ঢাকা ০৭:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারত থেকে চিনি ও পেঁয়াজ রপ্তানির বিশেষ অনুরোধ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২৫:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৪
  • ৬৬ বার

রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে উদ্যোগ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে ভারত থেকে চিনি ও পেঁয়াজ আমদানির বিশেষ অনুমতি দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। বর্তমানে ভারত থেকে চিনি ও পেঁয়াজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ভারত বাংলাদেশকে যথাক্রমে ৫০ হাজার টন এবং ২০ হাজার টন চিনি ও পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।

জানা গেছে, ভারত থেকে আমদানি কোটার পণ্য নিশ্চিত করতে অনুরোধ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গত ডিসেম্বরে দিল্লিতে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যমন্ত্রী পর্যায়ের সভায় বাংলাদেশ খাদ্যপণ্য সরবরাহের অনিশ্চয়তার কারণে চাল, গম, চিনি, পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও মসুর ডাল এই সাতটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে আলাদা কোটা চাওয়া হয়। কোটা দেওয়ার বিষয়ে প্রাথমিক সম্মতিও দেয় ভারত। এর পর কয়েক দফা চিঠি চালাচালি আর বৈঠকের পরও তা কার্যকর হয়নি। সম্প্রতি ভারত থেকে এ বিষয়ে আশ্বাস পেয়েছে বাংলাদেশ। বাণিজ্য ও শিল্প, ভোক্তাবিষয়ক, খাদ্য ও পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন-বিষয়ক মন্ত্রী পীযূষ গয়াল ২৪ জানুয়ারি টেলিফোনে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুকে চিনি ও পেঁয়াজ আমদানি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

জানা গেছে, ভারত সময় সময় চাল, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য রপ্তানি বন্ধ করে। কিন্তু নিত্যপণ্য আমদানিতে বার্ষিক কোটা দিলে সামগ্রিকভাবে কোনো পণ্যের রপ্তানি বন্ধ করলে বাংলাদেশ তার আওতায় থাকবে না। ভুটান ও মালদ্বীপকে এ সুবিধা দিয়ে আসছে দেশটি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, রমজান মাসে যাতে চিনি ও পেঁয়াজ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে এ জন্য ভারত থেকে পণ্য দুটি আমদানির জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। একশ্রেণির সিন্ডিকেট রমজান উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বাড়িয়ে দেয়। এতে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক বাজার পর্যালোচনা অনুসারে চিনি এখনো প্রতি কেজি ১৪০-১৪৫ টাকায় খুচরা বিক্রি হচ্ছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী প্রতি পবিত্র রমজান মাসে আইটেমের চাহিদা ০.৩ মিলিয়ন টন। বাংলাদেশ বছরে ২.০-২.২ মিলিয়ন টন কাঁচা চিনি আমদানি করে। গড়ে প্রতি মাসে ০.১৫ মিলিয়ন টন চিনির প্রয়োজন হয়।

এদিকে মৌসুমেও পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী। গতকাল রবিবারও দেশি পেয়াঁজের কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকা ছিল। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, অস্থির পেঁয়াজের বাজার সহজ করার জন্য একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, দেশের বার্ষিক পেঁয়াজের চাহিদা ২.৫ মিলিয়ন টনের বেশি।

জানা গেছে, দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার দীর্ঘদিন ধরে ৯ শতাংশের ওপরে রয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ গত ডিসেম্বর মাসের হিসাবে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৪২ শতাংশ। এই মাসে গ্রাম-শহর নির্বিশেষে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ, অর্থাৎ এক বছর আগের চেয়ে অতিরিক্ত দামে মানুষকে খাদ্য কিনতে হচ্ছে। অন্যদিকে, মূল্যস্ফীতির তুলনায় সাধারণ মানুষের আয় তেমন বাড়েনি। উচ্চ মূল্যস্ফীতি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে আরও কঠিন করে তুলছে। তবে কোনো ব্যবস্থাই বেশির ভাগ পণ্যের মূল্য কমাতে পারছে না।

পবিত্র রমজান মাসে ভোজ্যতেল, চিনি ও খেজুরের ওপর আরোপিত শুল্ক-কর কমানোর অনুরোধ জানিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) চিঠি পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম জানান, তারা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ভারত থেকে চিনি ও পেঁয়াজ রপ্তানির বিশেষ অনুরোধ

