জ্বালানি উপকরণ আমদানিতে ২১০ কোটি ডলারের একটি বিশেষ তহবিল গঠন করা হচ্ছে। এর মধ্যে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১৬০ কোটি ডলার বরাদ্দ চায় জ্বালানি মন্ত্রণালয়।
এ অর্থ রিজার্ভ থেকে আলাদা করে রাখতে হবে। বাকি ৫০ কোটি ডলার ইসলামিক উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ট্রেড ফিন্যান্স করপোরেশন (আইটিএফসি) থেকে স্বল্পমেয়াদি ঋণ নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে আইটিএফসির সঙ্গে বুধবার জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
সূত্র জানায়, আসন্ন গরমের মৌসুমে জ্বালানির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তহবিলে জ্বালানি তেল ও গ্যাস আমদানি করা হবে। জ্বালানির উপকরণ আমদানির বকেয়া পরিশোধ করতে না পারায় অনেক বিদেশি কোম্পানি এখন দেশে জ্বালানি তেল ও গ্যাস সরবরাহ করতে চাচ্ছে না। এ কারণে স্পট থেকে নগদ আকারে জ্বালানি তেল ও গ্যাস আমদানি করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর বাইরে এ খাতের আমদানির বকেয়া অর্থও পরিশোধ করা হচ্ছে।
জ্বালানি তেল ও এলএনজি আমদানিতে ২১০ কোটি ডলারের একটি তহবিল গঠন করা হচ্ছে। এর মধ্যে আইডিবির সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ট্রেড ফিন্যান্স করপোরেশন (আইটিএফসি) থেকে ৬০ কোটি ডলার ঋণ নেওয়া হচ্ছে। এর বিপরীতে মার্কিন মুদ্রা বাজারের সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেটের (সোফর) সঙ্গে ২ শতাংশ যোগ করে সুদ দিতে হবে। বর্তমানে সোফর রেট ৫ দশমিক ৩১ শতাংশ। এর সঙ্গে ২ শতাংশ যোগ করলে সুদহার দাঁড়াচ্ছে ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ। ঋণের মেয়াদ হবে ছয় মাস। তবে এর মেয়াদ আরও বাড়ানো যাবে।
তহবিলের বাকি ১৬০ কোটি ডলার জোগান দেওয়া হবে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে। তবে রিজার্ভ থেকে ওই অর্থ একসঙ্গে দেওয়া হবে না। পর্যায়ক্রমে জোগান দেওয়া হবে। আইটিএফসি রিজার্ভ থেকে ওই অর্থ আলাদা করতে বলেছে। এর সঙ্গে তাদের ঋণের ৫০ কোটি ডলার যোগ হবে।
সূত্র জানায়, রিজার্ভ থেকে জ্বালানি উপকরণ আমদানির জন্য ১৬০ কোটি ডলার আলাদা করা হলে নিট রিজার্ভ কমে যাবে। তখন আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের শর্ত অনুযায়ী ওই অর্থ নিট রিজার্ভ থেকে বাদ দিতে হবে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, এখনো এ ব্যাপারে চ‚ড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এদিকে মার্চের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেনা বাবদ ১০০ কোটি ডলারের বেশি পরিশোধ করতে হবে। তখন রিজার্ভ আরও কমে যাবে। বর্তমানে নিট রিজার্ভ ১ হাজার ৯৯৬ কোটি ডলার।
এদিকে রোজার কারণে ভোগ্যপণ্য আমদানির চাপ বেড়েছে। ফলে ফেব্র“য়ারি ও মার্চে আমদানি ব্যয় আরও বাড়বে। এতে রিজার্ভেও চাপ বাড়বে।