা অনিয়মের কারণে সম্প্রতি ২৮ কোম্পানিকে জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করে ডিএসই। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এবং ৪ মার্চ বিএসইসির দুই দফা নির্দেশনায় এসব কোম্পানির ক্যাটাগরি পরিবর্তন করে জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হয়। বিএসইসির নির্দেশনায় বলা হয়, তিনটি শর্ত পরিপালনে ব্যর্থতার কারণে ২৮ কোম্পানিকে জেড ক্যাটাগরিতে পরিবর্তন করা হয়েছে। শর্তগুলো হলো-নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আয়োজনে ব্যর্থ, কোম্পানির উৎপাদন বা ব্যবসায়িক কার্যক্রম ন্যূনতম ছয় মাসের জন্য বন্ধ এবং পরিশোধিত মূলধনের তুলনায় পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ বেশি হওয়ায় কোম্পানিগুলোকে জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হয়েছে।