আপডেট টাইম : ১১:২৫:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৪

রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে উদ্যোগ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে ভারত থেকে চিনি ও পেঁয়াজ আমদানির বিশেষ অনুমতি দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। বর্তমানে ভারত থেকে চিনি ও পেঁয়াজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ভারত বাংলাদেশকে যথাক্রমে ৫০ হাজার টন এবং ২০ হাজার টন চিনি ও পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।

জানা গেছে, ভারত থেকে আমদানি কোটার পণ্য নিশ্চিত করতে অনুরোধ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গত ডিসেম্বরে দিল্লিতে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যমন্ত্রী পর্যায়ের সভায় বাংলাদেশ খাদ্যপণ্য সরবরাহের অনিশ্চয়তার কারণে চাল, গম, চিনি, পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও মসুর ডাল এই সাতটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে আলাদা কোটা চাওয়া হয়। কোটা দেওয়ার বিষয়ে প্রাথমিক সম্মতিও দেয় ভারত। এর পর কয়েক দফা চিঠি চালাচালি আর বৈঠকের পরও তা কার্যকর হয়নি। সম্প্রতি ভারত থেকে এ বিষয়ে আশ্বাস পেয়েছে বাংলাদেশ। বাণিজ্য ও শিল্প, ভোক্তাবিষয়ক, খাদ্য ও পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন-বিষয়ক মন্ত্রী পীযূষ গয়াল ২৪ জানুয়ারি টেলিফোনে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুকে চিনি ও পেঁয়াজ আমদানি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

জানা গেছে, ভারত সময় সময় চাল, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য রপ্তানি বন্ধ করে। কিন্তু নিত্যপণ্য আমদানিতে বার্ষিক কোটা দিলে সামগ্রিকভাবে কোনো পণ্যের রপ্তানি বন্ধ করলে বাংলাদেশ তার আওতায় থাকবে না। ভুটান ও মালদ্বীপকে এ সুবিধা দিয়ে আসছে দেশটি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, রমজান মাসে যাতে চিনি ও পেঁয়াজ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে এ জন্য ভারত থেকে পণ্য দুটি আমদানির জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। একশ্রেণির সিন্ডিকেট রমজান উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বাড়িয়ে দেয়। এতে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক বাজার পর্যালোচনা অনুসারে চিনি এখনো প্রতি কেজি ১৪০-১৪৫ টাকায় খুচরা বিক্রি হচ্ছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী প্রতি পবিত্র রমজান মাসে আইটেমের চাহিদা ০.৩ মিলিয়ন টন। বাংলাদেশ বছরে ২.০-২.২ মিলিয়ন টন কাঁচা চিনি আমদানি করে। গড়ে প্রতি মাসে ০.১৫ মিলিয়ন টন চিনির প্রয়োজন হয়।

এদিকে মৌসুমেও পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী। গতকাল রবিবারও দেশি পেয়াঁজের কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকা ছিল। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, অস্থির পেঁয়াজের বাজার সহজ করার জন্য একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, দেশের বার্ষিক পেঁয়াজের চাহিদা ২.৫ মিলিয়ন টনের বেশি।

জানা গেছে, দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার দীর্ঘদিন ধরে ৯ শতাংশের ওপরে রয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ গত ডিসেম্বর মাসের হিসাবে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৪২ শতাংশ। এই মাসে গ্রাম-শহর নির্বিশেষে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ, অর্থাৎ এক বছর আগের চেয়ে অতিরিক্ত দামে মানুষকে খাদ্য কিনতে হচ্ছে। অন্যদিকে, মূল্যস্ফীতির তুলনায় সাধারণ মানুষের আয় তেমন বাড়েনি। উচ্চ মূল্যস্ফীতি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে আরও কঠিন করে তুলছে। তবে কোনো ব্যবস্থাই বেশির ভাগ পণ্যের মূল্য কমাতে পারছে না।

পবিত্র রমজান মাসে ভোজ্যতেল, চিনি ও খেজুরের ওপর আরোপিত শুল্ক-কর কমানোর অনুরোধ জানিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) চিঠি পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম জানান, তারা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছেন।