প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাংকের কাছে আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির জন্য আরো বেশি নারী উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে বিশেষ তহবিল এবং জলবায়ু সংক্রান্ত প্রকল্প বাস্তবায়নে রেয়াতি হারে আরো ঋণ চেয়েছেন।
বিশ্বব্যাংককে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন, ‘আপনারা (ডব্লিউবি) বাংলাদেশের নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য একটি বিশেষ তহবিল দিতে পারেন। বিশেষ তহবিলটি নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে সরকারের প্রচেষ্টাকে ত্বরান্বিত করবে।’
রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অপারেশনস) আন্না বেজার্ড সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচরাইটার এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
নারীদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশের পদক্ষেপ সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, তারা নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশে কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হিসেবে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্যই সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে।
তাই বাংলাদেশে কোনো লিঙ্গ বৈষম্য নেই।’শেখ হাসিনা বলেন, নারীরা এখন কৃষি থেকে শুরু করে সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ ও বিচার বিভাগ পর্যন্ত সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে কাজ করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কারণে জনগণের মানসিকতার পরিবর্তন হয়েছে বলে এটি সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সরকার নারী উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণে কাজ করছে।
উল্লেখ্য, তার সরকার নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ৩০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন এবং জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা সংক্রান্ত যেকোনো প্রকল্প বা উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের সময় টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচিতে বাংলাদেশ অন্যতম অগ্রপথিক।
তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন এবং জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা প্রকল্পের জন্য বিশ্বব্যাংক আমাদেরকে রেয়াতি হারে আরো ঋণ দিতে পারে।’
বৈদেশিক মুদ্রার বাজারের হার এবং ব্যাংকের হারের মধ্যে পার্থক্য থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকার মূল্যের আকস্মিক ওঠানামা নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি ক্রলিং পেগ সিস্টেম চালু করার পরিকল্পনা তৈরি করেছে।
আন্না বেজার্ডে বাংলাদেশের সামষ্টিক ও ক্ষুদ্র অর্থনীতির সংস্কারের ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে সংস্কারে সহায়তা করছি এবং সংস্কার ত্বরান্বিত করার জন্য সহযোগিতা অব্যাহত রাখব।’
তিনি সংস্কারে ভালো করার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন।
বিশ্বব্যাংকের এমডি তাদের অর্থায়নে প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলেই বাংলাদেশ নতুন তহবিল পাবে।’ তিনি প্রকল্পের প্রস্তুতি ও বাস্তবায়নেও গতিশীলতা আনার আহ্বান জানান।
আনা বজেরদে এক দিনের সরকারি সফরে ঢাকায় এসেছেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন। খবর বাসস’র।