বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বার্ণ ইনিস্টিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা: পার্থ শঙ্কর পাল। তিনি বলেন, নিহতের শরীরের শতভাগ দগ্ধ হয়েছিল।
গত বুধবার ইফতারের আগে কোনাবাড়ী এলাকার টিনশেড কলোনিতে আগুন লাগে।
গতকাল বার্ন ইনস্টিটিউটের আইসিইউয়ের সামনে মিমি আক্তার নামের এক নারী জানান, এই আগুনে তাঁর ছেলে সোলাইমানের শরীরের ৮০ শতাংশই পুড়ে গেছে। লাইফ সাপোর্টে (কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস দিয়ে) বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে তাকে। পুড়ে কালো হয়ে যাওয়ায় নিজের সন্তানকেও অচেনা লাগছে। শিশুটির বাবা শফিকুল ইসলাম জানান, ছেলের অবস্থা ক্রমেই খারাপ হচ্ছে।
ওই আগুনে দগ্ধ হয়ে স্থানীয় একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক আরিফুল ইসলাম (৩৫) এখন বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি। আরিফুলের স্ত্রী সুমি আক্তার বলেন, তিনিও গার্মেন্টসকর্মী। এখন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন। তাঁর সামনেই তাঁর স্বামী দগ্ধ হন। ওই সময় সন্তান নিয়ে ঘরের ভেতর থাকায় তাঁরা রক্ষা পান। তাঁদের গ্রামের বাড়ি রাজশাহীর বাঘায়। আরিফুলের মুখমণ্ডলসহ শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
এই আগুনে দগ্ধ গার্মেন্টসকর্মী মহিদুল (২৫) ও তাঁর স্ত্রী নার্গিস আক্তার (২২)। বার্ন ইনস্টিটিউটে তাঁদের আত্মীয় সিদ্দিক হোসেন বলেন, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মহিদুলের ৯৫ শতাংশ ও তাঁর স্ত্রীর ৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে। এই দম্পতির তিন বছর বয়সী ছেলে থাকে গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জে। মা-বাবার কিছু হলে ছোট শিশুটির কী হবে তা নিয়ে চিন্তিত স্বজনরা।
গ্যাসের আগুনে ১১ বছরের গোলাম রাব্বি ও ১৩ বছরের নাঈম মিয়া দগ্ধ হয়ে এখন সংকটাপন্ন অবস্থায়। রাব্বির বাবা দিনমজুর শাহ আলম জানান, ছেলের শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
নাঈমের দাদা আব্দুস সামাদ বলেন, তাঁর নাতির মুখমণ্ডলসহ শরীরের ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে। নাঈমের বাবা সুজন মিয়া পোশাক কারখানায় কাজ করেন।
৮৫ শতাংশ অগ্নিদগ্ধ হয়ে ইয়াসিন আরাফাতও (২১) বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি। তাঁর ভাই আব্দুল কাদির জানান, মাত্র ১৮ দিন আগে ইয়াসিনের একটা ছেলেসন্তান হয়েছে। ঘটনার দিন ইফতার করতে বাসায় যাওয়ার সময় এই বিপদে পড়েন তিনি।
ইফতার করতে বাসায় যাচ্ছিলেন গার্মেন্টসকর্মী আজিজুল হকও। তিনিও দুই পা পুড়ে যাওয়া অবস্থায় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর ভাই আসাদুজ্জামান।