মদন (নেত্রকোণা) প্রতিনিধিঃ নেত্রকোণা-কিশোরগঞ্জ সংযোগ সড়কে বর্ণী নদীর উপর নির্মিত সেতু উদ্বোধনের আগেই পিচ ঢালাই উঠে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে সেতুটির স্থায়ীকাল নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। শুরু থেকেই সেতুর নির্মাণ কাজ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। কিন্তু অনিয়মের মধ্যে দিয়েই ৬ বছরে নির্মাণ কাজ শেষ করলেও এখনো উদ্বোধন হয়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতুতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে ঠিকাদার। এপ্রোচে যে ব্লক বসানো হয়েছে তাও নিম্নমানের ও ভাঙাচোরা। সেতু নির্মাণ চলাকালে যাদের দেখভালের দায়িত্ব ছিল তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করায় বার বার এমন অনিয়ম হয়েছে। কর্তৃপক্ষের এমন উদাসীনতার সুযোগ নিয়েছেন ঠিকাদার। তারা ইচ্ছেমতো যেনতেনভাবে কাজ সারছেন।
স্থানীয়রা এসব বিষয় নিয়ে বার বার অভিযোগ করলেও কোন কাজের কাজ হয়নি। সম্প্রতি সেতুর উপরের অংশ পিচ ঢালাই দেয়া হয়েছে। যান চলাচলের আগেই পিচ ঢালাই উঠে অসমতল হয়ে যাচ্ছে। পথচারী ও অটো চালকদের অভিযোগ বৃষ্টি হলেই পিচ ঢালাই উঠে গর্তের সৃষ্টি হবে এবং এপ্রোচ সড়কের হেরিংবোন বন্ড দেবে পড়ার আশষ্কা রয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) মদন উপজেলার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোণার মদন উপজেলা ও কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার সংযোগ সড়কে ধানকুনিয়া গ্রামের পাশের বর্ণী নদীতে সেতু নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। দুই জেলার জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে সেতুটির গুরুত্ব অনুধাবন করে দ্রুত এর টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।
কিশোরগঞ্জের পি পি এল চ্যালেঞ্জার নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এ কাজ পায়। সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ১২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। ২০১৮ সালের ৮ই মার্চ কাজ শুরু করে ৫৪০ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। ৫ বছর অতিবাহিত হলেও ঠিকাদার দায় সারাগোছের কাজ সম্পন্ন করে। কিন্তু সেতু উদ্বোধনের আগেই পিচ ঢালাই উঠে যাচ্ছে এবং এপ্রোচ সড়কের হেরিংবোন বন্ড দেবে যাচ্ছে।
স্থানীয় লোকজন ও পথচারী আবুল কালাম, আব্দুল জব্বার, ফরিদ চৌধুরী, আলম জানান, দীর্ঘদিনের স্বপ্নের ফসল এই সেতু নির্মাণের শুরুতেই ঠিকাদার মনগড়া কাজ করে শেষ করেছে। ফলে এখনেই সেতুর পিলারে ফাটল, সেতুর উপরের অংশে পিচ ঢালাই উঠে যাচ্ছে। বৃষ্টি হওয়ার আগেই এপ্রোচ সড়কের ইট দেবে যাচ্ছে। এই সেতুটি বেশি দিন ঠিকবে কিনা এ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। উদ্বোধনের আগেই কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ভালভাবে দেখার জন্য অনুরোধ জানায় তারা।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি কৃত্তিবাস জানান, ‘ব্রিজের কাজ আরো বাকি আছে। পিচ উঠে গেলে পুনরায় সংস্কার করা হবে।’
উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া পিয়াল জানান, ‘নতুন মাটি ফেলায় হেরিংবোন বন্ড রাস্তাটি ডেবে যেতে পারে। পিচ ঢালাই উঠে গেলে পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’